বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০০৯

আসুন, পুরনো একটা ওয়াজ শুনি, নতুন করে...

ওয়াজঃ

ঈমানী জোশ আর জেল্লায় হুজুর তার গলার টোন সপ্তসুরে তোলেন- উত্তেজনায় পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে উঁচু হয়ে বলেন, “আল্লাহর কী রহমত! আল্লাহপাক আমেরিকারে আমাদের পায়ের তলায় রাখছেন। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ! মাশাআল্লাহ!! এভাবেই আমেরিকার লোকজন আজীবন আমাদের পায়ের নিচেই থাকবে। সবাই বলেন, আমীন!”

“আ-মী--ন!” সমস্বরে হাঁক ওঠে!

(বদ্ধ ঘরের সজোরে আওয়াজে হয়তো আকাশ বাতাস কাঁপেনা। যদি পলেস্তরার প্রাণ থাকতো, ইটের সঙ্গে তার প্রথাগত সখ্যের অকাল মৃত্যু ঘটতো!)

তরজমাঃ

ভূ-গোলকীয় অবস্থানে বাংলাদেশের প্রায় মধ্যখান দিয়ে গেছে ৯০ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমা রেখা। আর বিশাল দেশ আমেরিকার মধ্যে কোন এক খানে ছেদ করেছে ৯০ ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমার কল্পিত রেখা। পৃথিবী গোলকের অবস্থান হিসাবে যেটি বাংলাদেশ একদম উল্টোদিকে।

বিজ্ঞান বলে, মানুষের বাস পৃথিবী পৃষ্ঠে। সেই হিসেবে আমেরিকানরা ঠিক আমাদের পায়ের নিচেই থাকে সবসময়।

শাস্ত্রে বলে, মিথ্যে বলা মহাপাপ।
হুজুর তো মিথ্যে বলেননি।

ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে।

(তাহলে, আমরা নিজেরা আমেরিকানদের সাপেক্ষে কোথায় আছি, সাধু?)

শানে নুজুলঃ

ছাপোষা কর্মচারী হিসাবে দেখছি, শুনছি -- অফিসের নতুন একটি সিস্টার কনসার্ন খোলা হচ্ছে। বেশ লাভের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে শুরুর আগেই। নতুন ফ্লোর নেয়া হলো এজন্য। ইমাম ডেকে মিলাদ পড়ানো হলো। এ উপলক্ষ্যে উচ্চপদস্থদের অনেককেই প্রথমবারের মত টুপিতে সয়লাব হতে দেখে ‘কেমন জানি’ লাগলো! নামাজে যাবার কারণে নামাযীদেরকে টিটকারীও শুনতে হয়েছে বেশ ক’বার এঁদের কাছ থেকেই!

নামাযের চেয়ে মিলাদের প্রয়োজনীয়তাই ‘হয়তো’ বেশি জরুরী।

একটি প্রভাবশালী পত্রিকা ধর্মের অনেক মৌলিক বিষয়ের উপর ‘তর্কের খাতির তর্কের’ মত কটাক্ষ প্রকাশ করে। কিন্তু দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা ‘অপ্রমানিত’ ও বিচিত্র আচারে আচরিত ‘মাজার’ রক্ষায় তাদের গলার স্বর খুবই জোরালো। ধুঁয়াটা তখন ওঠে প্রত্বতত্তের! মূলটা আসলে কোথায়?

সম্ভবত নজরুলের একটা কবিতার লাইন আছে, প্রায় সম্পূর্ণ ভুলভাবে সেটি খেয়াল আছে... শুধু ভাবটা...
“জিলাপি অর্ধেক বাঁচিয়া গিয়াছে, হুজুর তাই হাসিয়াই কুটি কুটি...”

কেউ কি পুরো কবিতাটি আমাকে দিতে পারবেন? ভুলটা সংশোধন করে নিতাম! :)

আর, পুরনো অথচ চমৎকার একটা পোস্ট পড়লাম একটু আগে। Click This Link


-------------------------------------------------
রাতমজুর ভাইয়ের সৌজন্যে কবিতার সঠিক অংশটুকুঃ
-------------------------------------------------
মানুষ- নজরুল ইসলাম

গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান,
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে, সল কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
‘পূজারী, দুয়ার খোল,
ক্ষুদার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পূজার সময় হলো!’
স্বপ্ন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়
দেবতার বরে আজ রাজা-টাজা হ’য়ে যাবে নিশ্চয়!
জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুদায় কন্ঠ ক্ষীণ
ডাকিল পান্থ, ‘দ্বার খোল বাবা, খাইনি তো সাত দিন!’
সহসা বন্ধ হ’ল মন্দির, ভুখারী ফিরিয়া চলে,
তিমির রাত্রি, পথ জুড়ে তার ক্ষুদার মানিক জ্বলে!
ভুখারী ফুকারি’ কয়,
‘ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয়!’

মসজিদে কাল শিরনী আছিল, অঢেল গোস্ত রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি!
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে-আজারির চিন্
বলে ‘বাবা, আমি ভুকা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’
তেরিয়াঁ হইয়া হাঁকিল মোল্লা – “ভ্যালা হ’ল দেখি লেঠা,
ভুখা আছ মর গো-ভাগাড়ে গিয়ে! নামাজ পড়িস বেটা?”
ভুখারী কহিল, ‘না বাবা!’ মোল্লা হাঁকিল – তা’ হলে শালা
সোজা পথ দেখ!’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা!
ভুখারী ফিরিয়া চলে,
চলিতে চলিতে বলে-
“আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তোমায় কভু,
আমার ক্ষুদার অন্ন তা’বলে বন্ধ করোনি প্রভু
তব মসজিদ মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবী,
মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবী!”

শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০০৯

আহাম্মক

লোকটা ইচ্ছে করলেই রামপুরা ব্রিজের কাছে নামতে পারতো বাস থেকে। বাসটা ওখানে অনেকক্ষণই থেমেছিলো। যাত্রীনামার সুযোগ দিলো-তারপর ওঠারও। কাউন্টারের নিয়ম-তাগিদই তো সেটা।

পরবর্তীটি রামপুরা বাজার। কিন্তু, তার আবদার ছিলো মধ্যবর্তী কোন এক স্থানে নামার। ড্রাইভারকে বললো। প্রথমে মৃদুস্বরে-তারপর একটু জোরে-পরে গলার তার চড়িয়ে-তারপর?

চলন্ত গাড়িতে অবৈধ সুবিধা না পেয়ে তাই হাত লাগালো ড্রাইভারের গায়েই! আচমকা আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ড্রাইভার বাধ্য হয়েই ব্রেক কষলো বাসে। কুশলী চালনক্ষমতায় বড় ধরণের দূর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলো সবাই। ভাগ্যও ছিলো সঙ্গে।

বড় আকারের দূর্ঘটনা ঘটলে বাসের সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হতো। বাসের ভিতরে তো সে নিজেও ছিলো। নিস্তার পেতো সে? এভাবেই ছোট ছোট ব্যক্তিগত সুযোগসুবিধার জন্য বৃহত্তর ক্ষতি ডেকে আনি আমরা এভাবেই। সে, আমি কিংবা আপনি!

অথচ, সারাটি পথ আমার পাশে বসা এই ব্যক্তিই এতোক্ষণ দেশের উন্নতি নিয়ে সারারাস্তা জ্ঞান বিতরণ করলো আমাদের!

আহাম্মকীর কোন সীমা পরিসীমা নেই বোধহয়।

আর “Never underestimate the power of human stupidity.”

--------------

থেমে থাকাটা জীবন নয়। সামনে এগিয়ে যেতে হয় কিংবা পিছে পড়ে কাতরানোর নিয়তি বরণ। প্রতিনিয়ত একই অবস্থানে থাকাটা পিছিয়ে পড়ারই নামান্তর।

দেশের কী অবস্থা?

নৈরাশ্যবাদীদের জন্য অনেক খোরাকী মিলছে কালের এ সময়টায়। এটা নেই। ওটা নেই। পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, গ্যাস নেই- নেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের সুলভ সরবরাহ। এটা আছে, ওটা আছে। আছে মাস্তানী, আছে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই-আছে নারীর প্রতি অবমাননা। দূর্নীতির সহাস্য পদচারনাও আছে। আছে ধোঁয়াটে ভবিষ্যতের নিকষ হাতছানি। আছে ফারাক্কার বর্তমান চোখরাঙানীতে টিপাইমুখের ভবিষ্যৎ কান্নার জল।

তবুও আশা আছে। খুব সাধারণ কারণেই সুখী হবার আপ্রাণ প্রবণতা আছে। আছে খেলায় জিতে যাবার আনন্দ কিংবা হেরে গেলে রেগে ক্ষোভে ফেটে পড়ার স্বাধীনতা-সেটাও আনন্দ-স্বাধীনতা প্রকাশের আনন্দ। আরও আছে অনেক কিছু।

‘কালের কলস’কে সময় দিতে গিয়েই সামহোয়ারইনের অনেক ভালো লেখাই চাপা পড়ে যায় ব্লগের আর্কাইভে। তাই হয়তো, নতুন ব্লগের চেয়ে পুরনো সৃজনশীল আর তথ্যসমৃদ্ধ লেখাই আমাকে টানে বেশি। অন্যতম প্রিয় একজন ব্লগার ‘পাললিক মন’ ভাই এর ব্লগটা তাই প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। চলুন, সেটিই না হয় আরেকবার দেখে আসি। :)
Click This Link

দেশ আসলেই এগিয়ে চলেছে। হয়তো একটু ধীরে। জ্যামে আটকে থাকা বাসটাও কিন্তু একসময় লক্ষ্যে পৌছে যায়। যদিও এভাবে এগিয়ে যাওয়াটা আমাদের কাম্য নয়।

তারপরও আমাদের মাঝেই লুকিয়ে থাকা যেসব পোড়ামুখ-যেসব ক্ষয়ে যাওয়া হৃদয় ‘সবসময়ই’ জাতীয় উন্নতির এই চাকাটাতে ব্রেক কষিয়ে থামাতে চায়-তারা কী নিস্তার পায়, কখনও কী পাবে?

ইতিহাস কী তাদের ক্ষমা করে?

ক্ষমা কী পেয়েছে মীরজাফর? অন্য কোন আহাম্মক?

সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০০৯

মহিষের ডানা

হঠাত করেই আতিকের ফোন, “চাকরী পার্মামেন্ট হইছে। সংগে প্রোমোশনও ফ্রি দিছে! তোমারে খাওয়াবো। মিশু ও আসবে।” খাওয়াদাওয়ার এমন প্রস্তাব এপ্রিশিয়েট না করাটা একরকম গুরুতর অপরাধের পর্যায়েই পড়ে। তার উপর নাকি হাসিবুল-মিশুও আসবে। সেই স্কুলের পর আবার দেখা হবে। বছর দশেক হবে। না করার উপায়ই নেই।

ভেন্যু ঢাকার বাইরে। উত্তরায়! তাতে কী? বেদুইনরা মরুভূমি পাড়ি দেয় আর আমিতো খাবার জন্যে মঙ্গলে যেতেও রাজী! কেউ যখন খাওয়ানোর প্রস্তাব দেয়, তখন একটা স্বাভাবিক প্রবনতা থাকে একটু বেশি খসানোর! হুমকিটা তাই আগেই দিয়ে রাখলাম ওকে। অভয় দিলো - মোহাফেজখানা ওর সংগেই আছে।

রেস্টুরেন্ট বাছাই করাও একটা প্রকট সমস্যা বটে। সবগুলোতেই চেখে দেখতে ইচ্ছ করে। কোনটায় ঢুকবো সেটা ঠিক করে হেঁটে হেঁটে ৫ নম্বর পেরিয়ে ১১ তে এসে হাজির। অবশেষে ক্লান্ত পা’গুলি ডানে মোচড় দিয়ে কোন একখানে থিতু হলো!

ইচ্ছা মত অর্ডার দেয়ার পর মেন্যুকার্ডটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিলাম। হঠাত একটা আইটেম নজরে এলো- ‘Buffalo Wings’। মনের ভিতর ধুলোপড়া ‘ডিকশনারি’টার পাতা উলটে ‘মহিষ’ ছাড়া আর কিছুই ভাসেনা! মহিষ বড় দূর্ভাগা প্রাণী! মৃত্যুর পর জাত হারায় ওরা। গরু হয়ে আমাদের প্লেটে আসে! বেচারাদের গায়ের রঙ কালো। তাই কালো গরু নামেও ওরা পরিচিত। ঘোরানো শিংগুলোও বেশ রোমান্টিক! কিন্তু কখনও কোন মহিষের wing তথা পাখা গজিয়েছে, এমনটি শুনেছি বলে মনে পড়েনা। ঘোড়া হলেও উইনিকর্ন বলে চালিয়ে দেয়া যেতো। তাই বলে মহিষাসুর?

পরিবেশনকারীকে তলব করি। অমায়িক হাসি দিয়ে জানায়, “স্যার ওইটা আমাদের ‘ইশপিশাল’ আইটেম!”
“কিন্তু মহিষের পাখনা পাইলেন কই?”
“ওইটা মুরগী দিয়ে তৈরী! মুরগীর পাখা।”
“মহিষ সাইজের মুরগী?! কত্ত বড়? এত দাম কম? কিন্তু আবার দেখি লেভেল ১ থেকে লেভেল ১০ পর্যন্ত! এর মানে কী? বসুন্ধরার মত লেভেল ১ খাইলে দাম কম, লেভেল ১০ এ খাইলে বেশি?”
“স্যার, ওটা হলো ঝাল এর মাত্রা! কোন মাত্রায় ঝাল খেতে চান, সেটার উপর নির্ভর করে! প্রতিলেভেল মাত্র ১০ টাকা!”

মনে পড়লো, শুরুতে ঝাল-কোক নিয়েছিলাম। এটাও নাকি ওদের ইশপিশাল মেনু! শা----, কোকের ভিতর একগামলা গোলমরিচ! প্রতি চুমুকেই নাকের ভিতর চুলকানী!

“ঠিক আছে ভাই, আমাদের জ্ঞান বাড়লো! প্রয়োজ়ন পড়লো ডাক দেবো। আহেম!”


খাওয়ার শেষে পরিবেশনকারী আবার এসে মুখে ‘ড্রাইওয়াশ মার্কা’ হাসি ঝুলিয়ে জিজ্ঞাসা করে, “স্যার, খাওয়া কেমন লাগলো?”

এসব ক্ষেত্রে মনে হয় ভদ্রতা করে বলতে হয়, “ভালো ভালো, অসাধারণ!” কিন্তু এত দাম দিয়ে এত অল্প সাধারণ মানের খাবার চেখে মেজাজ এমনিতেই টং! তার উপর ঝাল কোক! সেটাই মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো অবলীলায় , “যত আশা করে ঢুকেছিলাম, ততটা ভালো লাগেনি।” বলেই নিজের হাতের দিকে নজর গেলো, ছুরি-চামচের ‘ওএসডি’ অবস্থা দেখে ওয়েটার যেন আবার ‘খ্যাত’ মনে না করে তাই আবার যোগ করলাম, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় খেয়ে খাবারের মান দেখি। যদিও হাত দিয়েই খাই!”

মিশু আমার মত অত রূঢ় নয়, “না ভাই, মিনারেল ওয়াটারটা দারুন মজা লাগছে!”


***
[ বিয়ে বাড়িতে রান্না ভালো না লাগলে আমাদের মধ্যে বলার চল আছে, “রান্না অসাধারণ হইছে, বিশেষ করে কোক রান্না তো অতুলনীয়!”]

শনিবার, ১৩ জুন, ২০০৯

অসুস্থ্যতা

শুক্রবার দুপুরের অলস সময়ের বদৌলতে হঠাত করেই একটা ছোট্ট মজার ঘটনা মনে পড়লো। ভুলের যাবার আগেই ঝট করে লিখে ফেলি।

--

আগের অফিসে ছুটি চাওয়া ও সেটা চেয়ে পাওয়াটা চরম ঝামেলার একটা ব্যাপার ছিলো। এডমিনিস্ট্রিটিভ অফিসার তথা এ.ও সাহেবের সামনে নানা রকম জবাবদিহিতার খেতাপুরি! কয়েক মিনিটের রিমান্ড! মেজাজ খারাপের একশেষ।

এর চেয়ে সহজ অথচ- ‘দূর্ণীতিমূলক’ অসুস্থ্যতা অনেক ভালো! টিম ম্যানেজারকে ফোন করে দিলেই হয়, “ভাইয়া, আজ আসতে পারবোনা মনে হয়। তবে একটু ভালো বোধ করলেই চলে আসার চেষ্টা করবো।”

উনিও ঘোড়েল। আমার আগেই পাশ দিয়েছেন এ লাইনে! জানেন সবকিছুই। তাই, আগাম শারীরিক আবহাওয়াবার্তা ছাড়া যেত মাঝে মধ্যে-“ভাইয়া, আগামী পরশু আমি অসুস্থ্য থাকবো!”;)

এরকমই কোন এক শুক্রবার দুপুরে ‘অসুস্থ্য’ আমি গিয়েছি বুয়েটে! ওহ! আগের অফিসে ছুটি ছিলো রবিবার, সেটা বলাটা আগেই দরকার ছিলো! পলাশীর প্রান্তরে থুক্কু মোড়েই আচমকা- ও মোর জ্বালা- এ.ও সাহেবের সঙ্গে দেখা- দুই জোড়া চোখের ‘অ-মধুর’ মিলন!/:)

লজ্জায় মুখাবনত! তবুও ‘বীরবাঙ্গালী’ সাহসে তাকিয়ে দেখলো, উনি আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলেন!:-/

পরদিন অফিসে গিয়ে শুনলাম, উনি অসুস্থ্যতার কারণে আগের দিন আসতে পারেন নি!

বুধবার, ১৩ মে, ২০০৯

♫ ♫ ♫ [সুমন চট্টোপাধ্যায় এর গান। ]

আজ আমি ফিরে এসেছি
তোমার পাশে বসেছি
বলো তোমার কথা শুনবো আজ
শুনবো বলে তাই রাখিনি কাজ
তোমার কথাহারা গান
যার ঠিকানা জানা নেই- জানা নেই
স্তব্দতার গান শুনো...

প্রতিটি ঘরে ঘরে আর দেয়ালে প্রতি রাস্তার
দেখেছি কথা বলে দার্শনিক
শুনেছি কথা ভরা মাঙ্গলিক
মানুষ মানুষের হাত ধরে
মুখর হতে চায় প্রাণ ভরে
তবু সে মুখরতার বুকে বাসা বাধে স্তব্ধতা - নীরবতা
স্তব্ধতার গান শুনো...

মানুষ কথা বলে যায়
কথার কথা বলে যায়
কথা বলে কথা না শুনেই
কথা শুনে কথা না শুনেই
কথার মানে থাকে না
থাকে না তার কোন দাম- কোন দাম
স্তব্ধতার গান শুনো...

আমার চোখে রাখো চোখ
কথার অবসান হোক
এখন আর কোন শব্দ নয়
এখন তুমি আমি আর কোন কথায় বাধা নেই - বাধা নেই
স্তব্ধতার গান শুনো...

সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০০৯

হঠাৎ করিয়া বিবাহের শখ জাগিলো, যেই কারণে...

অবশেষে সাড়ম্বরে বান্ধবী ‘ত’ এর বিয়ে সম্পন্ন হলো। বন্ধু ‘স’ এর সঙ্গে। উপস্থিত ছিলাম।

বিয়ে বাড়িতে যেতে ভালো লাগেনা। সবাই হেসে-কুঁদে কত কী করে। আমি হাঁদারাম, চুপচাপ চেয়ার টেনে এক কোনায় বসে থাকি! বরের মুখে একরাজ্যের চিন্তার রেখা গুনি আর কণের মুখের খলখলিয়ে উঠা হাসির উজ্জ্বলতা মাপি! আর খাওয়ার দাওয়ার পর হেলেদুলে প্যাভেলিয়নে ফিরি। তাই, পারলেই ‘না’ বলে দিই। কিন্তু 'ত' বললো যেতেই হবে, “খুব বেশি ছেলেকে দাওয়াত দেয়া হয়নি। তোমাদের মত খুব কাছের ক’জন বন্ধুকে!”। প্রস্তাবটা রোমাঞ্চকর না অপমানের সেটাই বুঝতে সময় লাগলো! এক দঙ্গল ‘হাওয়া’র মাঝে খুচরো ক’জন ‘আদম’! সংখ্যালঘু সমাচার!:((

তবুও যাওয়া হলো! বন্ধু ‘র’ এর সঙ্গে! ভোজটাও ছিলো ‘একটু’ অন্যরকম! পুরোটাই ‘চিকেনায়িত’! প্রথমে এলো চিকেন কাচ্চি - সঙ্গে চিকেন রোস্ট! পরে গলাগলি করে এলো, চিকেন কারী আর চিকেন কাবাব! পাশে বসা গোল চশমাধারী ‘র’ এর চোখ আরও গোল হয়ে উঠে! ওকে আশ্বস্ত করি, ‘আমি মেরিডিয়ান চিকেন ফ্লেভার চিপস ও আশা করছি!’

মনে হয়, আমাদের দোয়া-আশির্বাদে বিয়ে ভালোভাবেই সম্পন্ন হলো। দে লিভ হ্যাপিলি এভার আফটার!B-)

বিয়ের পর প্রথম জন্মদিন পড়লো জুনে! প্রতিবারের মতই উইশ ভাসাই এসএমএস এ, “শুভ জন্মদিন... ইত্যাদি ইত্যাদি...”
জবাব এলো, “থ্যাঙ্ক ইউ ফর ইয়োর উইশ। ‘স’ এখন অফিসে!”

দু’দিন পর মেসেঞ্জারে পেয়ে জিজ্ঞাসা করি, “কী খবর কেমন আছো ‘ত’?”
বেশ খানেকক্ষণ পর মেসেঞ্জারের রঙ পালটায়, “আমি ভালো আছি। ‘স’ এখন অফিসে দারুন ব্যস্ত ... !”

আবার গত সপ্তাহে, “শরীর ভালো তো, ‘ত’?”
“এই তো আছি মোটামুটি। ওর শরীরটাও ভালো। ‘স’ আগামী সপ্তাহে মালয়েশিয়া যাচ্ছে! ...”

অল রোডস লিড টু রোম!X((

মনে কী সাধ আহ্লাদ জাগেনা? নাহয় আমি ‘আবিবাহ-চিরকুমার’! নেই কী কোন অ-আ-ক-খ-প-ফ-ব-ভ-ম-বিসর্গ-অনুস্বার? যে বলবে, ‘আ’ সবসময়ই অফিসে!:P

তবুও, ভয় লাগে! কারণ, একটি দূর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না!:((

শুক্রবার, ১৩ মার্চ, ২০০৯

চালশে

ছোটবেলা থেকেই,
আড্ডায়-গল্পে-আসরে
বন্ধুদের আনন্দে ভাসানো
মানুষটি
যখন
মধ্য চল্লিশে এসে, আবার
বন্ধুদের আড্ডায়
মুখ ভার করে বলে,
“ঘরে চাল নেই
বাচ্চারা অভুক্ত।”

বন্ধুরা তখনও হেসে ওঠে।।

চালশে তে আসতে-
এখানে এখনও ঢের বাকি।।
তবুও...