শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১০
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১০।
বিশ বছর আগের এই দিনটা অন্যরকম হলে, আজকের এই শনিবারটাও অন্যরকম হতে পারতো।
হতে পারতো আনন্দময় একটা সন্ধ্যা। যেটা এখন ঢাকা নিজস্ব বিষাদে।
বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১০
এবি'র গানে নস্টালজিয়া
সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০১০
শৈশবের ক্কাসিদা
শুক্রবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০০৯
স্মৃতির ছড়া
শার্লক হোমসে পড়েছিলাম, মানুষের মস্তিষ্ক অনেকটা সাজানো ঘরের মত...খুলিটা একটা ঘর, ব্রেইনসেলগুলো আসবাবপত্রের মত! ঝকঝকে নতুন আসবাবকে জায়গা দিতে পুরনোগুলোর ঠাঁই মেলে জঞ্জাল ঘরে, পুরনো দোকানে পেরেক ঠুকে নতুন হবার ভয় কিংবা ভাগ্য আরো খারাপ হলে নিখাঁদ লাকড়ি! সেভাবেই নতুন জ্ঞানে, নতুন স্মৃতির থরে থরে সাজানোর মহাপরিকল্পনায় পুরনোগুলোর ঠাঁই মেলে বিস্মৃতির আস্তাকুড়ে। কিন্তু সেগুলোও হঠাৎ করে চমকে দেয়। আজ যেমন দিলো!
এমন একটা ছড়া ছড়িয়ে দিলাম সে সুযোগে।
“অমুক মিয়া দারোগা
ডিম পাড়িছে* বারোডা,
একটা ডিম নষ্ট,
অমুকের বউয়ের কষ্ট!”
‘অমুক’ নামটার বদলে যেকোন একটা নাম বসিয়ে নিলেই।
তখন এসব শুনলেই সারা শরীর রাগে-ক্ষোভে জ্বলতো! এখন হাসি পাচ্ছে!
আমার নামটা বসাতে ইচ্ছে হয়? মন্দ কী?
ছেলেবেলাটা না হয় অন্যভাবেই ফিরে এলো!
* আঞ্চলিক ভাষায়, ‘পেড়েছে’ >> ‘পাড়িছে’ আর বারোটা>>বারোডা!
রবিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০০৮
বিয়ে!
বিশেষ করে দ্বিতীয় ‘ওয়েডিং’ টার পর তো মনটা ভীষণ খারাপ!
নিশাতের বিয়ে ছিলো!
একজন আমার এই অবস্থা দেখে থাকতে না পেরে জিজ্ঞাসা করেই ফেললো, “তুমি কি ওকে খুব পছন্দ করতে? এজন্য মন খারাপ?!”
আমি চমকে উঠি! এভাবে তো ভাবিনি! হায়রে, কী সব ভেবে বসে আছে সবাই! মন খারাপের কারণ যে অন্য! আগে বুয়েটে মেয়ে ভর্তি হত খুব কম! সবেধন নীলমনির মত! বড়ভাইরা ভয়েই তাকাতো না ‘ওনাদের’ দিকে! কোন এক ‘বুয়েটিয়ান’ বড়ভাই এর ডাইরীতে পড়েছি, তাদের ক্লাসমেট মেয়েগুলোকে “টিচারদের খাদ্য” বলে সম্মান দিতেন তারা! তারা নাকি পাস করেই যেকোন ফাস্ট-সেকেন্ড হওয়া ইয়ং টিচারের গলায় ‘আপোষে’ ঝুলে পড়তো! কিন্তু এখন মেয়েদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে বুয়েটে! পুরনো ফরমুলা ফলছে আবার ... “কোয়ান্টিটি বাড়লে কোয়ালিটি কমে”! তাই এখন আর সবার জন্য টিচার-পাত্র ‘সুলভ’ নয়! কিন্তু অনাবাসী পিএইচডি ধারীরা হাতের নাগালে এখনও! দেশে আসে ছুটিতে আর ‘ছোঁ’ মেরে নিয়ে যায়! আর ‘বেবাক মাইয়াগুলান’ এর নজর ও মাশাআল্লাহ খুবই উঁচা! বিয়ে করতে গেলে পিএইচডি পাত্র মোটামুটি প্রি-রিকুইজিট! আর আমার মত ক্লাসে ‘পোলাগুলান’ চাকরী বাকরী নিয়ে হয়রান! নিজেদের গার্লফ্রেন্ড গুলারে ঠিক মত গিফট দিতেও পারছেনা অনেকে! মেসের মিল-রেট বেড়ে গেছে। কারণ চালের দাম আকাশ পাড়ি দিয়ে এখন মহাশুন্যগামী! মানিব্যাগের ওজন যে কম! আমার অবশ্য ওইসব হাংগামা নাই! কিন্তু, আমারও যে পিএইচডি বিয়ে করতে ইচ্ছা হইতেছে একটু একটু! জ্ঞানের আলোয় ঘর আলো করে রাখবে সে! আলোকিত ঘরে ইলেক্ট্রিসিটি বিল কম! তাই, সম-অধিকারের এই যুগে ওরা পিএইচডি ‘hubby’ পেলে আমরা কেন পিএইচডি ‘honey’ পাইনা! so sad! একই ক্লাস থেকে পাস করে একই ডিগ্রী পেলাম সবাই! তারপরও...!?
দুপুরে ইশতিয়াক বেচারা ফোন দিয়েছিলো। বেচারা! তার জব ঢাকার বাইরে! এইখানে কি ঘটে সেই সবের সাথে আপটুডেট থাকতে পারেনা প্রায়ই! আমই ওর বিবিসি, “খবর কি কও”
বললাম, “মাইয়াগো বিয়া হইয়া যাইতেছে! আর আমাগো টাক পইড়া যাইতেছে”
ইশতি ও আমার মত একই গোয়ালের গরু! আমার দুঃখ ও বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারে!
“কার কার বিয়ে হলো?”, অনুসন্ধিতসু ইশতিয়াক
সঠিক জবাব, “রোল ১ আর রোল ০০-৬০ এর!”
“হমম! বাকি মেয়েদের কি খবর? ওদের বিয়েটিয়ে হবেনা?” আরো গভীরতর অনুসন্ধান ওর!
“আহা! বিবাহ একপ্রকার সংক্রামক ব্যাধি বিশেষ! বাকিদেরও খুব শীঘ্রই হবে” মতামতের মোড়ক খুলি আমি!
“বিয়ের মড়ক লেগেছে!” ফোন রাখার আগে এই ব্যাপারে ইশতিয়াকের শেষ মন্তব্য!
এই ব্লগটা ৩৬০ এর ‘প্রয়াত-সৈনিক’ দের প্রতি উতসর্গকৃত !
মঙ্গলবার, ২৭ নভেম্বর, ২০০৭
Masters!

-
আবার বুয়েট! এইখান থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর ভেবেছিলাম, যাক বাঁচছি! কিন্তু অনেকদিন খেতে না পেয়ে মনের ভিতর ঘুমিয়ে থাকা পড়াশুনার ভুতটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। আরেকধাপ পড়তে ইচ্ছা হলো! কিন্তু অফিসের বস ছুটি দিতে চায়না! বলে, এইখানে তোমার ভবিষ্যত গড়ে নাও! তাই একরকম জোর করেই বেরিয়ে পড়লাম!
রেজিস্ট্রেশন করার সময় যায় যায় অবস্থা! দুপুরের পর স্যারের আসার কথা! কিন্তু বউয়ের হাতের ‘ঝালফ্রাই’ খেয়ে স্যার বোধহয় সাড়ে তেপ্পান্ন ডিগ্রী এংগেলে একটু হেলান দিয়েছিলেন! তাই “সামান্য” দেরী হলো উনার! “স্যার এসেছেন! স্যার এসেছেন!”...যেন বিয়ের বর এসেছে... এই চিৎকার করতে করতে আমরা দৌড় দিলাম স্যারের রুমে। মুখ দেখেই বুঝলেন, আমরা পুরনো পাপী ... আর নাক সিটকানো দেখে আমরাও বুঝলাম যে, তিনি কি বুঝেছেন! কলমের এক খোঁচা দিয়েই রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ করে দিলেন! আমার পরে লাইনে ছিলো একটা মেয়ে! ফিরে চলে আসার সময় পিছনের আওয়াজ কানে লাগে...আহ! কী উপদেশ ... “এইটা করো, ওইটা করো...ভালো হবে”...আরো যেন কী কী ...! পুরুষপ্রধান সমাজে মেয়েরা এইরকম বাড়তি সুবিধা পেয়েই থাকে। নারীতান্ত্রিক সমাজ হলে হয়তো সেই সুবিধাগুলো ছেলেরাই পেতো! যেমন, বাসার পাশে কলেজের এক ম্যাডাম থাকতেন...তিনি ক্লাসে ঢুকেই বলতেন... “এই মেয়েরা! কিচিরমিচির থামাও। আমাকে ক্লাস নিতে দাও। তোমাদের যন্ত্রনায় অস্থির হয়ে গেলাম!” মেয়েদের দুঃখগুলো অকৃত্রিম, “ম্যাডাম পচা, স্যাররা কত ভালো! ক--ত্--তো আদর করেন আমাদের”! আমরাও বেসুরো সুর মেলাতাম... “ম্যাডাম চমতকার মানুষ!” আবার নেটেও যেহেতু মেয়েদের সংখ্যা একটু কম তাই তাদের কথার গুরুত্বও একটু বেশি! নেভার মাইন্ড!
আরো কিছু কাজ সারতে গিয়ে বিকাল চারটার ক্লাসে পৌছাতে দেরী হয়ে গেলো। ডঃ ফিরোজ আহমেদ স্যার ক্লাস নেবেন...তাই একটু ভরসা পেলাম! উনি আসেন দেরীতে আর চলে যান একটু আগেই! একেবারে আমার মনের মত মানুষ! ঠিক তাই হলো। আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলের প্রায় পুরা সময়টাই আমরা কতিপয় জ্ঞানীব্যক্তি বসেছি মেয়েদের পিছন বেঞ্চে! উহু! ভুরু কুচকিয়ো না বন্ধুসকল! প্রথম সেমিস্টারে আমাদের সম্মিলিত গবেষণার ফলাফল থেকেই আমরা এই “মহাগুরুত্বপূর্ণ” সিদ্ধান্তে উপনীত হই! দেখা গিয়েছে, সিনিয়র স্যারেরা সাধারণত মেয়েদের দিকে তাকাননা as well as মেয়েদের পিছন বেঞ্চেও না! ফলে খুব সহজেই আমরা আমাদের মনোযোগটা ঘুমের দিকে দিতে পারি কিংবা আমি আর মনি গোল্লা কাটাকাটি খেলতে করতে পারি! তবে জুনিয়র টিচার হলে ব্যাপারটার পুরো বিপরীত ঘটনা ঘটতো! আর মাঝে মাঝে ইম্পোর্টেন্ট ক্লাসের লেকচার তুলতে গেলে পাঁচফুট দুই ইঞ্চির মনির একটু প্রব্লেম হতো বৈকি! সাড়ে পাচঁফুটি মনা নামের মেয়েটাকে বলতে হতো, “কাইন্ডলী একটু সরে বসবে? আমাদের মনি বোর্ড দেখতে পারছেনা!”
যাইহোক, দৌড়ে ক্লাসে গিয়ে দেখি, স্যার আসেননি! পুরা ক্লাস ছাত্রে গিজগিজ! শুধু মেয়েদের পিছন বেঞ্চটাই খালি! মনি ফোড়ন দিলো, “দেখ আল্লাহ ও চায় আমরা যেন মেয়েদের পিছনেই বসি! এত দেরী করে আসলাম তার পরও...”! ফিরোজ স্যার আমাদের বিশ্বাসের মান-সম্মান রাখলেন! উনি ক্লাসে পৌছালেন আমাদেরও ১০ মিনিট পর! ক্লাসে ঢুকেই স্যার অবাক! প্রথম বাণী, “এত ছাত্র!” মাস্টার্সে তো আগে ১০-১২ জনের বেশি স্টুডেন্ট ক্লাস করতোনা। আর তোমরা ফিফটি আপ!
স্যাররা কী অদ্ভুত মানুষ! প্রথম ক্লাস! তারপরও পড়ানো লাগবে? ধুর...চোখ খোলা রেখেই ঘুম দিলাম! আর তন্দ্রা কাটলে... বিকালে কি দিয়ে নাস্তা করবো, কার পয়সায় করবো ...ইত্যাদি দুনিয়াবী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোরও ফয়সালা সেরে নিলাম! হঠাত স্যারের লেকচারের একটা কথা খুব কানে এসে বাজলো... ”তাহলে আজ আর বেশি কিছু পড়াবোনা” ... কথাটা খুব পছন্দও হলো ... ক্লাসে মনোযোগও দিলাম...! কিন্তু ক্লাস শেষ হয়ে গেলো খুব তাড়াতাড়ি!
এইভাবে আমার বুয়েটে মাস্টার্স জীবন শুরু হলো আবার!
আমার জন্য দোয়া করবেন...কিংবা আমার মঙ্গল কামনায় স্লোগান দিলেও আপত্তি করবো না!
“আরাফাত ভাই এর চামড়ামেকাপ দেবো আমরা! ”
চিয়ার্স!
সোমবার, ১৯ নভেম্বর, ২০০৭
মিনিমাম গ্রেড !
-
মনি ছাত্র হিসাবে ভালোই। আমার চেয়ে ভাল তো বটেই। ক্লাস এর অনেক High-CGPA ধারীদের চেয়ে এর ব্যাসিক নলেজ অনেক বেশি ক্লিয়ার। কিন্তু এত কিছু থাকলে কি হবে। লেভেল ৩ টার্ম ১ তে ওর একটা উইকেট পড়ে গেলো, মানে এক সাবজেক্টে ‘ল্যাগ’ খেয়ে বসলো! RCC-I ...ব্যাসিক সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স। যেটার উপর নির্ভর করে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সবকিছু। ওর মত ছাত্রের এই হাল, সাইকোলজিকাল হজমী সেবন করেও এটা হজম করতে সময় লেগেছে আমার! গ্রেডশীট না দেখে আমার বিশ্বাস ই হচ্ছিলোনা ব্যাপারটা।
যাহোক, এখানে ফেল করলেও পরের সেমিস্টার ওঠা যায়। আর প্রত্যেককেই নিজ নিজ ‘Advisor’ স্যার এর কাছে গিয়ে ভর্তি হতে হয়। তাই লেভেল ৩ টার্ম ২ এর রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আমরা একই গুরুর শিষ্য ক’জন “জ্ঞানীব্যক্তি” আমাদের Advisor ডঃ কবিরুল ইসলাম স্যারের কাছে গেলাম রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য!
স্যার প্রথমে টের পাননি যে তার ই এক ‘সুযোগ্য’ ছাত্র ‘অকাম’ ঘটিয়ে এসেছে। লেভেল ৩ টার্ম ২ তে RCC-II আছে, যেটার pre-requisite course সাবজেক্ট হলো RCC-I। সেটাতেই ফুটো! গলার স্বর প্রায় শুন্যের কাছে নামিয়ে মনি নিজেই জানালো স্যারকে! স্যার বাঁজখাই গলায় বলেন, “না, তোমাকে RCC-II দেয়া যাবেনা। RCC-I আগে কমপ্লিট থাকতে হবে। ক্ষণিক চুপসে গেলেও, মনি তখন ততক্ষনাৎ যুক্তিবিদ্যা হাজির করলো, “কোর্সটা pre-requisite বটে , কিন্তু ওটাতে মিনিমাম F থাকতে হবে!” এই কথা শুনে স্যার তো জায়গায় ফ্লাবারগাস্টেড! এটা কি ধরনের কথা! মিনিমাম F থাকতে হবে! ফেল করেও যদি পরবর্তী কোর্স নেয়া যায় তাহলে pre-requisite লেখার কি দরকার?!
স্যার মনির কথা বিশ্বাস করেননি। আমি স্যারের জায়গায় থাকলে নিজেও করতাম না! স্যার এর আর কী দোষ! স্বয়ং ভিসি আসলেও এখানে খাবি খেতেন! কারণ, সিভিল এর কোর্স বইতে স্পষ্ট করেই লেখা আছে ব্যাপারটা … “pre-requisite কোর্সে মিনিমাম ‘F’ acceptable”! অগত্যা স্যার মনিকে বাধ্য হয়েই কোর্সটা নিতে দেন! পরে ব্যপারটা আমাদের কাছেও খোলাসা হয়েছে! পরীক্ষা দিয়ে কেউ যদি F পায়, তাহলে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু যদি কেউ পরীক্ষাই না দেয়, তাকে RCC-II দেয়া হবেনা! এই নিয়মের সুক্ষ ফাঁকে মনি পগার পার হলো!!
নিয়ম থাকলে তার ফাঁক থাকবেই! এজন্যই বোধহয় দেশে এতো উকিল!
পুনশ্চঃ মনি পরে RCC-II আবার নিয়েছিলো শেষ সেমিস্টারে! কৃতিত্বের সাথে পাশ করেছে সেবার!
শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০০৭
ঘুমকুমার!
মা আমাকে ডাকে কুম্ভকর্ণ । না ডেকেই বা কি করবে? ঘুমের মাঝে কিংবা ঘুম থেকে জেগে উঠার ইমিডিয়েট পর কিছুই মাথায় ঢোকেনা আমার! মা না ডাকলে সকালের নাস্তা তো বটেই, মাঝে মাঝে দুপুরের খাওয়ার কথাও মনে থাকেনা। এই ‘অকাতর’ ঘুমের মাঝে কোন ফোন এলে অবস্থা কি হয় তা সহজেই অনুমেয়। একবার মোবাইলে ‘রিসিভড কল লিস্ট’ ঘেটে দেখি, ৩ দিন আগে রাত ৩ টায় এক বন্ধুর কল। কিছুতেই মনে করতে পারলাম না, ওর সাথে কি কথা বলেছিলাম, তাই আবার ফোন করে জেনে নিলাম! মূল ঘটনা ২০০৩ সালের মাঝামাঝি। তখনও মোবাইল নিইনি। এই নেবো নেবো করছি। আমার বাসা থেকে ফোন আসতো সিফাতের মোবাইলে। আরো অনেক ছেলেরই ফোন ইনকামিং স্টেশন ছিলো ও তখন! বাড়তি ভাব ওর!
একদিন সন্ধ্যার সময় ঘুমিয়ে আছি। এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে সিফাতের আগমন। ‘আরাফাত তোমার ফোন, তোমার আব্বা লাইনে’। ঘুমের ঘোর না ভাংতেই ফোনটা কানে লাগাই।
হেলো, আসসালামু-আলাইকুম।
ওয়া-আলাইকুমুস-সালাম, শরীর কেমন এখন?
ভালো।
জ্বর কত এখন?
১০০ এর নিচে।
শরীরের যত্ন নিও।
আচ্ছা।
পড়ালেখা কেমন হচ্ছে?
ভালোই।
টাকা লাগবে আরো?
না।
বাড়ি কবে আসবা?
শীঘ্রই।
আসার সময় নলছিটি হয়ে আসবা?
নলছিটি!?
হ্যাঁ
আচ্ছা ঠিক আছে।
(এতক্ষণে ঝিম কাটতে শুরু করে আমার। )
ফোনটা রেখে দিই। নলছিটি ... নলছিটি ... নলছিটি ... নামটা পরিচিত মনে হয়! ‘পিতা-পরমাত্মা’ তো সেখানে যেতে বললেন! কিন্তু কোথায় সেটা? আমার দেশের বাড়ি তো কুষ্টিয়া। আশেপাশে কি কোথাও এমন জায়গা আছে? সহসাই মনে পড়লো নলছিটি বৃহত্তর বরিশালে! ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার অপোজিট ডিরেকশনে! কিন্তু ‘পিতাজী’ কেন ওখানে যেতে বলবেন? ওখানে তো আমাদের কোন আত্মীয় থাকেনা!
ধোঁয়াশা কেটে গিয়ে আলো ফুটতে শুরু করে আস্তে আস্তে! শংকিত ও বিব্রত হই একই সাথে! এতক্ষণ আমি আসলে বন্ধু শাওনের বাবার সাথে কথা বলেছি!!! বাসায় শাওনকে ‘আরাফাত’ নামে ডাকে। সিফাতের কাছে ওর বাবা ফোন করে আরাফাতকে চাওয়ায় সিফাত নিজের অজান্তেই ফোনটা দিয়েছে আমাকে! ফলে যা হবার তাই হয়েছে! পৌনে দুই আর সোয়া তিন মিলে পাঁচ হয়েছে!
আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুমিয়ে থাকলে আমার কি অবস্থা হয় সেটা তো আগেই বলেছি! আমাকে না হয় মাফ করা যায়। কিন্তু আংকল তো জেগেই ছিলেন! নিজের ছেলে না অন্যের ছেলে চিনতে পারলেননা!? অবশ্য ঘুমিয়ে থাকলেও আমার একটু একটু সন্দেহ হচ্ছিলো...ওপাশে হয়তো আমার আব্বা নেই!
কিন্তু আপনিই বলুন, কখনও কি জিজ্ঞাসা করা যায়, “আপনি কি আমার আব্বা বলছেন???”
শনিবার, ৬ অক্টোবর, ২০০৭
স্মৃতিভ্রংশ!
গুটিকয়েক বন্ধু ছাড়া স্কুল কলেজের বন্ধুদের তেমন খোঁজ খবর নেইনা, এমন অপবাদ আমার আড়ালে আবডালে সবসময়ই দেয়া হতো! কিন্তু এখন আর সে বদনাম নেই! কারণ ওদের খোঁজখবর না নিতে নিতে ওরা একরকম ভুলেই গেছে যে আরাফাত নামে কেউ একজন ছিলো!
অথচ বুয়েটের প্রতি অনুভূতিগুলো খুবই একচোখা-অদ্ভুত! এখানকার প্রায় সবকিছুই ভালো লাগে আমার! যে কাকটা আমার জন্য গাছের ডালে দাঁড়িয়ে তার ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিয়ে অপেক্ষা করে... বিশেষ বিশেষ সময়ে তাকেও ভালো লাগে! ক্লাসের যে ছেলেটাকে দেখলেই হাতটা নিশপিশ করে উঠতো, পাস করে যাবার পর, তাকে দেখলেই বুকে জড়িয়ে কাঁদতে ইচ্ছা করে, “দোস্ত, তোকে খুব মিস করছি!”
আর যে মেয়েটার সাথে ৮ সেমিস্টারে মাত্র দু’বার কথা হয়েছে, এখন তার সংগে নেটে বা বাস্তবে দেখা হলে ‘কন্যাদায়গ্রস্থ ক্লাসমেট’ হিসাবে তার কাছে আক্ষেপমিশ্রিত-দুঃখ প্রকাশ করি আর উপযাচক হয়ে তার জন্য ঘটকালি করে শুরু করে দেই!
কিন্তু মেয়েটা ভেবে বসলো, আমিই বুঝি ঘটক কাম পাত্র! তাই শঙ্কিত অথচ তড়িত জবাব দিলো, “But the groom is not of my religion!”
আমি তাকে আশ্বস্ত করি, “I am not going to violate the innate right of my Hindu friends! There are lots of handsome Hindu guys around here who feel their heartbeats as they look at you! So it appears to a ‘Multiple Choice Question (MCQ)’ for you! Choose the best and right one!”
কথাবার্তা এতক্ষণ ইংরেজিতেই হচ্ছিলো! কিন্তু ভাব প্রকাশে এবার বাংলার সাহায্য নিতেই হলো তাকে, “কার পাল্লায় পড়লাম রে, বাপ!”
তবুও এই রহস্যময় ঢাকা শহরের পথে প্রান্তরে খুলনার সেই হারিয়ে যাওয়া পরিচিত মুখগুলোর মধ্যে দুয়েকজনের সাথে কখনও-সখনও দেখা হয়ে যায়। কিন্তু আমার দূর্বল স্মৃতিশক্তি তখনই খেই হারিয়ে ফেলে! যদুকে মধু ডাকে, মধুকে কদু আর কদুর জন্য বরাদ্দকৃত নাম থাকে যদু! কিংবা কোন নামই মনে থাকেনা! প্রায় ক্ষেত্রেই পুরনো বন্ধু আমার নাম ধরে সম্ভাষন জানালেও আমি ভাববাচ্যে কথা বলতে একপ্রকার বাধ্য হই! স্বভাবত কেউই আমার দূরাবস্থাকে আমলে না নিয়ে আমার সম্পর্কে ভাবে, ছেলেটা অহংকারে মাটি থেকে পৌণে তিন ইঞ্চি উপরে দাঁড়িয়ে আছে! কিন্তু আমি নিরুপায়! ইরান-তুরান-আফ্রিকার জাতীয় ইতিহাস আমার নখদর্পণে থাকলেও মানুষের নাম মাথা থেকে খুব সহজেই বাষ্পীভবণ হয়ে যায়!
এই তো সেদিনও, সাইফুর’স, মৌচাক শাখায় কোচিং করতে গিয়ে... খুলনায় আমার সংগে কলেজে পড়া এক মেয়ের সাথে দেখা হয়ে গেলো।! ভয়াবহ প্রমাদ গুনলাম! যথারীতি নামটা মনে নেই!
আমাকে দেখেই উচ্ছসিত হয়ে বললো, “আরে! আরাফাত যে! কেমন আছো? কতদিন পর দেখা তোমার সাথে! ৬ বছর, না? খুলনায় যাওনা আর, আরাফাত?”
স্মৃতিভ্রংশের আবর্তে পড়া আমার জবাবগুলো এরকম, “এইতো, তুমি? হ্যাঁ, অনেক দিন পর। খুলনায় যাইনা! আচ্ছা, ক্লাস শেষে কথা বলি!”
ক্লাস শুরু হলো। কিন্তু মনোযোগ গোল্লায় গেলো! “কি নাম তার...নাম কি তার...!” মাথার উপর হাতের তালু দিয়ে বিভিন্ন এংগেলে মৃদু আঘাত করেও মাথাটা খুললোনা! মরচে পড়া তালার মতোই আটকে থাকলো! অবশেষে স্মৃতিশক্তির সাহায্যে নাম উদ্ধার প্রকল্পে ব্যর্থ হয়ে চিন্তাশক্তির দ্বারস্থ হলাম! একেবারে নিচ্ছিদ্র পরিকল্পনা! বুয়েটেরই কোন এক বন্ধুকে মেয়েটার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো…. এভাবে, “এ হলো আমার বুয়েটের ফ্রেন্ড আর এ হলো আমার কলেজ ফ্রেন্ড। এবার তোমরা পরস্পর পরিচিত হও!” হমমম...নিজের নাম বলতে বাধ্য হবে মেয়েটা...এইবার! নিশ্চিত! এই ‘চমতকার’ পরিকল্পনা নিজের মাথা থেকে বের হওয়ার খুশিতে নিজের পিঠ চাপড়ে নিজেরই বাহবা দিতে ইচ্ছা হচ্ছিলো!
কিন্তু...ক্লাস শেষে হাতের নাগালে বুয়েটের কাউকেই পেলাম না!
তাই সেদিন কোনরকম মেয়েটাকে পাশ কাটিয়ে বাসায় এসে বিভিন্ন সুত্র ধরে নাম উদ্ধারের চেষ্টায় নামলাম! এভাবে আর চলতে দেয়া যায়না! “এক দফা এক দাবী, বন্ধুদের নাম তুই মনে রাখবি!” অনেকক্ষণ পর খুশিতে আলোকিত হয়ে উঠলাম! ইউরেকা ইউরেকা...বুম বুম চেকা চেকা!
পরের দিন ক্লাসে... আমিই আগে কাছে এগিয়ে গিয়ে দন্ত বিকশিত করে বললাম, “কি খবর, দোলা? কেমন আছো?”
জবাবটা ছিলো মর্মান্তিক, “আমার নাম কেয়া!”
শনিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৭
গোছগাছ!
পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে! তালে তালে মেয়েরাও এগিয়ে যাচ্ছে। বাঙ্গালী ছেলেরাও এগিয়ে যাচ্ছে। তবে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার অস্থির গতি দেখে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসে আছে! বিহবলতা কাটলেই আবার ‘দৌড়ে’ ফিরে আসবে! ছেলেদের একান্ত জগতটা ক্রমশ হাতছাড়া! সবকিছুর স্বাদই মেয়েরা নিয়ে নিচ্ছে। বিজ্ঞাপণেও তাই মিনমিনে পুরুষকন্ঠের পাশে জোর মহিলা কন্ঠ হাঁক দিয়ে ওঠে, “স্ট্যান্ডার্ড লুঙ্গি, আসল লুঙ্গি!” কিন্তু অপরপক্ষে? না থাক...আমার ‘বাক স্বাধীনতা’ মুখ থুবড়ে পড়ুক এইবার!
তবে ভাবতে ভালো লাগে... মেয়েরা এখনও তাদের সবটুকু সহজাত বৈশিষ্ট্য ছেড়ে ‘জাতে’ ওঠেনি! একালেও ঘর গোছানোর দ্বায়িত্বটা মা-বোনের উপরই ছেড়ে দিই। জানি, আমার ‘কর্মদক্ষতার’ অসীম প্রয়োগেও...তাদের মত চমতকার ভাবে কখনই সাজাতে-গোছাতে পারবোনা! সব মেয়েই কিভাবে যেন এটা আয়ত্ত করে ফেলে! আমার বোনের পরিপাটি গোছানো ঘরটা দেখলে খুবই সাবধানে নড়াচড়া করতে ইচ্ছা হয়...মনে হয় আমার মুহুর্তের অসাবধান অসতর্কতায় সাজানো বাগানটা নিমেষেই ধসে পড়তে পারে!
তাই অগোছালো রুমই আমার জন্য ভালো। বাসায় থাকলে... মা যখন আমার এলোমেলো খাতাপত্র দেখতেন, তখন আর স্থির থাকতে পারতেন না! নিমেষেই সাজিয়ে সেটাকে ফুলের বাগান বানিয়ে ফেলতেন! কিন্তু অর্বাচীন আমি গোছানো খাতাবইয়ের মাঝে কখনই প্রয়োজনীয় নোটটা সময়মত খুঁজে পেতামনা! তাই মা’কে ডেকে হয়তো ফিজিক্স নোটটা খুঁজে পেতে হত!
হলে এসে অবাধ স্বাধীনতা! খাটের নিচে চার বছরের জঞ্জাল একবারে বিদায় হয় যখন পুরনো কেউ চলে গিয়ে নতুন কেউ আসে। আবার সে চলে গেলে আবার নতুন কেউ এলে! ডাল-চচ্চরির মত বই-খাতা এলোমেলো পড়ে থাকে। তার মাঝেই সঠিক সময়ে সঠিক জিনিষটা খুজে পেয়েছি! বিছানায় শুয়ে থাকলে মাকড়সার জাল চোখে পড়ে! কত সুন্দর মাকড়সা! আসলে সৌন্দর্য্য-পিয়াস এর বালাই টালাই নেই। আলস্যে ওগুলো পরিষ্কার করতে ইচ্ছে হয়না, তাই! ঘরদোর ঝাড়ু দেবার জন্য মোখলেস ভাই প্রতিদিন সকালে আসেন। ঘুমিয়ে থাকতাম! দুই-এক ঘা ঝাঁটার বাড়ি দিয়ে তার কাজ খালাস! কিছুই মনে করিনি!
আবার, শ্বাসের সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছি দলবেঁধে! ডাক্তার রুম পরিষ্কার করার পরিষ্কার উপদেশ দিতেন! ‘বুয়েট পাশ করা ডাক্তার’ বলে হেসেই উড়িয়ে দিয়েছি!
একবার তাই উপদেশ মত ইশতিয়াক তার রুম পরিষ্কার করলো, ঘন্টাখানেক মূল্যবান সময় নষ্ট করে! সব শেষ করে হাতমুখ ধুয়ে রুমের সামনে দাঁড়িয়ে বারান্দায় হাত মুছছিলো সে...তখন দেখে... বুয়েটের একজন ডাক্তার তার পাশের রুম থেকে বের হচ্ছেন! কৌতুহলী ডাক্তার ওর রুমে ঢুকেই ছিটকে বের হয়ে আসলেন…
“এমন অপরিষ্কার রুমে মানুষ থাকলে, সে তো দুইদিনেই অসুস্থ্য হয়ে পড়বে!”
‘আক্কেলগুড়ুম’ ফেল অন ইশতিয়াক!
তবুও তখন আমরা বলতাম, “এই বেশ ভালো আছি!”
শনিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০০৭
ছাগল!
-
আমি একটা আস্ত ছাগল...কিংবা আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে... রামছাগল, ভদ্র ভাষায় যমুনাপাড়ি! বিশাল আকারের যেসব স্বাস্থ্যবান কালচে-দাড়ি বিশিষ্ট ছাগল দেখি... যেগুলোকে ইংরেজিতে বলে ‘ব্লাক-বেংগল-গোট’, সেগুলোকে সাহিত্যমনষ্ক প্রাণিবিদেরা (ছাগলবিদ?) নাম দিয়েছেন যমুনাপাড়ি! আর ছুটিতে বাড়ি যেতে হলে আমাকে তো যমুনা পাড়ি দিতেই হয়!
নিজের ছাগলামীর কাহিনী লুকোছাপা করে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু এই মুহুর্তে আমি ‘ব্লাক বেংগল গোট’ এর নামভূমিকায় আছি … তাই প্রানবন্ত অভিনয় করে যাওয়াই ভালো। ভাগ্য ভালো থাকলে কিছু ফ্রেশ কাঁঠালপাতাও জুটে যেতে পারে!
ঘটনাটা আমার এক পুরনো বান্ধবীকে নিয়ে। আগেই বলে দেই, তিনি কিন্তু ছাগলিনী নন। উচ্চ পর্যায়ের মনুষ্য-শ্রেণীরই একজন! বুয়েট লাইফের শেষে এসে তিনি মনের দুঃখে বলেছিলেন, তাকে সবাই ভুলে যাবে! আমিও ধনুকের মত লাফিয়ে উঠে প্রকৃত বন্ধুর ইমোশন ফুটিয়ে তখন বলেছিলাম, সবাই ভুলতে পারে কিন্তু এ বান্দা তার বন্ধুদের ভুলবেনা! তাই এখনও পনর-বিশ দিন পর পর ফোন করে তার হাল-হকিকত জেনে নিই! তিনিও ফোন করেন। ১০ মিনিট কথা হলে ৯ মিনিটই তার ‘টুকটাক’ কথা শুনে যাই আর বাকি এক মিনিটে আমি আমার ‘দৈনন্দিন’ বর্ণনা করি!
প্রতিবারের মত সেদিনও...একথা সেকথার ডালপালা ছড়িয়ে পড়লো চারপাশে, সেই ডালপালা কুড়াতে আমার ত্রাহি-মধুসূদন অবস্থা! বাক-পরম্পরায় তিনি বললেন, আগামী শুক্রবার তার সিস্টার কাজিনের শুভ বিবাহ! এমন ভাবে উইশ করলাম যেন বিয়েটা তারই! তিনি বোধহয় খোঁচাটা বুঝতে পেরেছিলেন... তাই ভারী গলায় বললেন, কাজিন তার চেয়ে জুনিয়র! জীবনে বিয়ে বাড়িতে গিয়েছি খুব কমই। দুয়েকবার যা গিয়েছি, এয়সা মত খাওয়া দাওয়া শেষে আর অন্য অনুষ্ঠানের দিকে ঠিকমত মনোযোগ দিতে পারিনি! আপন চাচাত বোনের বিয়েটা খুব কাছ থেকে দেখার শখ ছিলো...সামনে নিজের বেলায় যেন ‘চিরায়ত’ ফর্মুলাতে ভজঘট না পাকিয়ে ফেলি। কিন্তু বর আসার পর আব্বা মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “বাবা, বাসায় যাও, বাসাটা পাহারা দাও। খাওয়া শুরু হলে ডাক দেবো তোমাকে!”
এই যে আমার পুরনো বাজে অভ্যেস... কি কথা বলতে গিয়ে কোন কথায় চলে যাই! অনেকটা রাজনীতিবিদদের মত, মাইক হাতে পেলে মনে করে যেন নিজের বউয়ের কব্জী চেপে ধরেই বসে আছে, ছাড়তেই চায়না!
গলার ফ্রিকোয়েন্সীতে উতসাহ আর কৌতুহল মিশিয়ে বেতারবাণী ছাড়লাম, “তোহ, বিয়েতে কী প্লান তোমার?”
ফ্রিকোয়েন্সী দ্বিগুন উতসাহে ফিরে এলো, “শপিং করতে হবে!”
আহা, বিয়ে বাড়ি বলে কথা। কত কী কেনাকাটা করতে হয়! কণের স্নো...রুজ-পাউডার... সাবান...গয়না...চুরি... জামদানি আমদানি কত কী! বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত না থাকলেও বই পড়ে পড়ে এসব অনেক জ্ঞান হয়েছে! কিন্তু কথায় আছে না? “গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন...নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন!”
তাই শিশুসুল্ভ সরলতা নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “কার জন্য শপিং?”
ওপাশে কথার চাবুক ছুটলো, “কার জন্য আবার? আমার জন্য! বিয়ে বাড়িতে যাবো, সাদামাটা পোষাকে যাবো নাকি?...” ইত্যাদি ইত্যাদি!
“না...মানে ইয়ে ...আমি ভেবেছিলাম....তোমার কাজিনের জন্য…ইয়ে...!”
প্রথমেই বলেছিলাম, আমি আস্ত একটা রামছাগল। নাহলে কেউ এমন প্রশ্ন করে? আহা! মেয়েটাও ভাবলো, আমি রামছাগলের ‘প্রোটোটাইপ’...নাহলে এমন ‘উত্তর-জানা’ প্রশ্ন করে ‘অপমান’ করি?
এখন তোমরাই বলো...নর্মাল ছাগল যদি ৩৩ হয় আর রামছাগল যদি হয় ৮০, তাহলে ১০০ এর মধ্যে আমার কত পাওয়া উচিত??
শনিবার, ১৮ আগস্ট, ২০০৭
নাম রহস্য
-
আমার এক মামা আছে... মায়ের দূরসম্পর্কের ফুফাত ভাই... তার নাম ‘হবু’। যখন অপরিচিত কারো সামনে হবুমামাকে নিয়ে আলোচনা করা হয়...তখন সবাই হা করে তাকিয়ে থাকে...মামা আবার হবু হয় কিভাবে? হবু ভাবী...হবু মামী...হবু খালু...হবু জামাই এমনকি হবু শ্বশুর-শাশুড়ি ও হয়! তাই বলে মামা-খালা কি হবু হয়?
তবে মূল কাহিনী হল তার ‘ভালো’ নামে মানে ‘কেতাবী’ নামে!
গোড়া থেকে ‘সাফসুতরো’ করেই বলি। ছোট বেলায় তিনি নাকি খুবই হাবাগোবা টাইপের ছিলেন। তাই সমবয়সীরা তাকে ডাকতো... ‘হাবলুম মীমমাসাদ’! হাবা থেকে ‘হাবলুম মীমমাসাদ’! ফাজলামো করে ডাকতে ডাকতে ওটাই হয়ে গেলো আসল নাম! তার পন্ডিত-অজ্ঞ ‘পিতা-প্রাতঃস্মরণীয়’ ... স্কুলে ভর্তির সময় নাম দিলেন ‘মোহাম্মাদ মীমমাসাদ’! কি চমৎকার নাম! নামের উৎস পবিত্র কোর’আন শরিফ! ‘সুরা লাহাব’ থেকে ডাইরেক্ট কপি-পেস্ট! ‘সহি’ আরবী নামে ছেলের নামকরণ! মারহাবা!!
হবুমামা এখন অনেক বড় হয়েছেন। বোকাসোকা সেই নাদুনুদুস ছেলেটি আর নেই। তিনি একজন BCS ক্যাডার! তবে মীমমাসাদ নামটা রয়েই গেছে! ‘মীমমাসাদ’ কি বস্তু? খায় না পিন্দে? শব্দটার মানে ‘খেজুরকাঁটা দিয়ে তৈরী দড়ি’ যেটা প্রাচীন আরবে কাউকে শাস্তি দেবার জন্য ব্যবহৃত হতো!
আমার বন্ধু ...রাশেদ। প্রাইমারী স্কুলে ভর্তির খাতায় নাম এন্ট্রির সময় স্যার জিজ্ঞাসা করলেন,
নাম কি?
রাশেদ।
রাশেদ কি?
রাশেদ কিছুনা।
কিছুনা মানে?
স্যার, শুধু রাশেদ। আগে পিছে কিছু নাই।
তাহলে তো তোকে একটা ভালো নাম দিতে হয়। যা, তোর নাম দিলাম রাশেদুল ইসলাম।
স্যার?
কি?
স্যার, আমার নাম দেন রাশেদ খান মেনন!
দেয়া যাবেনা
তাহলে স্যার, রাশেদ চৌধুরী?
উঁহু, তাও দেয়া যাবেনা
কেন, স্যার?
আগে দুইজনকে ওই দুইটা নাম দিয়ে দিয়েছি। একই নাম দিলে পরে আবার গ্যানজাম বেঁধে যাবে। যা এখন ভাগ। ওই পরে কে আসিস? সামনে আয়...!
রাশেদ এখন মাঝে মাঝে মজা করে বলে...ইস, কিছুক্ষণ আগে স্কুলে গেলে রাশেদ বিশ্বাস নামের ছেলেটা রাশেদ খান সাহেব হয়ে যেতো! হে হে হে!
আমার এক দূরসম্পর্কের খালার স্কুলের নাম ছিলো......
মোছাম্মাত খালেদা খাতুন, পিতা আব্দুল খালেক বিশ্বাস।
একই ক্লাসের তার এক বান্ধবীর নাম ছিলো......
মোছাম্মাত খালেদা খাতুন, পিতা আব্দুল খালেক বিশ্বাস!
এই নিয়ে প্রায়ই গোলমাল বেধে যেতো! একেবারে লেজেগোবরে অবস্থা! দেখা গেলো, পরীক্ষায় দুজনের কেউ শুন্য পেলে আরেকজন ঝাড়ি খেতো! আবার একজনের বয়ফ্রেন্ডের চিঠি আরেকজন খুলে লজ্জায় লাল হয়ে যেতো! এরকম অবস্থায় দু’জনেই অস্থির! নামের এই আজন্ম ‘পাপ’ খন্ডানোর সুযোগ এলো ক্লাস নাইনে SSC পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের সময়!
রেজিস্ট্রেশন শেষে টিফিনের সময় দুই বান্ধবী মিলে দাঁড়িয়ে ঝালমুড়ি খাচ্ছিলো। খালা বললো, “খালেদা, প্রব্লেম সলভ’ড। রেজিস্ট্রেশনের সময় আমার নাম চেঞ্জ করে দিয়েছি!” বান্ধবীর চোখে আতঙ্কের ছাপ, “কি দিয়েছিস?”
“খালেদা পারভীন!”
বান্ধবীর হাত থেকে মুড়ি মাখানো প্যাকেটটা পড়ে গেলো!
ঠিক একই চিন্তা করে বান্ধবীও নাম চেঞ্জ করেছে! আর নামও নিয়েছে খালেদা পারভীন! একেই হয়তো বলে টেলিপ্যাথি! বাপের নামটা চেঞ্জ করে দিলেও হয়তো মিলে যেতো আবার!!
আমার নিজের নামটার উৎপত্তিটাও বেশ মজার। ৮ বছর বয়সে স্কুলে ভর্তির সময় দাদার পছন্দ করা একটা ‘গতানুগতিক’ নাম দিতে যাচ্ছিলেন আব্বা! ভর্তির ঠিক আগ মুহুর্তে আমি ‘ভেটো’ দিলাম! এই ‘মান্ধাত্বা’ নাম আমাকে ঠিক ‘স্যুট’ করছেনা! আমার কান্নাকাটি আর জোরাজুরির ফলে আব্বা একটা নাম ইন্সটান্টলী প্রোডিউস করলেন! সেটাই এখন আমার নাম!
বৃহস্পতিবার, ২ আগস্ট, ২০০৭
নতুন অধ্যায়!
বুম!!!
হঠাত করেই যেন বড় হয়ে গেলাম! পড়াশুনায় একটা ‘যতি’। নতুন চাকরী এবং প্রথম চাকরী! আগের মুহুর্তগুলোর সব উত্তেজনা যোগদানের সঙেগ সঙেগই বোতলবন্দী হয়ে গেলো! এ যেন একটা সেমিস্টার শেষ করে আরেকটা সেমিস্টারের শুরু!
হলে থাকার সময় মাঝে মাঝে সকালের ‘প্রথম’ সূর্যকে সালাম জানিয়ে ঘুমাতে যেতাম। আর এখন সূর্য ঊঠে আমাকে দেখে কপালে হাত ঠেকায়। এটুকুই পার্থক্য! মূল ঘটনা কিন্তু একই থাকলো, তাইনা? সকাল সকাল সুর্যিমামার সাথে কুশলাদি বিনিময় হয়ে যায়!
ঢাকা শহরে সবচেয়ে বেশী কষ্টে থাকে কারা বলুনতো? ছিন্নমূল আর বস্তিবাসীরা? হয়ত তারাই! কিন্তু তাদেরকে হিসাবের বাইরে নিলে সবচেয়ে কষ্টে দিন কাটে ব্যাচেলরদের! আমি এই গ্রুপের অন্যতম নবীন সদস্য! যখন পড়াশুনা করতাম তখন কোন গুরুদায়িত্ব এলে মুখ ঘুরিয়ে খুব সহজেই বলা যেতো... “আমার ক্লাস আছে”...কিংবা আরেকটু ভাব ‘গাঢ়’ করে “পরীক্ষা আছে...পড়তে পড়তে মাথা খারাপ”! কিন্তু এখন সে অজুহাতের গুড়ে ‘কিং ব্রাণ্ড সিমেন্ট’! হল ছেড়ে ‘উদ্বাস্তু’ হবার পর ‘জামাত’ করে মেসে থাকা শুরু হলো আমার বন্ধুদের। আমি একদিক দিয়ে ‘একটু’ ভাগ্যবান! আমি পেলাম মামার বাসা! কিন্তু তৃপ্তির ঢেকুর আর তুলতে পারি কোথায়? মামা যে নিজেই ব্যাচেলর! নিজেকে নিয়েই হয়রান। তার উপর এখন আমি যেন ‘পাঁচমণী’ ট্রাকে আঠারো-মণের বস্তা!
খুব সকালে দোকান থেকে পরোটা-ভাজি খেয়ে বেরিয়ে পড়ি। সকালে অফিসে যাওয়াটা বেশ আরামের। ঢাকা শহরকে তখন দিব্যি নিউইয়র্ক বলে চালিয়ে দেয়া যায়! ছিমছাম- নিরিবিলি-যানজটবিহীন ঢাকা দেখলেই মনটা ভালো হয়ে যায়! দেশের ভবিষ্যত সম্পর্কে ‘আরো’ বেশী আশাবাদী হয়ে উঠি! রামপুরা থেকে উত্তরা- এই রুটে বাসের ওভারলোড! একটাতে উঠে পড়লেই আমার অফিস!
অফিসে আমি কি করি?
ঢুকেছি ‘Trainee Engineer’ হিসাবে...প্রথমদিকের আসাইনমেন্টগুলো ঠিকঠাক করে দিতে পারলে...ক’মাস পর পার্মানেন্ট! আমরা ওখানে কম্পিউটারের সামনে বসে CAD এ ডিটেইলিং এর কাজ করি। যাদের এ ব্যাপারে খুব একটা ধারণা নেই তাদেরকে জ্ঞান দেবার লোভ আর সামলাতে পারলাম না! (জ্ঞান আর উপদেশ এদেশে এখনও ফ্রী সার্ভিস!)। একটা ‘স্ট্রাকচার’ কে মাটির উপর ‘সুস্থ্য-সবল’ ভাবে দাঁড় করাতে গেলে অনেকগুলো ধাপ পার হয়ে আসতে হয়। সহজ ভাবে বলতে গেলে... জিওটেকনিক্যাল সার্ভে ... আর্কিটেকচারাল ডিজাইন ... স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ... ডিটেইলিং ... কন্সট্রাকশন। আমাদের দেশে ‘RCC-work’ বেশী, সেজন্য ডিটেইলিংটা তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়না। এ কাজটা ফিল্ডে ‘Foreman’ ই করে ফেলতে পারে! আমাদের প্রতিষ্ঠান আমেরিকায় অবস্থিত ‘স্টিল স্ট্রাকচারের’ ডিটেইলিং করে থাকে। দেশের কোন কাজ এখনও করেনি! ক্যালকুলেশনে এক ইঞ্চির ‘৮ ভাগের ১ ভাগ’ গোলমাল হলেও ১০০ তলা ভবন মুহুর্তেই ‘নাই’ হয়ে যাবে! তাই ‘ডিটেইলিং’ খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ! মানে আমরাও গুরুত্বপূর্ণ! হে হে হে!
অফিসের পরিবেশটা খুব ফ্রেন্ডলী...একটু বেশি-ই!
সবই ঠিক ছিলো শুধু...
চিলেকোঠায় খাটের উপর একটা বিছানা পাতা আছে! ওটা দেখলেই মনে হয় একটু ঘুমিয়ে নিই! মাঝে মাঝে চোখ খোলা রেখেই ঘুমে ঢুলতে থাকি! কোন ‘পরমাসুন্দরী’র উপস্থিতি অগ্রাহ্য করা যায় খুব সহজেই ... কিন্তু দুপুরে খাবার পর নরম বিছানা দেখে না ঘুমিয়ে থাকা ......!
এ যে ‘অসাধ্যসাধন’ চেষ্টা!
সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০০৭
ল্যাবে একদিন !
পঞ্চম সেমিস্টারে Water Resource Engineering এর একটা ল্যাব-কোর্স করতে হয়। কাজ তেমন আহামরি কিছুইনা। শুধু কতগুলো হাইড্রোলিক-স্ট্রাকচার এর কিছু Parameter এর মান বের করতে হয়। বেশ আরাম। আমার মত ফাঁকিবাজ যারা, তারা খুব সহজেই অন্যের ঘাড়ে পা দিয়ে পুরো কোর্সটা পার করে দিতে পারে! শুধু গ্রুপমেটদের একটু সহানুভুতি আদায় করে নিতে পারলেই হয়! আর ‘বস’দের ক্যালকুলেশন কপি করে জমা দিলেই চলে। ডিসকাসন অন টপিক? এর কাছ থেকে একটু, আর ওর কাছ থেকে বাকিটুকু, এভাবেই! স্যারদের মাথায় অতো বুদ্ধি আছে নাকি যে আমাকে ধরবে?
যাই হোক, যেদিন Chezy’s C প্যারামিটার বের করলাম সেদিনের কথা-ই বলি! আমাদের মধ্যে শিখার সিজিপিএ খুব হাই! শিখা সম্পর্কে আমাদের মূল্যায়ন, “She possesses photographic memory”! ম্যানেজমেন্ট এর মত ‘বাংলা’ ক্লাস-টেস্ট এ আমরা যেখানে কেউই ২০ এর মধ্যে ১০-১২ এর বেশি পেলামনা, সেখানে ও মুখস্থ জিনিস হুবহু ‘উগড়ে’ দিয়ে ২০ ই পেয়ে বসলো! লাইন বাই লাইন মুখস্থ করেছি সেই ছোটো বেলায় ...“আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে”... তারপর যেন কি? আমারও আছে ফোটোগ্রাফিক মেমোরি, কিন্তু সেই মেমোরি ধরে রাখার তেমন ভালো ফোটোগ্রাফিক ফিল্ম নেই!
আর পাটু ? শিখাকে ইনভার্স করলে যা পাওয়া যায়, তা-ই পাটু! ফার্স্ট বেঞ্চে বসলেও ঝিমায় মতান্তরে ঘুমায়! সকাল আটটার ক্লাস সারা বুয়েট লাইফে কতগুলো করেছে তা আঙ্গুল গুনেই বলে দেয়া যায়! ঘুম থেকে সকালে ওঠা কি যে কঠিন!
সেদিন ক্লাসে শিখাদের গ্রুপে এক্সপেরিমেন্ট শেষে Chezy’s C এর মান আসলো প্রায় ৪০০০ এর কাছাকাছি! যেখানে ‘Allowable Value’ ৪ থেকে ৫ , সেখানে ‘৪০০০’ প্রয়োজনের তুলনায় ‘একটু’ বেশি-ই বলতে হবে! পাটু কখনই শিখার সাথে পেরে ওঠেনি । Tease করার এ ‘সুবর্ণ’ সুযোগ ছাড়তে নারাজ সে। “তোদের ‘C’ এর মান যা এসেছে, তা দেখলে স্বয়ং Chezy আত্মহত্যা করতো। আ...হা...রে... বেচারা Chezy!”
মনে হল শিখার গালে কে যেন একটা অদৃশ্য থাপ্পড় মেরে দিলো! কিন্তু আমাদের হাসি ঠেকানো-ই দায় হলো। শিখাকে এমন নাজেহাল অবস্থায় দেখতে পাওয়া যা-তা কথা নয়! কিন্তু পাটুর বিজয়রথ ওইটুকু-ই।
পরবর্তী সংক্ষিপ্ত পর্যায়ক্রমিক ঘটনাবলীঃ
১. ক্রোধাগ্নিতে ক্রমশঃ সমুজ্জ্বল শিখাদেবী
২. চরমমাত্রায় ক্রোধারোহন
৩. বিষোদগারের প্রস্তুতি গ্রহন
৪. বিষোদগার বর্ষণ
৫. (শ্রোতাকূলের কর্ণকুহরে অদৃশ্য প্রলেপ লেপন)
৬. রাজাধিরাজ পাটু-সিংহের কৃতিত্বের সহিত রণে ভঙ্গ!
৭. শিখাদেবীর হৃত-রাজ্য পুনরুদ্ধার
৮. একাংকিকার যবনিকা পতন