সরকারী বিজ্ঞান কলেজ এক আজব জায়গা। অন্ততঃ পরীক্ষার কেন্দ্র হিসাবে! বিগত ২৮-তম এর লিখিত’র সিটপ্ল্যান অনুযায়ী রুমে প্রবেশ মাত্রই চোখের সামনে সাদা ইউনিফর্ম বিস্ফোরণে মূর্ছা যাই। এইচ.এস.সি এর কচিকাঁচারা আগে থেকেই ওখানে বসে! একই জায়গায় ওদের সিট! ওরা আমাদের কোলে বসে একসঙ্গেই পরীক্ষা দেবে কিনা, কর্তৃপক্ষের এ আয়োজনের ভাবনাও মনে এলো! :-/
সারা কলেজ দৌড়ে, কোথাও ‘তাল’ ধারণের জায়গা না পেয়ে অবশেষে এক স্যারকে বলি, “মহামহিম! দয়াপরবশ হউন, আপনার কামরায় এই অধমের স্থান সংকুলান করুন!” তিনি ইচ্ছে করলেন- কৃতার্থ হলাম।
বিজ্ঞানের ন্যাড়া বলেই কি বিজ্ঞান কলেজের বেলতলায় যেতে হবে বারেবার? কে জানে! দেশে এত মতবাদ, এত দল-উপদল- খালি প্রভেদ-বিভেদ! সিটপ্ল্যানেও জোড় বিজ়োড়ের দেশভাগ! বিশ্বদরবারে নিজ স্থান খুঁজে পাওয়া দায় আবারো! রাখিস মা আমারে রসে বশে!
পরীক্ষার হলে অসদুপায় অবলম্বন ভালো কথা নয়! পাশের জনকে বাজাইলাম, সাহায্য পাবার সুযোগ পেতে পারি কী? ভদ্রমহিলা কৃষিবিদ। বললেন, ‘সৎ’ ভাবে সাহায্য করলে তো ভালোই!
সদ্য ব্রাশ করা ভাঙ্গা দাঁত দেখিয়ে দিই- হক কথা! 'সৎ' ভাবে অসদুপায়ের দোষত্রুটি ক্ষমার্হ! :P
প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েই মন খারাপ! X( অন্তত ৭৫ না পেলে এই পরীক্ষায় আশার গুড়ে কিং ব্রান্ড সিমেন্ট! এত্তো সহজ! ইউনিভার্সিটির দুঃসহ স্মৃতি মনে পড়ে যায় এক লহমায়! বিভিন্ন কুইজে প্রশ্ন সহজ হলে, মন বাজাতো কৃষ্ণের বিরহী বাঁশি--- সহজ কিংবা কঠিন- কিছুই তো পারিনা। বরং, প্রশ্নের কঠিন দাওয়াই এলে বেশ ভালো লাগে- অন্তত আমার মত ‘না-পারা’র দলটা একটু ভারী হয়ে ওঠে বৈকি! ১০০ কেজি ‘অপমান’ তখন ৩ জনের ভিতর ভাগ না হয়ে ১৫ জনের উপর পড়ে! গায়ে ওটার ‘চাপ’ কম লাগে!
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, আনন্দের সাথে শিক্ষালাভ করতে! পরীক্ষার খাতায় নিজের পরিচয় দেখলে কার না আনন্দ লাগে! :D
প্রশ্ন ৪৩ : ‘জনৈক’ শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ -
(ক) জন+ইক
(খ) জন+ এক
(গ) জনৈ+এক
(ঘ) জন+ঈক
কেউ কোন দিন আমাকে কিছু উৎসর্গ করলোনা। ‘পিএসসি’ই বুঝলো আমারে! আহা!
“এতো সুখ সইবো কেমন করে-
সুখেও কান্না আসে দু’চোখ ভরে!” :((
পুনশ্চঃ পুরো ‘বিসিএস’ নিয়োগ কার্যক্রম এমনই শ্লথগতির যে, ‘শামুক’ ও এ ব্যাপারে লজ্জা পেতে পারে!
শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০০৯
অতঃপর ... আবারও বি.সি.এস এর শামুক!
বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০০৯
গ্রেট কম্বিনেশন, (নো) কনফিউশন!
গ্রেট কম্বিনেশন অংশঃ
দু’দিন ধরেই অফিসে একটা অদ্ভুত কম্বিনেশনের নাস্তা দেয়া হচ্ছে বিকেলে। মোসুমী ফলের সুযোগ্য প্রতিনিধি আমের সঙ্গে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মুড়ি! দু’টোই একইবাটিতে আসে। মুড়ির উপর কাটা আমের টুকরোগুলো ভাসতে থাকে যেন যেন কনক্রিট মিক্সারের উপর কতক খোয়া!
সেটিও না হয় মেনে নেয়া গেলো। তাই বলে মুড়ি খাবার জন্য ‘আন্তর্জাতিক’ কাঁটাচামচ? স্ট্যাটাস মেইনটেইন কেস?
সবজায়গাতেই কী একই অবস্থা?
আগের অফিসটাতে প্রায়ই খোরাকি হিসাবে আসতো ডিম সিদ্ধ উইথ বম্বে চানাচুর!
(নো) কনফিউশন অংশঃ
পাঁচ-পঞ্চাশ মানে আসলে কত?
দু’দিন আগেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপডেট দিয়েছিলাম। নানা ব্যাটসম্যানের নানারকম স্টাইল থুক্কু নানা মুনির নানা মত! জবাব গুলো শোনা যাক....
ক. ৫৫
খ. ৫৫০
গ. ২৫০ (৫০X৫=২৫০)
ঘ. ৫০৫০৫০৫০৫০ (এক ‘শ্রদ্ধেয়া’ এই জবাবটি দিয়েছেন। লজিকের খাতিরে এটিও রাখতে হলো!)
নিশ্চয় এতক্ষণে মনস্থির করে ফেলেছেন? তাহলে একটু অনুবাদক হওয়া যাক।
এবার বলুন, পাঁচ-পঞ্চাশ অর্থাৎ Five-Fifty মানে কত?
দু’দিন ধরেই অফিসে একটা অদ্ভুত কম্বিনেশনের নাস্তা দেয়া হচ্ছে বিকেলে। মোসুমী ফলের সুযোগ্য প্রতিনিধি আমের সঙ্গে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মুড়ি! দু’টোই একইবাটিতে আসে। মুড়ির উপর কাটা আমের টুকরোগুলো ভাসতে থাকে যেন যেন কনক্রিট মিক্সারের উপর কতক খোয়া!
সেটিও না হয় মেনে নেয়া গেলো। তাই বলে মুড়ি খাবার জন্য ‘আন্তর্জাতিক’ কাঁটাচামচ? স্ট্যাটাস মেইনটেইন কেস?
সবজায়গাতেই কী একই অবস্থা?
আগের অফিসটাতে প্রায়ই খোরাকি হিসাবে আসতো ডিম সিদ্ধ উইথ বম্বে চানাচুর!
(নো) কনফিউশন অংশঃ
পাঁচ-পঞ্চাশ মানে আসলে কত?
দু’দিন আগেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপডেট দিয়েছিলাম। নানা ব্যাটসম্যানের নানারকম স্টাইল থুক্কু নানা মুনির নানা মত! জবাব গুলো শোনা যাক....
ক. ৫৫
খ. ৫৫০
গ. ২৫০ (৫০X৫=২৫০)
ঘ. ৫০৫০৫০৫০৫০ (এক ‘শ্রদ্ধেয়া’ এই জবাবটি দিয়েছেন। লজিকের খাতিরে এটিও রাখতে হলো!)
নিশ্চয় এতক্ষণে মনস্থির করে ফেলেছেন? তাহলে একটু অনুবাদক হওয়া যাক।
এবার বলুন, পাঁচ-পঞ্চাশ অর্থাৎ Five-Fifty মানে কত?
স্যাম্পল
চেহারা সুরতে তেমন একটা মনোহারী নই। গড়পড়তার চেয়েও বেশ খানেকটা নিচে! কিম্ভুতকিমাকার বললেও মানিয়ে যায়! ভাগ্যিস, বাংলা সিনেমার কোন ‘বিশিষ্ট’ পরিচালকের সামনে কখনও পড়িনি! তাহলে, একালের ভিলেনেরা বেকার হয়ে পড়তো! কী দরকার অন্য কারো পেটে লাথি দেবার!
ভারী অন্যায়, ভারী অন্যায়!!
তবে, পৃথিবীর সব মা’এর চোখেই তার সন্তান সবচেয়ে সুদর্শন! তার কথা তাই কখনও মেনে নিই। কখনও আপত্তি করি! মায়ের চোখে ছানি পড়েছিলো। অপারেশন করিয়েছি। মা এখন দুনিয়াটাকে দেখে একেবারে তকতকে পরিষ্কার। “বাবা, তোর চেহারাটা এমন মলিন লাগছে কেন?”
জবাবে শুধু হেসে উঠি! মুচকি হাসি। সময়ে সময়ে একই প্রশ্নে হাসির দমক ফোটে আমার মুখে-চোখে।
মনে পড়ে, ইউনিভার্সিটিতে বন্ধুদের চোখ ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মন ফোটারও মৌসুম এলো। একবন্ধু সারারাত একমেয়ের সঙ্গে কথা বলতো। যেটিকে বুয়েটিয় পরিভাষায় বলে, ‘ফোন ফাইট’! কিন্তু, দেখা করার ব্যাপারে চিরন্তন গড়িমসী তার।
“কারণ কী, ভ্রাতা?” সপ্রশ্ন দৃষ্টি দেই ওর দিকে।
“জানিনা”।এরপর, একটু ভেবে, “যদি আমাকে পছন্দ না করে?”
“ঠিক আছে, আমি সঙ্গে যাবো! আমার পাশে যে থাকবে তাকেই সুন্দর লাগবে! তবে আমাকে কিন্তু খাওয়াতে হবে!”
এবং খাবারটা সুস্বাদু ছিলো!
এটাকেই বুঝি ফেসভ্যালু বলে!?
আরেক বন্ধুর অনেক দিনের ‘ইটিশ-পিটিশ’! প্রায় এক হালি বছর ‘ওয়ার্ম-আপ’ ম্যাচ খেলার পর তারা নিজ নিজ পরিবারে মাঠে নামলো তারা!
কিন্তু ছেলে হলো ‘বর্ণবাদী’ বৈষম্যের শিকার!
“এতো বাজে চেহারার ছেলের সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে হতেই পারেনা!”
এই নিয়ে তাদের ‘প্রিপেইড’ দাম্পত্য জীবনে আজ দূর্যোগের ঘনঘটা!
স্বান্তনা দিতে ইচ্ছে করেনা! বরং, উলটা রাগ দেখাই!
“তোরই তো ভুল!”
আশ্চর্য হয়ে তাকায় আমার দিকে!
“সঙ্গে আমার ছবিটাও দিতে পারতি তোর ‘ইয়ে’ কে! আমার ছবিটাই নাহয় দেখাতো প্রথমে এবং অবধারিতভাবে একই কথা শুনতো!”
“এতো বাজে চেহারার ছেলের সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে হতেই পারেনা!”
তখনই, চট করে তোর ছবিটা দেখিয়ে বলতো, “এই নাও আসল ছবি! ওটা তো ছিলো স্যাম্পল!”
তুলনামূলক তত্ত্ব বিচারে তোর তো কেল্লা ফতে হতোই!
এই রকম বিটকেলে ব্যাখ্যা শুনে বন্ধুবর দুঃখেও হেসে ওঠে!
[আশা করছি, বন্ধুটি এই লেখাটি পড়ছেনা! আর, ওদের জন্য শুভকামনা, যেন এই সাময়িক খরা ওরা কাটিয়ে উঠতে পারে, খুব শিগগির!]
তবে, পৃথিবীর সব মা’এর চোখেই তার সন্তান সবচেয়ে সুদর্শন! তার কথা তাই কখনও মেনে নিই। কখনও আপত্তি করি! মায়ের চোখে ছানি পড়েছিলো। অপারেশন করিয়েছি। মা এখন দুনিয়াটাকে দেখে একেবারে তকতকে পরিষ্কার। “বাবা, তোর চেহারাটা এমন মলিন লাগছে কেন?”
জবাবে শুধু হেসে উঠি! মুচকি হাসি। সময়ে সময়ে একই প্রশ্নে হাসির দমক ফোটে আমার মুখে-চোখে।
মনে পড়ে, ইউনিভার্সিটিতে বন্ধুদের চোখ ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মন ফোটারও মৌসুম এলো। একবন্ধু সারারাত একমেয়ের সঙ্গে কথা বলতো। যেটিকে বুয়েটিয় পরিভাষায় বলে, ‘ফোন ফাইট’! কিন্তু, দেখা করার ব্যাপারে চিরন্তন গড়িমসী তার।
“কারণ কী, ভ্রাতা?” সপ্রশ্ন দৃষ্টি দেই ওর দিকে।
“জানিনা”।এরপর, একটু ভেবে, “যদি আমাকে পছন্দ না করে?”
“ঠিক আছে, আমি সঙ্গে যাবো! আমার পাশে যে থাকবে তাকেই সুন্দর লাগবে! তবে আমাকে কিন্তু খাওয়াতে হবে!”
এবং খাবারটা সুস্বাদু ছিলো!
এটাকেই বুঝি ফেসভ্যালু বলে!?
আরেক বন্ধুর অনেক দিনের ‘ইটিশ-পিটিশ’! প্রায় এক হালি বছর ‘ওয়ার্ম-আপ’ ম্যাচ খেলার পর তারা নিজ নিজ পরিবারে মাঠে নামলো তারা!
কিন্তু ছেলে হলো ‘বর্ণবাদী’ বৈষম্যের শিকার!
“এতো বাজে চেহারার ছেলের সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে হতেই পারেনা!”
এই নিয়ে তাদের ‘প্রিপেইড’ দাম্পত্য জীবনে আজ দূর্যোগের ঘনঘটা!
স্বান্তনা দিতে ইচ্ছে করেনা! বরং, উলটা রাগ দেখাই!
“তোরই তো ভুল!”
আশ্চর্য হয়ে তাকায় আমার দিকে!
“সঙ্গে আমার ছবিটাও দিতে পারতি তোর ‘ইয়ে’ কে! আমার ছবিটাই নাহয় দেখাতো প্রথমে এবং অবধারিতভাবে একই কথা শুনতো!”
“এতো বাজে চেহারার ছেলের সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে হতেই পারেনা!”
তখনই, চট করে তোর ছবিটা দেখিয়ে বলতো, “এই নাও আসল ছবি! ওটা তো ছিলো স্যাম্পল!”
তুলনামূলক তত্ত্ব বিচারে তোর তো কেল্লা ফতে হতোই!
এই রকম বিটকেলে ব্যাখ্যা শুনে বন্ধুবর দুঃখেও হেসে ওঠে!
[আশা করছি, বন্ধুটি এই লেখাটি পড়ছেনা! আর, ওদের জন্য শুভকামনা, যেন এই সাময়িক খরা ওরা কাটিয়ে উঠতে পারে, খুব শিগগির!]
বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০০৯
আসুন, পুরনো একটা ওয়াজ শুনি, নতুন করে...
ওয়াজঃ
ঈমানী জোশ আর জেল্লায় হুজুর তার গলার টোন সপ্তসুরে তোলেন- উত্তেজনায় পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে উঁচু হয়ে বলেন, “আল্লাহর কী রহমত! আল্লাহপাক আমেরিকারে আমাদের পায়ের তলায় রাখছেন। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ! মাশাআল্লাহ!! এভাবেই আমেরিকার লোকজন আজীবন আমাদের পায়ের নিচেই থাকবে। সবাই বলেন, আমীন!”
“আ-মী--ন!” সমস্বরে হাঁক ওঠে!
(বদ্ধ ঘরের সজোরে আওয়াজে হয়তো আকাশ বাতাস কাঁপেনা। যদি পলেস্তরার প্রাণ থাকতো, ইটের সঙ্গে তার প্রথাগত সখ্যের অকাল মৃত্যু ঘটতো!)
তরজমাঃ
ভূ-গোলকীয় অবস্থানে বাংলাদেশের প্রায় মধ্যখান দিয়ে গেছে ৯০ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমা রেখা। আর বিশাল দেশ আমেরিকার মধ্যে কোন এক খানে ছেদ করেছে ৯০ ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমার কল্পিত রেখা। পৃথিবী গোলকের অবস্থান হিসাবে যেটি বাংলাদেশ একদম উল্টোদিকে।
বিজ্ঞান বলে, মানুষের বাস পৃথিবী পৃষ্ঠে। সেই হিসেবে আমেরিকানরা ঠিক আমাদের পায়ের নিচেই থাকে সবসময়।
শাস্ত্রে বলে, মিথ্যে বলা মহাপাপ।
হুজুর তো মিথ্যে বলেননি।
ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে।
(তাহলে, আমরা নিজেরা আমেরিকানদের সাপেক্ষে কোথায় আছি, সাধু?)
শানে নুজুলঃ
ছাপোষা কর্মচারী হিসাবে দেখছি, শুনছি -- অফিসের নতুন একটি সিস্টার কনসার্ন খোলা হচ্ছে। বেশ লাভের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে শুরুর আগেই। নতুন ফ্লোর নেয়া হলো এজন্য। ইমাম ডেকে মিলাদ পড়ানো হলো। এ উপলক্ষ্যে উচ্চপদস্থদের অনেককেই প্রথমবারের মত টুপিতে সয়লাব হতে দেখে ‘কেমন জানি’ লাগলো! নামাজে যাবার কারণে নামাযীদেরকে টিটকারীও শুনতে হয়েছে বেশ ক’বার এঁদের কাছ থেকেই!
নামাযের চেয়ে মিলাদের প্রয়োজনীয়তাই ‘হয়তো’ বেশি জরুরী।
একটি প্রভাবশালী পত্রিকা ধর্মের অনেক মৌলিক বিষয়ের উপর ‘তর্কের খাতির তর্কের’ মত কটাক্ষ প্রকাশ করে। কিন্তু দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা ‘অপ্রমানিত’ ও বিচিত্র আচারে আচরিত ‘মাজার’ রক্ষায় তাদের গলার স্বর খুবই জোরালো। ধুঁয়াটা তখন ওঠে প্রত্বতত্তের! মূলটা আসলে কোথায়?
সম্ভবত নজরুলের একটা কবিতার লাইন আছে, প্রায় সম্পূর্ণ ভুলভাবে সেটি খেয়াল আছে... শুধু ভাবটা...
“জিলাপি অর্ধেক বাঁচিয়া গিয়াছে, হুজুর তাই হাসিয়াই কুটি কুটি...”
কেউ কি পুরো কবিতাটি আমাকে দিতে পারবেন? ভুলটা সংশোধন করে নিতাম!
আর, পুরনো অথচ চমৎকার একটা পোস্ট পড়লাম একটু আগে। Click This Link
-------------------------------------------------
রাতমজুর ভাইয়ের সৌজন্যে কবিতার সঠিক অংশটুকুঃ
-------------------------------------------------
মানুষ- নজরুল ইসলাম
গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান,
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে, সল কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
‘পূজারী, দুয়ার খোল,
ক্ষুদার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পূজার সময় হলো!’
স্বপ্ন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়
দেবতার বরে আজ রাজা-টাজা হ’য়ে যাবে নিশ্চয়!
জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুদায় কন্ঠ ক্ষীণ
ডাকিল পান্থ, ‘দ্বার খোল বাবা, খাইনি তো সাত দিন!’
সহসা বন্ধ হ’ল মন্দির, ভুখারী ফিরিয়া চলে,
তিমির রাত্রি, পথ জুড়ে তার ক্ষুদার মানিক জ্বলে!
ভুখারী ফুকারি’ কয়,
‘ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয়!’
মসজিদে কাল শিরনী আছিল, অঢেল গোস্ত রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি!
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে-আজারির চিন্
বলে ‘বাবা, আমি ভুকা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’
তেরিয়াঁ হইয়া হাঁকিল মোল্লা – “ভ্যালা হ’ল দেখি লেঠা,
ভুখা আছ মর গো-ভাগাড়ে গিয়ে! নামাজ পড়িস বেটা?”
ভুখারী কহিল, ‘না বাবা!’ মোল্লা হাঁকিল – তা’ হলে শালা
সোজা পথ দেখ!’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা!
ভুখারী ফিরিয়া চলে,
চলিতে চলিতে বলে-
“আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তোমায় কভু,
আমার ক্ষুদার অন্ন তা’বলে বন্ধ করোনি প্রভু
তব মসজিদ মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবী,
মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবী!”
ঈমানী জোশ আর জেল্লায় হুজুর তার গলার টোন সপ্তসুরে তোলেন- উত্তেজনায় পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে উঁচু হয়ে বলেন, “আল্লাহর কী রহমত! আল্লাহপাক আমেরিকারে আমাদের পায়ের তলায় রাখছেন। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ! মাশাআল্লাহ!! এভাবেই আমেরিকার লোকজন আজীবন আমাদের পায়ের নিচেই থাকবে। সবাই বলেন, আমীন!”
“আ-মী--ন!” সমস্বরে হাঁক ওঠে!
(বদ্ধ ঘরের সজোরে আওয়াজে হয়তো আকাশ বাতাস কাঁপেনা। যদি পলেস্তরার প্রাণ থাকতো, ইটের সঙ্গে তার প্রথাগত সখ্যের অকাল মৃত্যু ঘটতো!)
তরজমাঃ
ভূ-গোলকীয় অবস্থানে বাংলাদেশের প্রায় মধ্যখান দিয়ে গেছে ৯০ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমা রেখা। আর বিশাল দেশ আমেরিকার মধ্যে কোন এক খানে ছেদ করেছে ৯০ ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমার কল্পিত রেখা। পৃথিবী গোলকের অবস্থান হিসাবে যেটি বাংলাদেশ একদম উল্টোদিকে।
বিজ্ঞান বলে, মানুষের বাস পৃথিবী পৃষ্ঠে। সেই হিসেবে আমেরিকানরা ঠিক আমাদের পায়ের নিচেই থাকে সবসময়।
শাস্ত্রে বলে, মিথ্যে বলা মহাপাপ।
হুজুর তো মিথ্যে বলেননি।
ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে।
(তাহলে, আমরা নিজেরা আমেরিকানদের সাপেক্ষে কোথায় আছি, সাধু?)
শানে নুজুলঃ
ছাপোষা কর্মচারী হিসাবে দেখছি, শুনছি -- অফিসের নতুন একটি সিস্টার কনসার্ন খোলা হচ্ছে। বেশ লাভের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে শুরুর আগেই। নতুন ফ্লোর নেয়া হলো এজন্য। ইমাম ডেকে মিলাদ পড়ানো হলো। এ উপলক্ষ্যে উচ্চপদস্থদের অনেককেই প্রথমবারের মত টুপিতে সয়লাব হতে দেখে ‘কেমন জানি’ লাগলো! নামাজে যাবার কারণে নামাযীদেরকে টিটকারীও শুনতে হয়েছে বেশ ক’বার এঁদের কাছ থেকেই!
নামাযের চেয়ে মিলাদের প্রয়োজনীয়তাই ‘হয়তো’ বেশি জরুরী।
একটি প্রভাবশালী পত্রিকা ধর্মের অনেক মৌলিক বিষয়ের উপর ‘তর্কের খাতির তর্কের’ মত কটাক্ষ প্রকাশ করে। কিন্তু দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা ‘অপ্রমানিত’ ও বিচিত্র আচারে আচরিত ‘মাজার’ রক্ষায় তাদের গলার স্বর খুবই জোরালো। ধুঁয়াটা তখন ওঠে প্রত্বতত্তের! মূলটা আসলে কোথায়?
সম্ভবত নজরুলের একটা কবিতার লাইন আছে, প্রায় সম্পূর্ণ ভুলভাবে সেটি খেয়াল আছে... শুধু ভাবটা...
“জিলাপি অর্ধেক বাঁচিয়া গিয়াছে, হুজুর তাই হাসিয়াই কুটি কুটি...”
কেউ কি পুরো কবিতাটি আমাকে দিতে পারবেন? ভুলটা সংশোধন করে নিতাম!
আর, পুরনো অথচ চমৎকার একটা পোস্ট পড়লাম একটু আগে। Click This Link
-------------------------------------------------
রাতমজুর ভাইয়ের সৌজন্যে কবিতার সঠিক অংশটুকুঃ
-------------------------------------------------
মানুষ- নজরুল ইসলাম
গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান,
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে, সল কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
‘পূজারী, দুয়ার খোল,
ক্ষুদার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পূজার সময় হলো!’
স্বপ্ন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়
দেবতার বরে আজ রাজা-টাজা হ’য়ে যাবে নিশ্চয়!
জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুদায় কন্ঠ ক্ষীণ
ডাকিল পান্থ, ‘দ্বার খোল বাবা, খাইনি তো সাত দিন!’
সহসা বন্ধ হ’ল মন্দির, ভুখারী ফিরিয়া চলে,
তিমির রাত্রি, পথ জুড়ে তার ক্ষুদার মানিক জ্বলে!
ভুখারী ফুকারি’ কয়,
‘ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয়!’
মসজিদে কাল শিরনী আছিল, অঢেল গোস্ত রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি!
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে-আজারির চিন্
বলে ‘বাবা, আমি ভুকা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’
তেরিয়াঁ হইয়া হাঁকিল মোল্লা – “ভ্যালা হ’ল দেখি লেঠা,
ভুখা আছ মর গো-ভাগাড়ে গিয়ে! নামাজ পড়িস বেটা?”
ভুখারী কহিল, ‘না বাবা!’ মোল্লা হাঁকিল – তা’ হলে শালা
সোজা পথ দেখ!’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা!
ভুখারী ফিরিয়া চলে,
চলিতে চলিতে বলে-
“আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তোমায় কভু,
আমার ক্ষুদার অন্ন তা’বলে বন্ধ করোনি প্রভু
তব মসজিদ মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবী,
মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবী!”
শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০০৯
আহাম্মক
লোকটা ইচ্ছে করলেই রামপুরা ব্রিজের কাছে নামতে পারতো বাস থেকে। বাসটা ওখানে অনেকক্ষণই থেমেছিলো। যাত্রীনামার সুযোগ দিলো-তারপর ওঠারও। কাউন্টারের নিয়ম-তাগিদই তো সেটা।
পরবর্তীটি রামপুরা বাজার। কিন্তু, তার আবদার ছিলো মধ্যবর্তী কোন এক স্থানে নামার। ড্রাইভারকে বললো। প্রথমে মৃদুস্বরে-তারপর একটু জোরে-পরে গলার তার চড়িয়ে-তারপর?
চলন্ত গাড়িতে অবৈধ সুবিধা না পেয়ে তাই হাত লাগালো ড্রাইভারের গায়েই! আচমকা আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ড্রাইভার বাধ্য হয়েই ব্রেক কষলো বাসে। কুশলী চালনক্ষমতায় বড় ধরণের দূর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলো সবাই। ভাগ্যও ছিলো সঙ্গে।
বড় আকারের দূর্ঘটনা ঘটলে বাসের সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হতো। বাসের ভিতরে তো সে নিজেও ছিলো। নিস্তার পেতো সে? এভাবেই ছোট ছোট ব্যক্তিগত সুযোগসুবিধার জন্য বৃহত্তর ক্ষতি ডেকে আনি আমরা এভাবেই। সে, আমি কিংবা আপনি!
অথচ, সারাটি পথ আমার পাশে বসা এই ব্যক্তিই এতোক্ষণ দেশের উন্নতি নিয়ে সারারাস্তা জ্ঞান বিতরণ করলো আমাদের!
আহাম্মকীর কোন সীমা পরিসীমা নেই বোধহয়।
আর “Never underestimate the power of human stupidity.”
--------------
থেমে থাকাটা জীবন নয়। সামনে এগিয়ে যেতে হয় কিংবা পিছে পড়ে কাতরানোর নিয়তি বরণ। প্রতিনিয়ত একই অবস্থানে থাকাটা পিছিয়ে পড়ারই নামান্তর।
দেশের কী অবস্থা?
নৈরাশ্যবাদীদের জন্য অনেক খোরাকী মিলছে কালের এ সময়টায়। এটা নেই। ওটা নেই। পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, গ্যাস নেই- নেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের সুলভ সরবরাহ। এটা আছে, ওটা আছে। আছে মাস্তানী, আছে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই-আছে নারীর প্রতি অবমাননা। দূর্নীতির সহাস্য পদচারনাও আছে। আছে ধোঁয়াটে ভবিষ্যতের নিকষ হাতছানি। আছে ফারাক্কার বর্তমান চোখরাঙানীতে টিপাইমুখের ভবিষ্যৎ কান্নার জল।
তবুও আশা আছে। খুব সাধারণ কারণেই সুখী হবার আপ্রাণ প্রবণতা আছে। আছে খেলায় জিতে যাবার আনন্দ কিংবা হেরে গেলে রেগে ক্ষোভে ফেটে পড়ার স্বাধীনতা-সেটাও আনন্দ-স্বাধীনতা প্রকাশের আনন্দ। আরও আছে অনেক কিছু।
‘কালের কলস’কে সময় দিতে গিয়েই সামহোয়ারইনের অনেক ভালো লেখাই চাপা পড়ে যায় ব্লগের আর্কাইভে। তাই হয়তো, নতুন ব্লগের চেয়ে পুরনো সৃজনশীল আর তথ্যসমৃদ্ধ লেখাই আমাকে টানে বেশি। অন্যতম প্রিয় একজন ব্লগার ‘পাললিক মন’ ভাই এর ব্লগটা তাই প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। চলুন, সেটিই না হয় আরেকবার দেখে আসি।
Click This Link
দেশ আসলেই এগিয়ে চলেছে। হয়তো একটু ধীরে। জ্যামে আটকে থাকা বাসটাও কিন্তু একসময় লক্ষ্যে পৌছে যায়। যদিও এভাবে এগিয়ে যাওয়াটা আমাদের কাম্য নয়।
তারপরও আমাদের মাঝেই লুকিয়ে থাকা যেসব পোড়ামুখ-যেসব ক্ষয়ে যাওয়া হৃদয় ‘সবসময়ই’ জাতীয় উন্নতির এই চাকাটাতে ব্রেক কষিয়ে থামাতে চায়-তারা কী নিস্তার পায়, কখনও কী পাবে?
ইতিহাস কী তাদের ক্ষমা করে?
ক্ষমা কী পেয়েছে মীরজাফর? অন্য কোন আহাম্মক?
পরবর্তীটি রামপুরা বাজার। কিন্তু, তার আবদার ছিলো মধ্যবর্তী কোন এক স্থানে নামার। ড্রাইভারকে বললো। প্রথমে মৃদুস্বরে-তারপর একটু জোরে-পরে গলার তার চড়িয়ে-তারপর?
চলন্ত গাড়িতে অবৈধ সুবিধা না পেয়ে তাই হাত লাগালো ড্রাইভারের গায়েই! আচমকা আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ড্রাইভার বাধ্য হয়েই ব্রেক কষলো বাসে। কুশলী চালনক্ষমতায় বড় ধরণের দূর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলো সবাই। ভাগ্যও ছিলো সঙ্গে।
বড় আকারের দূর্ঘটনা ঘটলে বাসের সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হতো। বাসের ভিতরে তো সে নিজেও ছিলো। নিস্তার পেতো সে? এভাবেই ছোট ছোট ব্যক্তিগত সুযোগসুবিধার জন্য বৃহত্তর ক্ষতি ডেকে আনি আমরা এভাবেই। সে, আমি কিংবা আপনি!
অথচ, সারাটি পথ আমার পাশে বসা এই ব্যক্তিই এতোক্ষণ দেশের উন্নতি নিয়ে সারারাস্তা জ্ঞান বিতরণ করলো আমাদের!
আহাম্মকীর কোন সীমা পরিসীমা নেই বোধহয়।
আর “Never underestimate the power of human stupidity.”
--------------
থেমে থাকাটা জীবন নয়। সামনে এগিয়ে যেতে হয় কিংবা পিছে পড়ে কাতরানোর নিয়তি বরণ। প্রতিনিয়ত একই অবস্থানে থাকাটা পিছিয়ে পড়ারই নামান্তর।
দেশের কী অবস্থা?
নৈরাশ্যবাদীদের জন্য অনেক খোরাকী মিলছে কালের এ সময়টায়। এটা নেই। ওটা নেই। পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, গ্যাস নেই- নেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের সুলভ সরবরাহ। এটা আছে, ওটা আছে। আছে মাস্তানী, আছে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই-আছে নারীর প্রতি অবমাননা। দূর্নীতির সহাস্য পদচারনাও আছে। আছে ধোঁয়াটে ভবিষ্যতের নিকষ হাতছানি। আছে ফারাক্কার বর্তমান চোখরাঙানীতে টিপাইমুখের ভবিষ্যৎ কান্নার জল।
তবুও আশা আছে। খুব সাধারণ কারণেই সুখী হবার আপ্রাণ প্রবণতা আছে। আছে খেলায় জিতে যাবার আনন্দ কিংবা হেরে গেলে রেগে ক্ষোভে ফেটে পড়ার স্বাধীনতা-সেটাও আনন্দ-স্বাধীনতা প্রকাশের আনন্দ। আরও আছে অনেক কিছু।
‘কালের কলস’কে সময় দিতে গিয়েই সামহোয়ারইনের অনেক ভালো লেখাই চাপা পড়ে যায় ব্লগের আর্কাইভে। তাই হয়তো, নতুন ব্লগের চেয়ে পুরনো সৃজনশীল আর তথ্যসমৃদ্ধ লেখাই আমাকে টানে বেশি। অন্যতম প্রিয় একজন ব্লগার ‘পাললিক মন’ ভাই এর ব্লগটা তাই প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। চলুন, সেটিই না হয় আরেকবার দেখে আসি।
Click This Link
দেশ আসলেই এগিয়ে চলেছে। হয়তো একটু ধীরে। জ্যামে আটকে থাকা বাসটাও কিন্তু একসময় লক্ষ্যে পৌছে যায়। যদিও এভাবে এগিয়ে যাওয়াটা আমাদের কাম্য নয়।
তারপরও আমাদের মাঝেই লুকিয়ে থাকা যেসব পোড়ামুখ-যেসব ক্ষয়ে যাওয়া হৃদয় ‘সবসময়ই’ জাতীয় উন্নতির এই চাকাটাতে ব্রেক কষিয়ে থামাতে চায়-তারা কী নিস্তার পায়, কখনও কী পাবে?
ইতিহাস কী তাদের ক্ষমা করে?
ক্ষমা কী পেয়েছে মীরজাফর? অন্য কোন আহাম্মক?
সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০০৯
মহিষের ডানা
হঠাত করেই আতিকের ফোন, “চাকরী পার্মামেন্ট হইছে। সংগে প্রোমোশনও ফ্রি দিছে! তোমারে খাওয়াবো। মিশু ও আসবে।” খাওয়াদাওয়ার এমন প্রস্তাব এপ্রিশিয়েট না করাটা একরকম গুরুতর অপরাধের পর্যায়েই পড়ে। তার উপর নাকি হাসিবুল-মিশুও আসবে। সেই স্কুলের পর আবার দেখা হবে। বছর দশেক হবে। না করার উপায়ই নেই।
ভেন্যু ঢাকার বাইরে। উত্তরায়! তাতে কী? বেদুইনরা মরুভূমি পাড়ি দেয় আর আমিতো খাবার জন্যে মঙ্গলে যেতেও রাজী! কেউ যখন খাওয়ানোর প্রস্তাব দেয়, তখন একটা স্বাভাবিক প্রবনতা থাকে একটু বেশি খসানোর! হুমকিটা তাই আগেই দিয়ে রাখলাম ওকে। অভয় দিলো - মোহাফেজখানা ওর সংগেই আছে।
রেস্টুরেন্ট বাছাই করাও একটা প্রকট সমস্যা বটে। সবগুলোতেই চেখে দেখতে ইচ্ছ করে। কোনটায় ঢুকবো সেটা ঠিক করে হেঁটে হেঁটে ৫ নম্বর পেরিয়ে ১১ তে এসে হাজির। অবশেষে ক্লান্ত পা’গুলি ডানে মোচড় দিয়ে কোন একখানে থিতু হলো!
ইচ্ছা মত অর্ডার দেয়ার পর মেন্যুকার্ডটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিলাম। হঠাত একটা আইটেম নজরে এলো- ‘Buffalo Wings’। মনের ভিতর ধুলোপড়া ‘ডিকশনারি’টার পাতা উলটে ‘মহিষ’ ছাড়া আর কিছুই ভাসেনা! মহিষ বড় দূর্ভাগা প্রাণী! মৃত্যুর পর জাত হারায় ওরা। গরু হয়ে আমাদের প্লেটে আসে! বেচারাদের গায়ের রঙ কালো। তাই কালো গরু নামেও ওরা পরিচিত। ঘোরানো শিংগুলোও বেশ রোমান্টিক! কিন্তু কখনও কোন মহিষের wing তথা পাখা গজিয়েছে, এমনটি শুনেছি বলে মনে পড়েনা। ঘোড়া হলেও উইনিকর্ন বলে চালিয়ে দেয়া যেতো। তাই বলে মহিষাসুর?
পরিবেশনকারীকে তলব করি। অমায়িক হাসি দিয়ে জানায়, “স্যার ওইটা আমাদের ‘ইশপিশাল’ আইটেম!”
“কিন্তু মহিষের পাখনা পাইলেন কই?”
“ওইটা মুরগী দিয়ে তৈরী! মুরগীর পাখা।”
“মহিষ সাইজের মুরগী?! কত্ত বড়? এত দাম কম? কিন্তু আবার দেখি লেভেল ১ থেকে লেভেল ১০ পর্যন্ত! এর মানে কী? বসুন্ধরার মত লেভেল ১ খাইলে দাম কম, লেভেল ১০ এ খাইলে বেশি?”
“স্যার, ওটা হলো ঝাল এর মাত্রা! কোন মাত্রায় ঝাল খেতে চান, সেটার উপর নির্ভর করে! প্রতিলেভেল মাত্র ১০ টাকা!”
মনে পড়লো, শুরুতে ঝাল-কোক নিয়েছিলাম। এটাও নাকি ওদের ইশপিশাল মেনু! শা----, কোকের ভিতর একগামলা গোলমরিচ! প্রতি চুমুকেই নাকের ভিতর চুলকানী!
“ঠিক আছে ভাই, আমাদের জ্ঞান বাড়লো! প্রয়োজ়ন পড়লো ডাক দেবো। আহেম!”
খাওয়ার শেষে পরিবেশনকারী আবার এসে মুখে ‘ড্রাইওয়াশ মার্কা’ হাসি ঝুলিয়ে জিজ্ঞাসা করে, “স্যার, খাওয়া কেমন লাগলো?”
এসব ক্ষেত্রে মনে হয় ভদ্রতা করে বলতে হয়, “ভালো ভালো, অসাধারণ!” কিন্তু এত দাম দিয়ে এত অল্প সাধারণ মানের খাবার চেখে মেজাজ এমনিতেই টং! তার উপর ঝাল কোক! সেটাই মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো অবলীলায় , “যত আশা করে ঢুকেছিলাম, ততটা ভালো লাগেনি।” বলেই নিজের হাতের দিকে নজর গেলো, ছুরি-চামচের ‘ওএসডি’ অবস্থা দেখে ওয়েটার যেন আবার ‘খ্যাত’ মনে না করে তাই আবার যোগ করলাম, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় খেয়ে খাবারের মান দেখি। যদিও হাত দিয়েই খাই!”
মিশু আমার মত অত রূঢ় নয়, “না ভাই, মিনারেল ওয়াটারটা দারুন মজা লাগছে!”
***
[ বিয়ে বাড়িতে রান্না ভালো না লাগলে আমাদের মধ্যে বলার চল আছে, “রান্না অসাধারণ হইছে, বিশেষ করে কোক রান্না তো অতুলনীয়!”]
ভেন্যু ঢাকার বাইরে। উত্তরায়! তাতে কী? বেদুইনরা মরুভূমি পাড়ি দেয় আর আমিতো খাবার জন্যে মঙ্গলে যেতেও রাজী! কেউ যখন খাওয়ানোর প্রস্তাব দেয়, তখন একটা স্বাভাবিক প্রবনতা থাকে একটু বেশি খসানোর! হুমকিটা তাই আগেই দিয়ে রাখলাম ওকে। অভয় দিলো - মোহাফেজখানা ওর সংগেই আছে।
রেস্টুরেন্ট বাছাই করাও একটা প্রকট সমস্যা বটে। সবগুলোতেই চেখে দেখতে ইচ্ছ করে। কোনটায় ঢুকবো সেটা ঠিক করে হেঁটে হেঁটে ৫ নম্বর পেরিয়ে ১১ তে এসে হাজির। অবশেষে ক্লান্ত পা’গুলি ডানে মোচড় দিয়ে কোন একখানে থিতু হলো!
ইচ্ছা মত অর্ডার দেয়ার পর মেন্যুকার্ডটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিলাম। হঠাত একটা আইটেম নজরে এলো- ‘Buffalo Wings’। মনের ভিতর ধুলোপড়া ‘ডিকশনারি’টার পাতা উলটে ‘মহিষ’ ছাড়া আর কিছুই ভাসেনা! মহিষ বড় দূর্ভাগা প্রাণী! মৃত্যুর পর জাত হারায় ওরা। গরু হয়ে আমাদের প্লেটে আসে! বেচারাদের গায়ের রঙ কালো। তাই কালো গরু নামেও ওরা পরিচিত। ঘোরানো শিংগুলোও বেশ রোমান্টিক! কিন্তু কখনও কোন মহিষের wing তথা পাখা গজিয়েছে, এমনটি শুনেছি বলে মনে পড়েনা। ঘোড়া হলেও উইনিকর্ন বলে চালিয়ে দেয়া যেতো। তাই বলে মহিষাসুর?
পরিবেশনকারীকে তলব করি। অমায়িক হাসি দিয়ে জানায়, “স্যার ওইটা আমাদের ‘ইশপিশাল’ আইটেম!”
“কিন্তু মহিষের পাখনা পাইলেন কই?”
“ওইটা মুরগী দিয়ে তৈরী! মুরগীর পাখা।”
“মহিষ সাইজের মুরগী?! কত্ত বড়? এত দাম কম? কিন্তু আবার দেখি লেভেল ১ থেকে লেভেল ১০ পর্যন্ত! এর মানে কী? বসুন্ধরার মত লেভেল ১ খাইলে দাম কম, লেভেল ১০ এ খাইলে বেশি?”
“স্যার, ওটা হলো ঝাল এর মাত্রা! কোন মাত্রায় ঝাল খেতে চান, সেটার উপর নির্ভর করে! প্রতিলেভেল মাত্র ১০ টাকা!”
মনে পড়লো, শুরুতে ঝাল-কোক নিয়েছিলাম। এটাও নাকি ওদের ইশপিশাল মেনু! শা----, কোকের ভিতর একগামলা গোলমরিচ! প্রতি চুমুকেই নাকের ভিতর চুলকানী!
“ঠিক আছে ভাই, আমাদের জ্ঞান বাড়লো! প্রয়োজ়ন পড়লো ডাক দেবো। আহেম!”
খাওয়ার শেষে পরিবেশনকারী আবার এসে মুখে ‘ড্রাইওয়াশ মার্কা’ হাসি ঝুলিয়ে জিজ্ঞাসা করে, “স্যার, খাওয়া কেমন লাগলো?”
এসব ক্ষেত্রে মনে হয় ভদ্রতা করে বলতে হয়, “ভালো ভালো, অসাধারণ!” কিন্তু এত দাম দিয়ে এত অল্প সাধারণ মানের খাবার চেখে মেজাজ এমনিতেই টং! তার উপর ঝাল কোক! সেটাই মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো অবলীলায় , “যত আশা করে ঢুকেছিলাম, ততটা ভালো লাগেনি।” বলেই নিজের হাতের দিকে নজর গেলো, ছুরি-চামচের ‘ওএসডি’ অবস্থা দেখে ওয়েটার যেন আবার ‘খ্যাত’ মনে না করে তাই আবার যোগ করলাম, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় খেয়ে খাবারের মান দেখি। যদিও হাত দিয়েই খাই!”
মিশু আমার মত অত রূঢ় নয়, “না ভাই, মিনারেল ওয়াটারটা দারুন মজা লাগছে!”
***
[ বিয়ে বাড়িতে রান্না ভালো না লাগলে আমাদের মধ্যে বলার চল আছে, “রান্না অসাধারণ হইছে, বিশেষ করে কোক রান্না তো অতুলনীয়!”]
শনিবার, ১৩ জুন, ২০০৯
অসুস্থ্যতা
শুক্রবার দুপুরের অলস সময়ের বদৌলতে হঠাত করেই একটা ছোট্ট মজার ঘটনা মনে পড়লো। ভুলের যাবার আগেই ঝট করে লিখে ফেলি।
--
আগের অফিসে ছুটি চাওয়া ও সেটা চেয়ে পাওয়াটা চরম ঝামেলার একটা ব্যাপার ছিলো। এডমিনিস্ট্রিটিভ অফিসার তথা এ.ও সাহেবের সামনে নানা রকম জবাবদিহিতার খেতাপুরি! কয়েক মিনিটের রিমান্ড! মেজাজ খারাপের একশেষ।
এর চেয়ে সহজ অথচ- ‘দূর্ণীতিমূলক’ অসুস্থ্যতা অনেক ভালো! টিম ম্যানেজারকে ফোন করে দিলেই হয়, “ভাইয়া, আজ আসতে পারবোনা মনে হয়। তবে একটু ভালো বোধ করলেই চলে আসার চেষ্টা করবো।”
উনিও ঘোড়েল। আমার আগেই পাশ দিয়েছেন এ লাইনে! জানেন সবকিছুই। তাই, আগাম শারীরিক আবহাওয়াবার্তা ছাড়া যেত মাঝে মধ্যে-“ভাইয়া, আগামী পরশু আমি অসুস্থ্য থাকবো!”
এরকমই কোন এক শুক্রবার দুপুরে ‘অসুস্থ্য’ আমি গিয়েছি বুয়েটে! ওহ! আগের অফিসে ছুটি ছিলো রবিবার, সেটা বলাটা আগেই দরকার ছিলো! পলাশীর প্রান্তরে থুক্কু মোড়েই আচমকা- ও মোর জ্বালা- এ.ও সাহেবের সঙ্গে দেখা- দুই জোড়া চোখের ‘অ-মধুর’ মিলন!
লজ্জায় মুখাবনত! তবুও ‘বীরবাঙ্গালী’ সাহসে তাকিয়ে দেখলো, উনি আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলেন!
পরদিন অফিসে গিয়ে শুনলাম, উনি অসুস্থ্যতার কারণে আগের দিন আসতে পারেন নি!
--
আগের অফিসে ছুটি চাওয়া ও সেটা চেয়ে পাওয়াটা চরম ঝামেলার একটা ব্যাপার ছিলো। এডমিনিস্ট্রিটিভ অফিসার তথা এ.ও সাহেবের সামনে নানা রকম জবাবদিহিতার খেতাপুরি! কয়েক মিনিটের রিমান্ড! মেজাজ খারাপের একশেষ।
এর চেয়ে সহজ অথচ- ‘দূর্ণীতিমূলক’ অসুস্থ্যতা অনেক ভালো! টিম ম্যানেজারকে ফোন করে দিলেই হয়, “ভাইয়া, আজ আসতে পারবোনা মনে হয়। তবে একটু ভালো বোধ করলেই চলে আসার চেষ্টা করবো।”
উনিও ঘোড়েল। আমার আগেই পাশ দিয়েছেন এ লাইনে! জানেন সবকিছুই। তাই, আগাম শারীরিক আবহাওয়াবার্তা ছাড়া যেত মাঝে মধ্যে-“ভাইয়া, আগামী পরশু আমি অসুস্থ্য থাকবো!”
এরকমই কোন এক শুক্রবার দুপুরে ‘অসুস্থ্য’ আমি গিয়েছি বুয়েটে! ওহ! আগের অফিসে ছুটি ছিলো রবিবার, সেটা বলাটা আগেই দরকার ছিলো! পলাশীর প্রান্তরে থুক্কু মোড়েই আচমকা- ও মোর জ্বালা- এ.ও সাহেবের সঙ্গে দেখা- দুই জোড়া চোখের ‘অ-মধুর’ মিলন!
লজ্জায় মুখাবনত! তবুও ‘বীরবাঙ্গালী’ সাহসে তাকিয়ে দেখলো, উনি আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলেন!
পরদিন অফিসে গিয়ে শুনলাম, উনি অসুস্থ্যতার কারণে আগের দিন আসতে পারেন নি!
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)