-
গতকাল সন্ধ্যার মরা আলোয়,
শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোর সামনে দিয়ে
হেঁটে আসার সময়,
সুবাসে মাতোয়ারা ব্যক্তিটি আমিই ছিলাম, এরকম নিরস মানুষও
অজানা গন্তব্যের আশায় কিংবা আশঙ্কায়
নেচে উঠে। আত্মার আত্মীয়া খোঁজে, মনে মনে!
কিন্তু দু’কদম বাড়তি এগিয়েই
আবার...
অফিস শেষে ঘরে ফেরা অসহ্য গরমে অতীষ্ট-বিরক্ত,
ঘর্মাক্ত শরীরে-পোষাকে
সেই ছা-পোষা নিপাট ভদ্রলোক!
সেটাও আমি।
যার চিন্তাগুলো আবার আবর্তন করে বৈষয়িক ভাবনায়!
- -----------------------------------------------------------------------------
গতকাল শাহবাগ পুষ্পবিপণীর সামনে দিয়ে টিএসসি যাবার পথে, হঠাত করেই অনুভুতিটা হারিয়ে গিয়েছিলো। মনের গহীনে ভেসে ওঠা দু’টি সরল বাক্যকে অবিন্যস্ত ভাবে ভেঙ্গেই লিখে ফেললাম! ভঙ্গুর এই শব্দসমষ্টিকেই অনেকেই নাকি গদ্যকবিতা বলেন। তবে এটি কবিতা নয়, প্রলাপ মাত্র! অনেক দিন কিছু লেখা হয়নাতো!
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০০৮
Entry for June 12, 2008
নেগেটিভ!
-
সকালে উঠেই মেজাজটা খিঁচড়ে গেলো!
যাবেই বা না কেন? সকাল সকাল অফিস যাবো বলে এলার্ম দিয়েছিলাম সকাল সাতটা পাঁচ এ! কিন্তু যন্ত্রধ্বণি বাজার পরও বিছানায় এপাশ ওপাশ করে গড়িমসি করতে গিয়ে ১০ মিনিট লেট! আর সকালের ১০ মিনিট লেট মানে রাস্তায় আরো দু’জায়গায় বাড়তি জ্যামে আটকে পড়া! অফিসে দস্তুরমত ৩০ মিনিট লেট। ফলশ্রুতিতে মাসিক মাইনেতে নেগেটিভ!
দিনটাই খারাপ। অফিসে গিয়েই বসের ঝাড়ি ! কার মুখ দেখে যে উঠেছিলাম আজ? ও! মনে পড়েছে, হতভাগাটা আমিই ... আধবোঁজা চোখে রাজ্যের আলিস্যি নিয়ে বাথরুমের আয়নায় নিজেকেই দেখেছিলাম প্রথম! অকারণ ঝাড়ি খেলে মেজাজের পঞ্চমী আরো উপরে ওঠে! আর তাতেই ইন্সট্যান্ট ডাইরেক্ট একশন! মাথা ব্যাথা! কাজে অসংগতি। আবার ঝাড়ি। আবার মাথাব্যাথার উচ্চাংগের আরোহন! অচ্ছেদ্য দূষ্টচক্র! ফলাফল আরো নেগেটিভ!
‘অনিবার্য’ কারণে অফিসে যাই ছেঁড়া স্যান্ডেল পরে আর বাজারে পায়চারী করি ব্রান্ড-শু পরে! ছেঁড়া স্যান্ডেলে পৈত্রিক প্রাণটা বেঘোরে নেগেটিভ হতে পারে, এই ভেবে একখানা নতুন চপ্পল কেনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি ক’দিন ধরেই! সন্ধ্যার সময় রামপুরা বাজারে নেমে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে পাশের দোকানে গিয়ে নিজেকেই ‘জুতোবো’... সেই নিষ্পাপ ইচ্ছেটাও পুরণ হয়না। প্রচন্ড গরমে এটিএম-বুথটারও ডি-হাইড্রেশন ঘটে! প্রতিদিন বিকালে হাসফাস করে জ্ঞান হারায় ওটা! আর আমি আসি সন্ধ্যায়! টাকা তোলাও হয়না আর চপল-পায়ে-চাপা হয়না! বাসায় গেলেও ইলেক্টিসিটি নেই। দিনটাই নেগেটিভ!
ভগ্নহৃদয়ে রাস্তার ওপার থেকে এপার আসার সময় দানবীয় ট্রাকটাকে জ্যমিতিক এঙ্গেলে সাইড দিতে যাচ্ছি ... এমন সময়... সুললিত কন্ঠের এসএমএস ধ্বণি! ফ্রি এসএমএস এর ফ্রি শুভাকাংখা... শুভ সন্ধ্যা! বিশেষায়িত এমন একটা দিনের শেষে এসএমএসটা বিদ্রুপাত্মক হিসাবেই ধরা দিলো! হয়তো প্রেরকের ইচ্ছাটা ছিলো পজিটিভ! কিন্তু হাইপারটেনশনে নিজেকে আর সামলানো দূষ্কর হলো! কল-ব্যাক করলাম। ফলাফল ততক্ষণাত... ব্যালান্স নেগেটিভ!
ও! একটা কথা বলা হয়নি। আগের দিন ‘কোয়ান্টামে’ স্বেচ্ছায় ব্লাড ডোনেট করে এসেছিলাম। এ নিয়ে হলো মাত্র আটবার! কাজটা একদম নিঃস্বার্থ ভাবেই করি। এমনকি কাকে দিচ্ছি সেটাও জানতে ইচ্ছে করেনা। কোয়ান্টামে ব্লাড দেবার একটা মস্ত সুবিধা আছে! ওরা দুয়েকদিনের মধ্যেই ব্লাড এর পাঁচটা গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয়! আজ দুপুরে ই-মেইলের মাধ্যমে আসা ব্লাড রিপোর্টেও নেগেটিভ!
এইচ-আই-ভি নেগেটিভ!
*** এটা কয়েকদিন আগের পূর্ণদিনের স্বল্পদৈর্ঘ চিত্র মাত্র! ব্যস্ততা আর লোডশেডিং ... উভয়ই আমার উপর প্রভাব বিস্তার করায় একটু দেরী হলো!