শুক্রবার, ৪ জানুয়ারী, ২০০৮

রুটি



রাস্তাঘাটে বের হলেই মোড়ে মোড়ে দরবারে-মা-শেফা কিংবা খাজাবাবা আজমিরী এ ধরণের অনেক রকম সাইনবোর্ড ই নজরে পড়ে! কী হয় ওখানে? আবার বোরখাপরা মহিলারা বাসের জানালার ভিতর দিয়ে যাত্রীদের সিটের উপর ছুঁড়ে মারে অনেক কেরামতি- প্রতিশ্রুত কাগজগুলো! প্রথম প্রথম ভয় পেতাম খুব! তখন আবার বোমাবাজির মৌসুম ছিলো কিনা! তাই কাগজ ছুড়ে মারার ভঙগীতে চমকে উঠতাম, যেন গ্রেনেড ছুড়ে মারছে! বিচিত্র সব সমস্যার আরো বিচিত্র সমাধান ওইখানে! কিছুদিন গভীর আনালাইসিস করে দেখলাম, সবাই একই রকম সমস্যার সমাধান করে! শুধু ব্রান্ড আলাদা!

কেউ কেউ একবাক্যে সব বিশ্বাস করে।

আবার কেউ কেউ একবাক্যে সব অবিশ্বাস করে।

আমি পড়ি বিপদে! বিজ্ঞানের ছাত্র। বিজ্ঞানে এই সব বুজুরুগি বিশ্বাস করেনা। পুরাপুরি যে অবিশ্বাস করে, তা নয়। বিজ্ঞানের মধ্যেও ভাওতাবাজি আছে! ফুটনোট পাওয়া যায় বেশ। সাইকোলজীকাল ট্রিটমেন্ট কিংবা টেলিপ্যাথি...এইসব শব্দ/শব্দগুচ্ছের সহমূল সায়েন্স এর ভিতরই!

আমার পাশেই একজন থাকেন যিনি এ ধরণের কাজে proসিদ্ধ-হস্ত!

তথাস্তু..তার কাছেও এই ধরণের অনেক মক্কেল আসে! তিনি কি কি বিষয়ে এলেম দান করেন? যেসব বিষয়ের ক্যাপসুল-ট্যাবলেট বাজারে সুল্ভ না...সেই সব বিষয়েরই! তবে সেই সব লিস্টি ঊদগীরণ করে বিরক্তি উতপাদন করার সদিচ্ছা আপাতত আমার নাই এখন! সাম্প্রতিক একটা ঘটনা আমার কানে এলো। এক আম-পাবলিক তার কাছে এসেছে চোর ধরার জন্য! চোর ধরার সহজ সলুশন হলো, সন্দেহভাজন মানুষদের একটা তালিকা তৈরী...তারপর সেই তালিকায় দোআ তাবিজের প্রয়োগ! এবং থানা-পুলিশের-আদালতের গুরুভার লাঘবকরণ! জনাচল্লিশেক রুটি নিয়ে বাদী হাজির! চল্লিশ-সন্দেহভাজন! প্রত্যেকের ভাগে এক-পিস করে। রুটিগুলোর উপর কী সব যেন লেখা...! অকাট্য সমাধান...যে চোর, সে এই দোয়া-কালামের রুটি ফাস্টোকেলাস জ্যামজেলি দিয়েও গিলতে অক্ষম...!

দুদিন পর উনার হাতে নতুন মোবাইল...

চোর ধরা পড়েছে...এভাবেই...! ফলশ্রুতিতে সামান্য কিছু উপঢৌকণ দৃশ্যমান...!

***

ভাগ্যিস, ওই রুটি আমাকে খেতে বলা হয়নি!

আমার গলায় বেধে যেত নিশ্চিত!

আমি-ই হতাম চোর।

লোকে বলে, আমার নাকি রসকষ একটু কম! আমি অতিসাধারণ রাইস-ইটিং বাঙালী! স্বাভাবিক সময়েই আমার গলা দিয়ে মোলায়েম রুটি নিচে নামতে চায়না!

আর ওইরকম টেনশিত মুহুর্তে রুটি গিলতে হলে?!

ধর, বেটারে ধর!

কইষা বাইন্ধা চড়!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন