বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১০

কমেন্টস - ১৬ ডিসেম্বর

অদ্ভুত অনৈচ্ছিক স্ববিরোধিতার খপ্পরে...

কি করি উপায়?

শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১০

সুখের লটারি

কাল বিকেলে হঠাৎ করেই সুমন-চু এর সঙ্গে দেখা। চু- নামটা কিভাবে এলো জানিনা, তবে আন্দাজ করা যায়- ভালো কিছু থেকে না হয়তো। কারও দিনই ভালো যাচ্ছেনা। ও বাইরে যাবে পি-আর নিয়ে।

সুখ বিষয়ে ওর একটা কথা ভালো লেগে গেলো। প্রতিটা মানুষই জীবনের সুখের লটারি পায় একবার করে। কেউ সেই সুখটা ক্রমে ক্রমে খরচ করে শেষ করে ফেলে। আর বুদ্ধিমানেরা সেই সুখ আবার ইনভেস্ট  করে, নতুন সুখের আশায়!

আসলেই, সুখকে একটা গন্তব্য ভাবার চাইতে ভ্রমণ ভাবাটাই শ্রেয়তর।

মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১০

পাঠ

১.
অদ্বৈত মল্লবর্মন 'তিতাস একটি নদীর নাম'- উপন্যাসটি লিখেছিলেন। তিনি মৃত্যুর পর বিখ্যাত হয়েছিলেন।
২.
তিনি অনেক বই কিনতেন। যা রোজগার করতেন তার প্রায় সবই বই কিনে-পড়ে চলে যেতো।
৩.
তিনি নিদারুণ অর্থকষ্টে দিন কাটিয়েছেন। এভাবেই মরেছেন।
৪.
তার সময়ে ইন্টারনেট ছিলোনা। 'পাঠ' করতে অনেক কসরত করতে হতো।
৫.
কোথাও দু'টো লাইন দেখতে পড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। যেকোন বিষয়, সর্বভূকের মত।
৬.
লিখতে ইচ্ছে করেনা। পাঠের দায় এড়ানোর চেষ্টা।
৭.
আমি অদ্বৈত মল্লবর্মন নই। আমি তো আমিই।

সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১০

ভালো থাকা।


কেউ যখন জিজ্ঞাসা করে, কেমন আছেন- তখন বড্ড বিপদে পড়ে যাই। এ প্রশ্নের সঠিক জবাবটা কি হতে পারে, সেটা কখনই ভেবে বের করতে পারিনা। কিংবা, অনেকে আরো স্পেসিফিক হয়ে পড়ে, ভালো আছো? তখন, ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতেই হয়- কাটিয়ে যাওয়া যায়না। ‘না’- বলা যায়না। তাহলে কেন ‘না’, সেটার জন্য দস্তুরমত ট্রাইবুনালে পড়তে হয়। হ্যাঁ বলাটা তখন একরকমের মিথ্যে বৈকি!

প্রশ্নগুলো আসে অবধারিতভাবে। ভালো নাই কেন? আদৌ ভালো কি থাকতে চাই? 

কি জানি। আমার এই খারাপ থাকাটাই বোধহয় আমার ভালো থাকা।
সূদীর্ঘকালের খারাপ থাকাটাকেই ভালো লাগে হয়তো। আটপৌরে অভ্যাস!

শনিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১০

হাত কাটার মুহুর্তপর

মাত্র হাত কেটে গেলো। আরও ভালো করে বললে, বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলে। এক কোণায়। এক ফিনকি রক্তও পড়েছে। অবাক হয় তাকিয়ে রইলাম সেই ফোটাটার দিকে। অদ্ভুত লাল। এমন লাল? এমন তো নয়, আমি কাজ করি বাইরে, মাঠে ঘাটে। কিংবা রাস্তায়। কিংবা, কায়িক শ্রমের অন্য কোন সম্মানজনক পেশায়।

আমার কাজ দস্তুর মত মাছি মারা কেরানীর মত।

হাত কেটেছে অফসেট কাগজের কোণে লেগে। কাগজ এত শক্ত নাকি আমার ত্বক এত নরম?

দুপুর ৩:২০
১৩-১১-২০১০
বনানী 

শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০১০

কোন এক গাঁয়ের বধুর কথা শোনাই শোনো


গনসঙ্গীতশিল্পী কলিম শরাফী গত হয়েছেন ২ নভেম্বর, ২০১০ এ। সত্যি কথা বলতে, তাঁর গানের কথা আমার তেমন জানা নেই। শুধুমাত্র “পথে পথে দিলাম ছড়ায়া... ও আমার চক্ষু নাই” – এটাই শুধু মনে ভাসে। আজ (১১-১১-২০১০) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় তাঁর উপর একটা নিবন্ধ পড়ছিলাম। লিখেছেন কামাল লোহানী। এ ধরণের নিবন্ধ আমাকে খুব টানে। কিছুটা গল্প, কিছু কবিতা, আবার কিছু ইতিহাসের সাথে মিশিয়ে সমাজের রূপবর্ণনার চেষ্টা। যেমন, ভালো লাগে সচলায়নের সিরাত তথা মনোয়ার হোসেনের লেখাগুলি।

গান শুনতে ভালোই লাগে। মূলত ক্লাসিক্যাল গান, পুরনো হলে বেশি ভালো। (এক্ষেত্রে আরও একটি ক্লিশে বিতর্ক চলে আসতে পারে- পুরনো গান ভালো নাকি নতুন গান? আসলে, ভালো পুরনো গানগুলিই টিকে থাকে; মানোত্তীর্ণ নয়- এমন সব হারিয়ে যায় যথানিয়মে।) যদিও আমার গানের জ্ঞান ‘কোমল পানীয় বোতল ফেলে দেয়ার আগে যেটুকু তরল’ অবশিষ্ট থাকে সেটার মত। সলিল চৌধুরীর অনেক গান শুনেছি। চমৎকার সঙ্গীত আয়োজন করতেন। হেমন্ত মুখার্জি’র ‘কোন এক গাঁয়ের বধুর কথা’- গানটা আমার আগে থেকেই ভালো লাগতো। আজ আরও ভালো লেগে গেলো পিছনের গল্পটা শুনে।
সলিল চৌধুরী কলিম শরাফী’র জন্যই গানটি লিখে সুর দিয়েছিলেন। কিন্তু, মাঝে হেমন্তের পছন্দ হওয়ায় কলিম শরাফীর কাছে অনুমতি নিয়ে নিজেই গানখানি করেন! এ নিয়ে সলিল চৌধুরী নাকি খানিকটা অনুতপ্ত ছিলেন! 

***

কোন এক গাঁয়ের বধুর কথা শোনাই শোনো
রূপকথা নয় সে নয়
জীবনের মধুমাসের কুসুম ছিঁড়ে গাঁথা মালা শিশিরভেজা
কাহিনী শোনাই শোনো...
একটুখানি শ্যামল ঘেরা কুটিরে তার স্বপ্ন শত শত
দেখা দিত ধানের শীষের ইশারাতে
দিবাশেষে কিষাণ যখন আসতো ফিরে
ঘি মৌ-মৌ আমকাঠালের পিড়িটিতে বসতো তখন
সবখানি মন উজাড় করে দিতো তারে কিষাণী সেই
কাহিনী শোনাই শোনো ...

ঘুঘুডাকা ছায়ায় ঢাকা গ্রামখানি কোন মায়া ভরে
শ্রান্তজনে হাতছানিতে ডাকতো কাছে আদর করে
নীল শালুকে দোলন দিয়ে রঙ ফানুসে ভেসে
ঘুমপরী সে ঘুম পাড়াতো এসে কখন যাদু করে
ভোমরা যেত গুনগুনিয়ে ফোটা ফুলের পাশে
আকাশে বাতাসে সেথায় ছিলো পাকা ধানের বাসে বাসে সবার নিমন্ত্রণ
সেখানে বারো মাসে তেরো পাবন
আষাঢ় শ্রাবণ কি বৈশাখে গাঁয়ের বধুর শাখের ডাকে
লক্ষী এসে ভরে দিতো গোলা সবার ঘরে ঘরে
হায়রে কখন গেলো শমন অনাহারের বেশে দেশেতে সেই
কাহিনী শোনাই শোনো ...

ডাকিনী-যোগিনী, এলো শতনাগিনী, এলো পিশাচেরা এলো রে
শতপাকে বাঁধিয়া নাচে তাতা-তাধিয়া
কুটিলের মন্ত্রে শোষণের গেলো প্রাণ শত প্রাণ গেলো রে
মায়ার কুটিরে নিলো রস লুটিরে, মরুর রসনা এলোরে
ডাকিনী-যোগিনী, এলো শতনাগিনী, এলো পিশাচেরা এলো রে
হায় সেই মায়াঘেরা সন্ধ্যা
ডেকে যেত কত নিশিগন্ধ্যা
হায় বধু সুন্দরী কোথায় তোমার সেই মধুর জীবন মধুছন্দা  

হায় সেই সোনাভরা প্রান্তর
সোনালি স্বপন ভরা অন্তর
হায় সেই কিষাণের কিষাণীর জীবনের
ব্যাথার পাষাণ আমি বহি রে

আজও যদি তুমি কোন গাঁয়ে দেখো ভাঙা কুটিরেরও সারি।
যেন সেইখানে সে গাঁয়ের বধু আশা স্বপনেরও সমাধি।
***

মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০১০

অন্ধকার সরণি ধরে শেষ হবে এ পথ চলা


অন্ধকার সরণি ধরে শেষ হবে এ পথ চলা
আসবে যেন সেই সকাল জীবনের গল্প বলা।
বারবার পরাজয়, না- শেষ কথা তো নয়
উঠবে সূর্য আসবে দিন, ধীরলয়ে পায় পায়।
স্বপ্নহীন দু’চোখ বুঝি তাই হলো আজ উতলা
আসবে যেন সেই সকাল জীবনের গল্প বলা।

রাত জাগা কোন পাখির বারতা শোনাতে চায়
সূর্যেরও দিনলিপি লেখে আঁধার আকাশ গা-য়।
অন্তহীন প্রতীক্ষা বুকে সুদূরের চন্দ্রকলা
আসবে যেন সেই সকাল জীবনের গল্প বলা।

নচিকেতা'র গান