ঠিক কোথায় গিয়ে থামতে হবে? ভাবনাটা ভুঁইফোড় না। অনেক দিনের। এমন তো না যে, সাফল্য যথেচ্ছ ধরা দিয়েছে জীবনে। বরং মাপতে গেলে ব্যর্থতার পাল্লা-ই নেমে যাবে সমান্তরাল রেখা থেকে। তবুও ভাবি, ঠিক কোথায় গিয়ে থামতে হবে?
থামাটা কী জরুরী? গতিশীলতাই নাকি জীবন? থেমে থাকা নাকি অথর্বতা।
মুজতবা আলী’র সুইস নয়রাট সাহেব স্ত্রীকে নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন তার সময়, খেলায়-হেলাফেলায়। বয়স মধ্য চল্লিশ পার হবার পর। তার আগে গুছিয়ে নিয়েছিলেন অর্থনৈতিক প্রয়োজনের একটা সাবধানী সঞ্চয়। বাকি জীবনটা সুন্দরভাবে তারিয়ে উপভোগের জন্য। লোভ জাগে এমন জীবনের।
ঢাকা শহরটা ছুটছে। দিনে ও রাতে। দিন ও রাতের সঙ্গম সময়েও। গভীর রাতেও বিরাম নেই। ভুতো গলিরাস্তার রাত্রি জাগা একলা আমিও, ঘরের মধ্যে থেকেও বাইরের ছুটন্ত যানবাহনের শব্দে টের পাই ছুটে চলার তাৎপর্য। ভাবি আবার।
ঠিক কোথায় গিয়ে থামতে হবে?
দৌড়ুচ্ছি। গতির হিসাব মিলাচ্ছি অন্যদের দেখে। পিছিয়ে পড়ার ভয় প্রতিনিয়ত। আবার তাল হারিয়ে ঝিমিয়ে পড়বার অভিজ্ঞতাও আছে। আবার আলো দেখে উঠেছি। গড়বার আদর্শ বয়স এখন। সেটিও পার হয়ে যায় যায়। সামনে এখন অনেক পথ। একেকটা একেক রঙ্গের। পথের শেষগুলো আন্দাজ করতে পারি, নিশ্চিত হতে পারিনা। তাই ভয় লাগে।
ব্যক্তিগত জীবনেও কোথায় থামতে হবে? বর্তমান সময়ের প্রিয়জনদের সরব উপস্থিতি, অনুভূতির অনন্ত ভাষান্তর। আবার, ভবিষ্যতে নতুন প্রিয়জনদের জন্য প্রস্তুতি। তাদের যত্ন। কতদূর- কী করতে হবে? নানী’র মা বেঁচে আছেন। তাকে দেখেও ভাবি, তিনি থেমেছেন নাকি থামিয়ে দেয়া হয়েছে দৈবপাকে, অদৈবেও?
থামতে কি হবেই? কোথায় থামতে হবে তাহলে? এই থামাটা ইচ্ছের নাকি দৈবের?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন