চেহারা সুরতে তেমন একটা মনোহারী নই। গড়পড়তার চেয়েও বেশ খানেকটা নিচে! কিম্ভুতকিমাকার বললেও মানিয়ে যায়! ভাগ্যিস, বাংলা সিনেমার কোন ‘বিশিষ্ট’ পরিচালকের সামনে কখনও পড়িনি! তাহলে, একালের ভিলেনেরা বেকার হয়ে পড়তো! কী দরকার অন্য কারো পেটে লাথি দেবার! ভারী অন্যায়, ভারী অন্যায়!!
তবে, পৃথিবীর সব মা’এর চোখেই তার সন্তান সবচেয়ে সুদর্শন! তার কথা তাই কখনও মেনে নিই। কখনও আপত্তি করি! মায়ের চোখে ছানি পড়েছিলো। অপারেশন করিয়েছি। মা এখন দুনিয়াটাকে দেখে একেবারে তকতকে পরিষ্কার। “বাবা, তোর চেহারাটা এমন মলিন লাগছে কেন?”
জবাবে শুধু হেসে উঠি! মুচকি হাসি। সময়ে সময়ে একই প্রশ্নে হাসির দমক ফোটে আমার মুখে-চোখে।
মনে পড়ে, ইউনিভার্সিটিতে বন্ধুদের চোখ ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মন ফোটারও মৌসুম এলো। একবন্ধু সারারাত একমেয়ের সঙ্গে কথা বলতো। যেটিকে বুয়েটিয় পরিভাষায় বলে, ‘ফোন ফাইট’! কিন্তু, দেখা করার ব্যাপারে চিরন্তন গড়িমসী তার।
“কারণ কী, ভ্রাতা?” সপ্রশ্ন দৃষ্টি দেই ওর দিকে।
“জানিনা”।এরপর, একটু ভেবে, “যদি আমাকে পছন্দ না করে?”
“ঠিক আছে, আমি সঙ্গে যাবো! আমার পাশে যে থাকবে তাকেই সুন্দর লাগবে! তবে আমাকে কিন্তু খাওয়াতে হবে!”
এবং খাবারটা সুস্বাদু ছিলো!
এটাকেই বুঝি ফেসভ্যালু বলে!?
আরেক বন্ধুর অনেক দিনের ‘ইটিশ-পিটিশ’! প্রায় এক হালি বছর ‘ওয়ার্ম-আপ’ ম্যাচ খেলার পর তারা নিজ নিজ পরিবারে মাঠে নামলো তারা!
কিন্তু ছেলে হলো ‘বর্ণবাদী’ বৈষম্যের শিকার!
“এতো বাজে চেহারার ছেলের সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে হতেই পারেনা!”
এই নিয়ে তাদের ‘প্রিপেইড’ দাম্পত্য জীবনে আজ দূর্যোগের ঘনঘটা!
স্বান্তনা দিতে ইচ্ছে করেনা! বরং, উলটা রাগ দেখাই!
“তোরই তো ভুল!”
আশ্চর্য হয়ে তাকায় আমার দিকে!
“সঙ্গে আমার ছবিটাও দিতে পারতি তোর ‘ইয়ে’ কে! আমার ছবিটাই নাহয় দেখাতো প্রথমে এবং অবধারিতভাবে একই কথা শুনতো!”
“এতো বাজে চেহারার ছেলের সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে হতেই পারেনা!”
তখনই, চট করে তোর ছবিটা দেখিয়ে বলতো, “এই নাও আসল ছবি! ওটা তো ছিলো স্যাম্পল!”
তুলনামূলক তত্ত্ব বিচারে তোর তো কেল্লা ফতে হতোই!
এই রকম বিটকেলে ব্যাখ্যা শুনে বন্ধুবর দুঃখেও হেসে ওঠে!
[আশা করছি, বন্ধুটি এই লেখাটি পড়ছেনা! আর, ওদের জন্য শুভকামনা, যেন এই সাময়িক খরা ওরা কাটিয়ে উঠতে পারে, খুব শিগগির!]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন