মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

উল্টা ভাবনা

আস্তে আস্তে মানসিক রোগীতে পরিনত হচ্ছিনা তো?

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

আজকের ফেসবুক স্ট্যাটাস

"শরৎ আসে যায়, মেঘের ফাকে নীল ... এই শহরটায় অতিথী গাঙচিল"

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

কর্মবিরতির ঈদ (~শুভেচ্ছা-সহ~)

নিজেদের ‘অতিমানব’ মতান্তরে ‘অমানুষ’ প্রমাণ করতেই বোধহয় টানা ১৯ দিন অফিস করতে হলো, শুক্রবার সহ! উদ্দেশ্য খুব সরল সোজা। ঈদের সময় টানা বাড়তি সময়ের ছুটির ‘বোঝা’ টানা। ছুটি এখন একটা ‘বোঝা’ বটে! লম্বা ছুটি পেলে কর্মজীবীদের বেশির ভাগেরই নাকি এ রকম মনে হয়! কার্যদিবসের একরাশ বিরক্তি, ক্লান্তি আর অধৈর্যের লাগাম ছিঁড়ে যখন আমার কলিগ তথা বন্ধু আরিফ যখন অজান্তেই জোর গলায় হামদ খানি গেয়ে ওঠে, “দে পানাহ দে, ইয়া ইলাহি!” – সেটি ধর্মীয় গুণাগুণ গৌণ হয়ে যায়! ছেলেটা খাটাখাটনি করতে পারে খুব। ব্যবস্থাপক ও মালিক মহলে ওর প্রশস্তি চুঁইয়ে পড়ে অন্যদের স্বাভাবিক কাজের নিপূণতার উপরও – “আরিফের মত হও।” অফিসের সারাটা সময়ের পর বাসায় ফিরে নিজের ইচ্ছায় রাত তিনটা পর্যন্ত অফিসের কাজ করে আবার সকাল নয়টায় অফিসে ফেরে। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও চরম উদাসীন। ‘বাসায় ফেরা’র চেয়ে ‘অফিসে ফেরা’র প্রবাদটাই বেশি ভালো খাটে ওর জন্য। ছেলেটা প্রাণবন্ত, খুবই বন্ধুবৎসল আর পরোপকারী। সবাই ওকে পছন্দ করি। তাই প্রায়ই ওকে বলি, “দোস্ত, নিজের যত্ন নে!” হেসে বলে, কাজ করতে ভালো লাগে, নেশার মত লাগে। ঈদের আগের সপ্তাহে, একদিন সকালে মুখটা দেখেই ওর শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করতে পারি, “কী হইছে? শরীর খুব খারাপ?” বরাবরের মতই হেসে জবাব দেয়, “পেটে ব্যাথা, সেহরীর পর কয়েকবার বমি করছি!”

“তাইলে অফিসে আইছিস কেন? বাসায় যা, ঘুমা।” নিজের যত্ন নেবার কথা আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিই।

“এই ডিজাইনটা আজকেই দিতে হবে। স্যার কইছে।” ও আত্মরক্ষা করে।

“যা ভাগ। ” মেজাজ খারাপটা চরমে ওঠে।

একটু পরেই শরীর খুব খারাপ করছে বলে ও বাসায় ফিরে যায়। ব্যাচেলর মানুষ। এটাকে বাসা না বলে মেস বাড়ি বলা-ই উত্তম। সবাই অফিসে থাকায় দিনের বেলা ফাঁকা পড়ে থাকে। মেডিক্যাল পরিভাষায় কী বলে জানিনা, আমরা আমজনতা যেটা জানি, বিকালে খবর পাই, অবহেলায় ওর ‘এপেন্ডিসাইটিস ব্লাস্ট’ করেছে! এমনিতে ‘এপেন্ডিসাইটিস’ এর ব্যাথা নিরাময় ছোট্ট একটা অপারেশনের মাধ্যমেই করা যায়। কিন্তু সেটি ব্লাস্ট করলে তার ফলাফল মারাত্বক হয়ে উঠতে পারে। এমনকি মৃত্যুও!

নাহ, ও মরেনি। প্রতিদিন এত বেশি মানুষ অপঘাতে মরে যে, এখন এসবে আর গায়ের একটা লোমও উন্থিত হয়না। আর, এক্ষেত্রে? ও তো মরেইনি। যদিও অন্ত্র, ফুসফুস আর কিডনীর ভয়াবহ জটিলতার আশঙ্কা নিয়ে হাসপাতালের বেডে ‘কর্মহীন’ সময় কাটাচ্ছে!

ঈদ-টা এবার হাসপাতালেই কাটবে ওর! অফিসের ম্যানেজমেন্ট উপদেশ দিয়েছে, অবস্থা বেশি খারাপ হলে ব্যাঙ্কক নিয়ে যেতে। খরচটা অবশ্য আরিফ-কেই বহন করতে হবে!

*** বাঙ্গালী অলস বলে তার দূর্নাম রয়েছে, প্রমাণ-ও যথেচ্ছ দেয়া যায় হয়তো। কিন্তু, আমাদের মধ্যেও এরকম ‘কাজপাগলা’ লোক আছে। নিজেদের উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পূঙ্খানুপুঙ্খ পালন করাই এক অর্থে মানবিকতা। সঠিক পথে চলা। কিন্তু নিজের উপর বাড়তি চাপ দিয়ে অসুস্থতা ডেকে আনা তো মারাত্বক ক্ষতির কারণ তো বটেই। সুদুরপ্রসারী ভাবনায়, ক্ষতিটা অফিসেরও, সমাজেরও। তাই, নিজের ও নিজেদের নিরাপত্তা-ই সবচে’ আগে!

****


‘দাড়ি স্বাধীনতায়’ বিশ্বাসী হয়ে অফিস ডিকোরামের থোড়াই কেয়ার করে রোজার শুরু থেকে কয়েকদিন ইচ্ছেমত চললাম! সবার মধ্যে ইতিউতি- তালেবান না দেবদাস? সবাইকেই নিরাশ করি। আসল কথা হলো, শাওয়ার রুমের আর্দ্র পরিবেশের একঘেয়ে পরিবেশে থাকা শেভিং ফোমের ক্যানে মরিচা-বিদ্রোহে সব চুঁইয়ে পড়ে শেষ! আলসের একশেষ আমি। নতুন কেনা হয়নি।
বিকালে তাই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম- 'ঈদ' !!! ~ শেভিং ফোম নাই - স্যান্ডেল ছিঁড়ে গেছে - মোবাইলের ব্যালান্স তলানীতে- বিকাল সাড়ে তিনটায় ঘুম ভেঙ্গে... এবার একটু গা ঝাড়া দিয়ে ওঠা যাক!-- 'মোবারক' সাহেব কই?

গা ঝাড়া দিয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি, পাকাচুলো মুরুব্বীরা-ও সালাম দেয় আমাকে দেখে। বুঝলাম, মুন্ডনকাল সমাগত! দলাই-মলাইয়ের ও!

হ্যাপি ঈদ!

হ্যাপি ব্লগিং!