সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০০৯

♫ ♫ ♫ হঠাৎ খুব মেঘ করেছে ...


গানটার ভিতর ডুবে গেছি। শুধু শুনছি আর শুনছি।
শীতের কুয়াশার চাদরে অবোধ্য বৃষ্টিবিলাস।
ভালো নয়। ভালো। ভালো নয়।

------------------------------------

হঠাৎ খুব মেঘ করেছে ...
হঠাৎ খুব মেঘ করেছে, বৃষ্টি নামবে চারধার
এমন দিনে শুধু বলা যায়, তোমাকে বড্ড দরকার
বাইরে খুব মেঘ করেছে ...

কদম ফোটা শেষ হয়েছে, বাতাসে শিউলীর গন্ধ
কদম ফোটা শেষ হয়েছে, বাতাসে শিউলীর গন্ধ
অথচ দেখো এমন দিনে, তোমার দরজা বন্ধ।
বাইরে খুব মেঘ করেছে ...

সন্ধ্যে নামছে একটু পরে, সূর্যটা খুন হবে
বুকের ভিতর হাজার নদী, বাইরে বৃষ্টি পড়ে।
চৌদিক থেকে বান ছুটে এসে, ভাঙছে আমার ঘর দুয়ার
বলছে বাঁধছে তবুও বলে যাই, তোমাকে খুব দরকার।

বাইরে খুব মেঘ করেছে ... বৃষ্টি নামবে চারধার
এমন দিনে শুধু বলা যায়, তোমাকে বড্ড দরকার
বাইরে খুব মেঘ করেছে ...
হঠাৎ খুব মেঘ করেছে ...

-------------------------------------
শিল্পীঃ লোপামুদ্রা মিত্র
এলবামঃ ঝড় হতে পারি

রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০০৯

এমনই

সুউচ্চ ভবনের ছাদে উঠলে, চিলের পাখার উপরের ভাগ আমাকে টানে, মনে হয় আমিও ডানা ভাসিয়ে দিই। তার মত। নিচের সবুজ ঘাসের আহবান কে মনে হয় শান্তিঘুমের বিছানা। এখুনি নিজেকে মিলিয়ে দিই সেখানে। উচ্চতার আবাহন হয়তো এমনই।

শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০০৯

♫ ♫ ♫ তোমাকে ভেবে লেখা


মন ভালো নেই, তুমি পাশে নেই

মন ভালো নেই, বার বার মনে হয়, তুমি পাশে নেই


মন ভালো নেই, বার বার মনে হয়, তুমি পাশে নেই

ভাবি ধুর ছাই কেন কাটেনা সময়

সাতটি রঙ্গে তোমাকে খুঁজে বেড়াই

বৃষ্টি শেষে দেখা না পেলে বড় অভিমান হয়

রাত কাটে নির্ঘুম আমি নিশ্চুপ নিঃস্বর ভেবে যাই

ভালোবাসি তোমায় এতটা ...


তোমার হাসিতে হাজার ফুল ফুটে যায়

তুমি না আসলে হাসবে কে আমার বাগিচায়

তোমাকে ভেবে দেখো না এ গান লিখেছি

বুকে সব স্মৃতিগুলো এক করে এই সুর বেঁধেছি

মনে একটায় সুখ আমাকেও খুব ভালোবাসো তুমি তাই

ভালোবাসি তোমায় এতটাই ...


জানি তুমি ভালো নেই আমাকে একা রেখে

ভীষণ কষ্টে আছো আমাকে না দেখে

কত দিন দেখিনি তোমার মুখখানি

ক্ষণিকের জন্য থাকো আজ যেখানে

ফিরে তুমি আসবে আবার এ জীবনে কারণ

ভালোবাসো আমায় এতটাই ...


মন ভালো নেই,

মন ভালো নেই, বার বার মনে হয়, তুমি পাশে নেই

ভাবি ধুর ছাই কেন কাটেনা সময়

সাতটি রঙ্গে তোমাকে খুঁজে বেড়াই

দেখা না পেলে বড় অভিমান হয়

রাত কাটে নির্ঘুম আমি নিশ্চুপ নিঃস্বর ভেবে যাই

ভালোবাসি তোমায় ...


মন ভালো নেই, তুমি পাশে নেই

ভাবি ধুর ছাই এখনই যে চাই

চাই তোমাকে শুধু বলতে

সবটুকু মন দিয়ে সারাক্ষণ...

"ভালোবাসি"

-----------------------------

Get this widget | Track details | eSnips Social DNA

বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০০৯

দূর্বল

মাঝে মাঝে আমারও
বড় দূর্বল হতে ইচ্ছে করে।

অথচ সেটি হবার জন্য
যথেষ্ট
শক্তি সঞ্চয় করে উঠতে পারিনা।

পারিনা।।

-----------
রিপোস্টঃ
মূল লেখাঃ সামহোয়ারইন

মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০০৯

অবিন্যস্ত পত্র-২ : বন্ধুতা ও সুসম্পর্ক

বন্ধুতা ও সুসম্পর্ক- এ দু'টির মধ্যে সুক্ষ্ণ পার্থক্য আছে। যাদের সঙ্গে আপনার সুসম্পর্ক আছে, "কী খবর, কেমন আছো? দিনকাল কেমন কাটছে?" এগুলো খুব সহজেই বলতে পারবেন। চমৎকার জবাব পাবেন। একটু ভালো লাগবে। মন ভালো হবে। নিজেকে আগের চেয়েও একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনেও হতে পারে।

অথচ, বন্ধুর কাছে আপনি আপনার দমকে ছুটে আসা আচমকা অনুভূতির প্রকাশ করতে পারেন, কাঁদতেও পারেন তাকে জড়িয়ে ধরে...তবুও, তবুও তারা বিরক্ত হবেনা। আপনাকে অনুভব করবে।

আমার বন্ধু খুব কম। সুসম্পর্কের শুভাকাঙ্খী নেহাত মন্দ নয়! নিজ অবস্থানে সবাইকেই ভালোবাসি।

আমি নিঃসঙ্গ। সেটাই। কে নিঃসঙ্গ নয়? এজন্যই কী বলে, "জনারণ্যে নিঃসঙ্গ পথিক"? আমি তো সেই ছোট্টটি থেকেই একা সম্পূর্ণ একা। চিন্তা চেতনায়, বাস্তবে। এজন্য হয়তো অহংকারী খেতাবও জুটেছে বেশ ক'বার। কী জানি!

ভালো থাকুন। বরাবরের মতই।
যাত্রা শুভ হোক।
শুভ হোক আলোচ্য পড়াশুনার সূচি!

সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০০৯

পাখির আত্মহত্যা





"Suicide is man's way of telling God, "You can't fire me - I quit."

বিল মাহেরের এই মন্তব্যটি শুনতে যতই রোমাঞ্চকর মনে হোক না কেন, আদতে তা নয়! যে বস্তু আমাদের হাতে সৃষ্টি হয়নি, তা বিনাশ ঘটানোর অধিকারও নেই আমাদের! সুস্থ্য স্বাভাবিক জীবনবোধ কখনই সেটির অনুমোদন করেনা। প্রচলিত ধর্মসমূহও করেনা।

২.


কী কারণে আত্মহত্যা করে মানুষ? মোটাদাগে আমার ধারণা, কারও মানসিক ‘যুক্তিবোধ’ অন্য কোন আচমকা অনুভূতি যেমন ক্রোধ, লজ্জা, বিষণ্নতা, প্রতিশোধপরায়নতা, অপ্রাপ্তি, বিপদে সম্মান-রক্ষা ইত্যাদির কাছে পরাজিত হলেই মানুষ আত্মহত্যা করে – এককথায় মানসিক ভারসাম্যহীনতায় পৌঁছালে!

তবে পাখিরা কেন আত্মহত্যা করবে? ওদেরও কী সমাজ আছে সেভাবে? সেখানেও কী অনুভূতির সংঘাত ঘটে?

৩.

“As fog comes on a moonless night......
When the wind blows in direction right....

Jatinga turns into an island of search light,
& birds appear like ghosts from nowhere.”


বাংলাদেশ বেতারে সকালের একটা অনুষ্ঠান হতো, সম্ভবত নামটা ছিলো
‘গল্প হলেও সত্যি’। ছোটবেলায় সেখানে অনেক রকম ‘আজগুবী’ খবর শুনতাম। শিহরণ জাগানো ভালো লাগা ছিলো। আমি আর আম্মু সেগুলো শুনতাম আর নিজেদের ভিতরে আলোচনা করতাম এই বিশ্ব-সভ্যতার অদ্ভুত সব বিষয় নিয়ে। অনেক দিন পর কাল আবার কথাপ্রসঙ্গে চলে এলো সেসব। তাই, নেটে সার্চ দিয়ে পেলাম অনেক কিছু। ইশ! তখন যদি নেট থাকতো!

ভারতের আসাম রাজ্যের গৌহাটি থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দূরে উত্তর কাছাড় জেলার জাটিংগা গ্রামে পাখিরা আত্মহত্যা করে! মৌসুমী মাসগুলোর শেষে এই ঘটনা ঘটতে থাকে।
চন্দ্রবিহীন কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে, ৭ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত, আগে থেকে কোন রকম সতর্কতা না জানিয়েই পাখিরা আছড়ে পড়ে মাটিতে। আঘাত পেয়ে ওগুলো মারা যায়। স্থানীয় ‘জাইনতিয়া’ জনগোষ্ঠীর ধারণা, অশুভ আত্মারা ভর করে তখন এলাকার আকাশে বাতাসে।

৪.

অনেকের ধারণা, মৌসুম শেষে কুয়াশার কারণে পাখিরা দিগভ্রান্ত হয়ে পড়ে। আর, এই সময় গ্রামবাসীরা আলোর ফাঁদ সৃষ্টি করে পাখিদের আকৃষ্ট করে। এতে সহজেই যেন তাদের কে ধরে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা যায়। তবে কেন শুধু নির্দিষ্ট ১.৫ কিলো x ২০০ মিটার স্ট্রিপেই প্রায় ৪৪ প্রজাতির পাখি নিজেদের জীবনের শেষ ডেকে আনে? আসলেই কোন রহস্য নেই?

বিখ্যাত পাখি বিশারদ ডঃ সালিম আলি, ডঃ সেনগুপ্তা এ ব্যাপারে অনেক গবেষণা করেছেন। কিন্তু কোন পৃথক গবেষণার ফলাফলই পুরো ব্যাপারটিকে এখনও ব্যখ্যা ক
রতে পারেনি। মূলত বৈরী আবহাওয়ায় গভীর কুয়াশাতে পাখিরা উড়ে যাবার সময় গ্রামবাসীদের আলোর ফাঁদে আকৃষ্ট হয়ে এ কাণ্ড ঘটায়, এটিই সব গবেষণার উপসংহার। এছাড়া ঐ এলাকায় পাখির ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি। এ জন্য সংখ্যাগত সাম্যাবস্থা বজায় রাখতে এটি হয়তো প্রকৃতিরই কোন না জানা খেলা!

৫. ট্রিভিয়া-

ক. জাটিংগা-তে শুধুমাত্র স্থানীয় পাখিরাই আত্মহত্যা করে। অতিথী পাখিরা করেনা। আর পাখিরা সবসময়ই উত্তর থেকে উড়ে এসে দক্ষিণের ঢালে আছড়ে পড়ে। এ পাখিদের সামনে তখন কোন খাবার ধরলেও তারা খায়না।

খ. পাখিদের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে বিশ্বখ্যাত চিত্রপরিচালক আলফ্রেড হিচককের একটি চমৎকার একটি চলচ্চিত্রের নাম দি বার্ডস

গ. আমার মত অনেকের প্রিয় লেখক, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে মাথা উড়িয়ে দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।

ঘ. আত্মহত্যা করার পরিবেশবাদী পদ্ধতি














ঙ। আত্মহত্যা
ঠেকাতে প্রযুক্তির ব্যবহার


তথ্যসুত্রঃ মূলত উইকিপিডিয়া, উত্তর কাছাড় জেলার ওয়েবসাইট। সাম্প্রতিক একটি খবর বলছে, এটি প্রকৃতির কোন খেলা না, বরং এটি স্থানীয় একটি খেলারই নৃশংস ফলাফল!

রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০০৯

♫ ♫ ♫ পদ্মার ঢেউরে (নজরুল সঙ্গীত)

পদ্মার ঢেউ রে...
মোর শুণ্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা যারে
পদ্মার ঢেউরে...
মোর শুণ্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা যারে
পদ্মার ঢেউরে...

এই পদ্মে ছিলো রে যার রাঙা পা
এই পদ্মে ছিলো রে যার রাঙা পা
আমি হারায়েছি তারে
আমি হারায়েছি তারে
পদ্মার ঢেউরে...
মোর শুণ্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা যারে
পদ্মার ঢেউরে...

মোর পরাণও বধু নাই
পদ্মে তাই মধু নাই, নাইরে
পরাণও বধু নাই
পদ্মে তাই মধু নাই, নাইরে
বাতাস কাঁদে বাইরে
সে সুগন্ধ নাইরে
মোর রূপেরও সরষিতে, আনন্দ মৌমাছি
রূপেরও সরষিতে, আনন্দ মৌমাছি
নাহি ঝংকারে রে
পদ্মার ঢেউরে...
মোর শুণ্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা যারে
পদ্মার ঢেউরে...

ও পদ্মা রে, ঢেউয়ে তো ঢেউ উঠায় যেমন চাঁদের ঐ আলো
মোর বধুয়ার রূপ তেমনি ঝিলমিল করে কৃষ্ণ-কালো

সে প্রেমেরও ঘাটে ঘাটে
বাঁশি বাজায়
যদি দেখিস তারে দিস সে পদ্ম তার পায়

যদি দেখিস তারে দিস সে পদ্ম তার পায়
বলিস কেন বুকে আশার দেয়ালে জ্বালিয়ে
চলে গেলো চির অন্ধকারে

পদ্মার ঢেউরে...
মোর শুণ্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা যারে
পদ্মার ঢেউরে...
এই পদ্মে ছিলোরে যার রাঙা পা
এই পদ্মে ছিলোরে যার রাঙা পা
আমি হারায়েছি তারে
আমি হারায়েছি তারে
পদ্মার ঢেউরে...
মোর শুণ্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা যারে
পদ্মার ঢেউরে...


Get this widget | Track details | eSnips Social DNA

শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০০৯

ফেসবুক স্ট্যাটাস - ২৭ নভেম্বর ২০০৯

একটা পাখিকে সুবিধামত ডালের উপর বসিয়া থাকিতে দেখিলেই শিকারীর ইচ্ছা করে তাহাকে গুলি বসাইয়া দিতে, পাহাড়ের গায়ে প্রস্তর পতনোন্মুখ থাকিতে দেখিলেই বালকের ইচ্ছা করে এক লাথি মারিয়া তাহাকে গড়াইয়া ফেলিতে - যে জিনিষটা প্রতি মুহূর্তে পড়ি-পড়ি করিতেছে, অথচ কোনো একটা কিছুতে সংলগ্ন হইয়া আছে, তাহাকে ফেলিয়া দিলেই তবে যেন তাহার সম্পূর্ণতা সাধন এবং দর্শকের মনে তৃপ্তিলাভ হয়।


||কবিগুরু||

বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০০৯

♫ ♫ ♫ বড় একা লাগে

১.

বড় একা লাগে এই আঁধারে
মেঘেরও খেলা আকাশ পারে।।

সারাটি দিনের কাজে
কি জানি কি ভেবে আমি
এমনে ছিলেম ভুলে এই বেদনাকে
কে যে বলে দেবে এই আমাকে

মেঘের খেলা আকাশ পারে।।

এই তো ভালো, ভাবি
একা ভুলে থাকা
থাকনা পড়ে পিছে এই পিছু ডাকা
চেনা অচেনাতে যাক না মিশে

মেঘের খেলা আকাশ পারে।।

২.

শ্রীকান্ত আচার্য্যের গলায় গানখানি শুনছি। তবে, এটি তার মৌলিক গান নয়! মান্না দের গলায় বোধহয় প্রথম গাওয়া। ‘চৌরঙ্গী’ ছবিতে। ছবিতে ছিলেন উত্তম কুমার, সুপ্রিয়া আর উৎপল দত্ত প্রমূখ।

ব্যস্ত আছি!

০.১

ব্যস্ত আছি!

০.২

দারুণ ব্যস্ততায় কাটছে দিন। ডিপার্টমেন্টের ম্যানেজার হজব্রত পালনে গিয়েছেন। সহকারী ম্যানেজার গত ঈদ থেকে রোগভোগে শয্যাশায়ী। এই ঈদের শেষে তার অসুস্থ্যতার মুক্তি মিলবে বলেই আশাবাদ। তাই বাড়তি দায়িত্বের অংশ হিসাবে, দুই ‘তালকানা’ মিলেই পুরো ডিজাইন ডিপার্টমেন্ট গড়াচ্ছি! ম্যানেজারদের মনের ও শরীরের জ্বালা ক’দিনেই টের পাওয়া যাচ্ছে! আর না! জীবনে কখনও ‘ফুল’ ম্যানেজার হবো না! বরাদ্দকৃত কাজের উটকো প্রাপ্তি- দৌড়াদৌড়ি, বকাঝকা দেয়া ও নেয়ার সাম্যাবস্থা, মোটের উপর পরিশ্রমের একশেষ! মনেও পড়ে প্রভাব। কারোর সঙ্গে দেখা করবার, দু’দণ্ড গল্প জুড়বারও ফুরসত হচ্ছেনা। :((

০.৪

বাসায় বসে, সুমনের চাহিদা মোতাবেক আধঘণ্টার কাজ করতে লাগিয়ে দিলাম দু’সপ্তাহের বেশি। কাজের ব্যাপারে হাসানকেও মনি’র মাধ্যমে ঝুলিয়ে রেখেছি। “প্রবাসী বাঙ্গালী মাত্রেই সজ্জন” – এই মটো মেনে ইশতিয়াক তো দেশ ছেড়েই চলে গেলে। খুব সহজে ভুলে যাবার কথা নয়, হেঁটে হেঁটে অবিরাম ঘণ্টাবিনাশী আড্ডা! সিফাতের স্বেচ্ছায় নেয়া মন খারাপে প্রলেপ দিতে যাওয়ার জন্য ধানমন্ডি যাবার সময় নেই! অদিতির সঙ্গে পড়ন্ত-বিকেল ক্যাফেটেরিয়া’তে আড্ডা দেবার কথা ছিলো, অদেখার আঠারো মাস পর। হলো কই? রাত এলেই কাজের কাজে মন বসেনা আর! এমনিতে জেগে থাকি, নেটে পাহারা দিই। কী পাহারা দিই, কেউ জানেনা, নিজেও না! হয়তো শুধুই নেশা! অন্য কিছুতেই কিছু নেই।

নি-দারুণ ব্যস্ত। /:)

০.৭

ব্যস্ততার কারণে কোন বন্ধুর খোঁজ নেয়া যায়না, এই অযুহাতে আমার বড় মামার কান নেই!

বন্ধুদের বলেন, “শ্লা, দিনে যে কয়বার কমোডে বসিস, তখনও কী ব্যস্ত থাকিস? ঐ সময় একটা এসএমএস তো লিখতে পারিস আমাকে!”

০.৯

ব্যস্ততার কারণে কিছু অনুচ্ছেদ বাদ পড়ে গেলো। লেখা হলোনা। :|

১.০

“ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু,
পথে যদি পিছিয়ে পড়ি কভু॥
এই-যে হিয়া থরোথরো, কাঁপে আজি এমনতরো
এই বেদনা ক্ষমা করো, ক্ষমা করো, ক্ষমা করো প্রভু॥
এই দীনতা ক্ষমা করো প্রভু,
পিছন-পানে তাকাই যদি কভু।
দিনের তাপে রৌদ্রজ্বালায় শুকায় মালা পূজার থালায়,
সেই ম্লানতা ক্ষমা করো, ক্ষমা করো, ক্ষমা করো প্রভু।”

শুনবার লিঙ্কঃ

Get this widget | Track details | eSnips Social DNA

রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০০৯

♫ ♫ ♫ "ভালোবাসা তারপর"- অর্ণব

কষ্টগুলো শিকড় ছড়িয়ে
ঐ ভয়ানক একা চাঁদটার সাথে
স্বপ্নের আলোতে
যাবো বলে
যখন চোখ ভিজে যায় রাতে।

ভালবাসা তারপর দিতে পারে
গত বর্ষার সুবাস,
বহুদিন আগে তারাদের আলো
শূন্য আঁধার আকাশ।

প্রখর রোদে পোড়া পিঠ
আগুনের কুন্ডে শেঁকা হাত
শিশির ছোঁয়ায় পাবে হাসি
অন্ধকারে কেটে যাবে রাত।

দুপুরে...

শরীরের অবস্থা মেঘলা দিনের মত। না ঝরঝরে বৃষ্টি না টকটকে রোদ! পুরাপুরি সুস্থ্যও হচ্ছিনা আবার শয্যাশায়ীও নয়! বিরক্তিকর!

শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০০৯

অমলকান্তি ও নিঃসঙ্গতা

১.

অমলকান্তি আমার বন্ধু,
ইস্কুলে আমরা একসঙ্গে পড়তাম।
রোজ দেরি করে ক্লাসে আসত, পড়া পারত না,
শব্দরূপ জিজ্ঞেস করলে
এমন অবাক হয়ে জানলার দিকে তাকিয়ে থাকতো যে,
দেখে ভারী কষ্ট হত আমাদের।
আমরা কেউ মাষ্টার হতে চেয়েছিলাম, কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল।
অমলকান্তি সে সব কিছু হতে চায়নি।
সে রোদ্দুর হতে চেয়েছিল !
ক্ষান্তবর্ষণ কাক-ডাকা বিকেলের সেই লাজুক রোদ্দুর,
জাম আর জামরূলের পাতায়
যা নাকি অল্প-একটু হাসির মতন লেগে থাকে।

আমরা কেউ মাষ্টার হয়েছি, কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল।
অমলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি।
সে এখন অন্ধকার একটা ছাপাখানায় কাজ করে।
মাঝে মধ্যে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে,
চা খায়, এটা ওটা গল্প করে, তারপর বলে, উঠি তা হলে'।
আমি ওকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসি।
আমাদের মধ্যে যে এখন মাষ্টারি করে,
অনায়াসে সে ডাক্তার হতে পারত,
যে ডাক্তার হতে চেয়েছিল,
উকিল হলে তার এমন কিছু ক্ষতি হত না।
অথচ, সকলেরই ইচ্ছাপূরণ হল, এক অমলকান্তি ছাড়া।
অমলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি।
সেই অমলকান্তি - রোদ্দুরের কথা ভাবতে-ভাবতে
ভাবতে-ভাবতে
যে একদিন রোদ্দুর হতে চেয়েছিল।।

২.

অতটুকু চায়নি বালিকা!
অত শোভা, অত স্বাধীনতা!
চেয়েছিল আরো কিছু কম,

আয়নার দাঁড়ে দেহ মেলে দিয়ে
বসে থাকা সবটা দুপুর, চেয়েছিল
মা বকুক, বাবা তার বেদনা দেখুক!

অতটুকু চায়নি বালিকা!
অত হৈ রৈ লোক, অত ভীড়, অত সমাগম!
চেয়েছিল আরো কিছু কম!

একটি জলের খনি
তাকে দিক তৃষ্ণা এখনি, চেয়েছিল

একটি পুরুষ তাকে বলুক রমণী!

৩.

কখনোই কবিতাখোর ছিলাম না! বরং ছন্দে মেলানো সরসরে ছড়া পড়তেই ভালো লাগে বেশি। তবুও, হঠাৎ অছন্দিত দুয়েকটি কবিতা খুব বেশি ভালো লেগে যায়! একসঙ্গে সংরক্ষণের তাগিদে শেয়ার করলাম।



প্রথমটির রচয়িতা নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।

শিরোনাম ‘অমলকান্তি’।

দ্বিতীয়টির আবুল হাসান।

'নিঃসঙ্গতা'।

অবিন্যস্ত পত্র-১


জানো বুবু? এখন এখানে কয়টা বাজে?
রাত দু'টো বত্রিশ
আকাশে অনেক তারা
চাঁদও ঝুলেছে পাশে
চোখে ঘুম
শরীরে ক্লান্তি
স্মৃতিকোষে ধূলোর আস্তর।
তবুও ঘুমাতে ইচ্ছা করছেনা
রাত জাগার আনন্দ
কাল সকালে অফিস
"ন'টায় অফিস যাবার তাড়া
মাথার চুলগুলো সব খাড়া"
আজ যেমন ছিলো
যদিও আজ বিলম্ব ছিলো
ইচ্ছে করেই
মাঝে মাঝেই
এমনিতেই
অফিসে দেরীতে ঢুকি
জীবনের জন্য চাকরী
চাকরীর জন্য জীবন নয়!
এটি বিশ্বাস করি এখনও
জানিনা কতদিন পারবো
প্রতিটি মানুষই অন্যরকম
আমি না হয় তাই ভিন্ন!

ফুলটাকে আমার দারুণ
পছন্দ হলো
একরকমের গ্লাডিওলাস?
হতে পারে
গুগুল মামা যখন দু'হাত ভরে দেয়
শুধু আবদার করতে হয়!
যা হয়ে যা!
হয়ে যায়!

কী লিখি!
আর
ভালো থেকো।
সঙ্গে থেকো, বুবু।
সত্যিকারেই!


তবে তাই হোক!

“ছোট ছোট সুখের
শ্যাওলা দিয়ে ঢাকি
কষ্টের বিশাল দেয়াল।”

বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০০৯

পথিক

যেই জন চলে যায়
সময় সিন্ধুর বুকে তার অন্তর্ধান
নিতান্ত রুটিন মাত্র যে যাবে সে যাবে
জন্ম মানে মৃত্যুদণ্ড
আজ কাল কিংবা পরে কার্যকর হবে
বন্ধুর মৃত্যুর জন্য শোক কেন তবে!

-------------------------------------
আহমেদ ছফা
-------------------------------------
বন্ধু অধ্যাপক নরেন বিশ্বাসের প্রয়ানপীড়িত ছফা এই কবিতা-টি লিখেছিলেন, সেদিনই। এটি এতটা-ই ছুঁয়ে গেলো যে, সংকলনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম!
-------------------------------------
তথ্যসুত্রঃ http://arts.bdnews24.com/?p=2485

হাসতে হাসতে মরে গেলাম!

১.

এই ব্লগে ‘হা হা প গে’ নামে একটা টার্ম প্রচলিত যার অর্থ কম বেশি হয়তো সবারই জানা! আরও আছে এ ধরণের। যেমন, “হা হা পে ...” ইয়ে আর কি! আচ্ছা? হাসতে হাসতে মরে গেলাম। নেই? আছে। বাস্তবেও আছে। নেটে খোঁচাখুঁচি করেও তা পেলাম।

২.

প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক ক্রায়সিপাস খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে তার গাধাকে ওয়াইন খেতে দেন এবং মাতলামোর ফলশ্রুতিতে সেটি-কে ডুমুর খেতে দেখে হাসতে হাসতে মারা যান! :-/

আরাগনের প্রথম মার্টিন বদহজম ও অনিয়ন্ত্রিত হাসির কারণে মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনা খ্রিস্টাব্দ ১৪১০ এর। :|

পিয়েট্রো আরেটিনো ১৫৫৬ সালে দেহ রাখেন। কারণ, বেশি হাসতে গিয়ে তার দম বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো।

বার্মার রাজা নন্দ বায়িন ১৫৯৯ সালে ইতালীর এক সওদাগরের কাছ থেকে একটা অদ্ভুত খবর শুনে হাসতে হাসতে মারা যান! খবরটা ছিলো, “ভেনিস একটা স্বাধীন রাস্ট্র, আর সেখান কোন রাজা নেই!” :-*

দ্বিতীয় চার্লস এর সিংহাসন আরোহনের খবর পেয়ে স্কটিশ অভিজাত টমাস আরকুহার্ট হাসতে হাসতেই ইহলীলা সাঙ্গ করেন!

আগের লোকজন নিদারুণ বোকা ছিলো? তাই না?

এ যুগেও পিছিয়ে নেই! দেখা যাক।

১৯৭৫ সালে আলেক্স মিচেল জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল দেখে টানা ২৫ মিনিট হেসে অক্কা পান!

১৯৮৯ সালে ডেনমার্কের ওলে বেন্‌টজেন এর ‘আ ফিস কল্ড ওয়ান্ডা’ দেখতে গিয়ে হার্ট এটাক হয়। এ সময় তার হার্টবিট পৌছে প্রতি মিনিটে ২৫০ থেকে ৫০০! /:)

কে জানে আরও আছে হয়তো উদাহরণ। এত অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়লাম! /:)

(এখানে ব্যবহৃত সকল তথ্যসুত্র উইকিপিডিয়া’র। অন্যগুলো ব্যবহারের ধৈর্য হলোনা! )

৩.

ইদানীং কেন জানি মৃত্যু নিয়ে বেশ পড়াশুনা করতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু সময় পাচ্ছিনা।

"জীবন আমার এত ভালবাসি বলে, হয়েছে প্রত্যয় ... মৃত্যুরে এমনি ভালবাসিব নিশ্চয়!" - - - - কবিগুরু


৪.
একটা অদ্ভুত ছবি পেলাম নেটে। দেখতে পারেন- (দূর্বল হৃদয়ের না হলে)

http://en.wikipedia.org/wiki/Thich_Quang_Duc

১৯৬৩ সালে ভিয়েতনাম সরকার কর্তৃক প্রিস্টদের উপর দমননীতি’র প্রতিবাদে তিনি স্বেচ্ছায় আগুনে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। শোনা যায়, সেই সময় উনি একটুও নড়েন নি বা কোন শব্দও করেন নি! :|

৫.
ছোটবেলায় নিজ দায়িত্বে মুখস্ত করা একটি ছড়া--

“সেজ মামী এসে বলে
শোনরে অটল,
কাল রাতে মামা তোর
তুলেছে পটল।

অটু বলে, তার তরে
কাঁদো কেন মামী?
দাও গিয়ে বাজারেতে
বেচে আসি আমি।

বুঝিনা পটল কেন
তোলে মামা রাতে,
সাপ খোপ কামড়িয়ে
দিতে পারে হাতে!”

ছড়াটি কার মনে নেই! :((

৬.

তবুও, বাঁচতে হলে হাসতে হবে!

শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০০৯

আকবরীয় ইশটাইল

১.
সম্রাট আকবর নাকি সাধারণ মানুষের বেশে মাঝে মাঝে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াতেন।

বাজারে একবার এক সবজিওয়ালার সঙ্গে দেখা হলো তার। দারুণ খাতিরও হলো গল্পে গল্পে। সবজিওয়ালা তাকে জিজ্ঞাসা করলো, “পেটের ভাত খোরাকির জন্য কী করা হয়?”

আচমকা প্রশ্নে তিনি পড়লেন ফাঁপড়ে! B:-) কিন্তু তার মাথায় বুদ্ধি ‘হ্যাড’! মাথায় বুদ্ধি না থাকলে কী আর এত্তো বড় ভারতবর্ষ চালানো যায়?
বললেন, “আমি সম্রাট আকবরের তাজ এর রক্ষক!” :-0

সবজিওয়ালা ছদ্মবেশি আকবরের সৌভাগ্যে দারূণ খুশি হলেন, “বাহ, তোমার চাকরী তো খুব ভালো! সম্রাটের কাছাকাছি থাকতে পারো!”

২.
য়্যুনিভার্সিটির ‘বিগ’ ব্রাদারকে নিয়ে ‘বিগার’ ব্রাদার এর বাসায় গিয়েছিলাম বিশেষ কাজে। বিষমবয়সী এক অসাধারণ আড্ডা হলো সেখানে। :)

‘বিগার’ একফাঁকে ‘বিগ’-কে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার বাসার কী অবস্থা?”

তড়িৎ জবাব দিই আমিই। “উনি বিয়ে উপলক্ষ্যে বাসা পরিবর্তন করতে যাচ্ছেন আগামী মাসে!” " style="border: 0pt none ;" width="23" height="22">

‘বিগার’ তার পিঠ চাপড়ে অভিনন্দন জানান, “এই কথা এতো দেরিতে বললে? মেয়ে কি করে? কবে, কোথায়, কী ভাবে হলো সবকিছু?”

‘বিগ’ এর মুখে রা কাড়ে না! কোনমতে আমাকে দেখিয়ে বলেন, “এইটারে ধরে পিটানি লাগান, খালি মিথ্যা বলে!” X(

আমি আত্মপক্ষ সমর্থন করি, “আরে, ছেলের বিয়ে উপলক্ষ্যে উনার বাড়িওয়ালা ফ্লাট নিজের জন্য নিচ্ছেন। তাই ‘বিগ’রা বাসা পরিবর্তন করছেন। এতে ভুল কী বললাম?”

৩.
যোগাযোগ মন্ত্রী বলেছেন, কাঁচপুর ব্রিজে কোন জ্যাম পড়েনা। তিনি নিজে দেখেছেন।

যেকোন সরকারের আমলেই ‘মন্ত্রী’ কোন পথ দিয়ে যাবার আগেই পুলিশ রাস্তা সাফ-সুতরো করে দেয়। ম্যাংগো পাবলিক সেখানে এমনিতেই কমে আসে! :|

৪.
ছোটবেলার একটা মজার ছড়া শেখা ছিলো,
“মিথ্যা বলা মহাপাপ
বইলা গেছে অমিতাভ!”

সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০০৯

“আমার বিয়াত না আইলে ভাবুম, তুমি আমার প্রতি দূর্বল ছিলা!”

মরশুম খারাপ। বয়স খারাপ। চিনাজানা আশেপাশের পুলাপান খালি বিয়া করতেছে! :(( (প্রত্যেকে কিন্তু একটা কইরাই করতেছে, আবার ভুল ধইরেন না।) প্রতিমাসেই একাধিক বিয়ার দাওয়াত। বিয়া জিনিসটা খারাপ না। খারাপ হইলো সেইখানে গিয়া আমার কুনো কাজকাম থাকেনা, এইটা আগেই কইছি। গিফট কিনতে ম্যালা হ্যাপা পোহাইতে হই। কমদামী না বেশি দামী হইলো? নিজের পকেটের সংগে সঙ্গতি পাইলো কিনা! ম্যালা কনসিডারেশনস। /:) তাই, পারলে বিচিত্র দোহাই দিয়া পিছাইয়া যাই! নামাযে বইসা দুআফাই কইরা দিই। অশেষ নেকি হাসিল হয়! B-)

কিন্তু সবসময় এক দাওয়াই কামে লাগেনা।

মেলাদিন বান্ধবীরে ফুনাইনাই। কাল দুপুরে ফুনাইলাম। ফুন ধইরাই কইলো, “তোমার লগে আমার জরুরী বাতচিত আছে!” :-*
টাশকিত হইলাম! কইলাম, “কী?”
“ধানমন্ডি ২৭ আসতে পারবা? জরুরী কাজ আছে!”, তাড়াতাড়ি কইয়া ফেললো!

খাওয়াইবো মনে হয়! কিন্তু আমার আইজকা রাতে গুরুত্বপূর্ণ কামআছে! একখান ডিজাইন কম্লিট করন লাগবো! টাইম নাই! কইলাম, “কও কী কাজ? মোবাইলে কইরা দেওন যায় কিনা। কুনো ব্যাপারে ইনফু লাগবো?”
“উঁহু! আসতেই হইবে”!
“ক্যালা?”
“আমার বিয়া! তুমারে কার্ড দিমু! কী খুশি!” :D
“ওহ! এই কথা? আর-রে মিয়া তুমি ডিজিটাল যুগে এনালগ হইয়াই থাকলা। ইমেইলে কার্ডের ছবি পাঠায়া দিও! আর, আমি গর্দভ ফুন কইরা তুমার বিয়ার দাওয়াত নিতাছি? এইডা হইবোনা। রাতে নিজে ফুন দিয়া আবার দাওয়াত দিবা!” আমি বাগড়া দিই!
“ওক্কে, বস রাইতে ফুনামুনে!” :)

রাইতে ফুন আইলো! কেতাবী ভাষায় অর্ডার দিলো, “আমার বিয়া। আইবা!”

ম্যালা ভুজুং-ভাজুং দিলাম। ম্যালা কাজ। ম্যালা প্রব্লেম! আইতে পারুমনা!

শেষকালে মোক্ষম অস্ত্র ছাড়লো সে! “আসছে শুক্কুরবার, আমার বিয়াত না আইলে ভাবুম, তুমি আমার প্রতি দূর্বল ছিলা! ছ্যাঁকা খাইছো! সবাইরে কইয়া দিমু!”:-/

এইবার কী করি? মাফ চাই, দু’আ-ও চাই! :((

মাথাও চুলকাই! কুনো বুদ্ধি দিতে পারেন? কী গিফট কিনুম?

অর্ধ-প্রাসঙ্গিক কাহানী: আগের অফিসের মালিক মাইনে প্রেসিডেন্টের বউ ছিলো কুম্পানীর সিইও! তাই বিয়েত্তা ভাইগো খেপাইতাম, “ভাই, আপনের সিইও কেমতে আছে?”

এই বান্ধবী পাশ কইরা দুস্তের কুম্পানীতে সিইও হিসাবে জয়েন দিছিলো একখানে। তারেও খেপাইছিলাম!

কিন্তু, বিয়া নাকি সেই মালিক-কাম-দুস্তের লগে!?

তাই ভাবতাছি, টিয়া পাখি আর লাল-সুতা নিয়া সুলেমানি পাথ্‌থরের বিজনিসে নামুম নাকি? কওয়া ভবিষ্যৎ তো 'ঝড়ে বক মারা ফকিরের' মত লাইগা যায়!!

হক মৌলা! :P

(পরিবর্ধিত অংশঃ ২২ নম্বরে রোবোট ভাইয়ের কমেন্টের পরিপ্রেক্ষিতে! )

তয় আমি তারে কী কইছিলাম সেইটা মূল ব্লগে পরথমে দেইনাই।

কইছিলাম, "ম্যালা লুকই তো তুমার বিয়াত আইবোনা! তাইলে সব্বাইরে তুমি ছ্যাকা দিছো! ছি ছি ছি, তুমি এত খারাপ! এত্তো পুরুষের সঙ্গে তুমার সম্পর্ক! "

এইবার তার মাপ চাওনের পালা! হে হে হে!
শেষ কথাঃ তার বিয়াত আমি যাইতে পারিনাই। সে আমারে দূর্বল করিতে না পারিলেও, আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর! টানা ৪ জ্বরে ভুগিয়া শয্যাশায়ী হইয়াই গুজরান করিয়াছি সেই দিন! :|


[অনটেস্টঃ ব্লগীয় ইয়ো বাতচিতে প্রথুম পুস্ট!] :|

শুক্রবার, ২ অক্টোবর, ২০০৯

টনক

সন্ধ্যাবেলায় মায়ের সাথে গল্প করছিলাম। সাম্প্রতিক পড়া বা শোনা কোন হালকা চালের গল্প কিংবা অন্য কোন চমকপ্রদ ঘটনার সাথে মায়ের ঘর গেরস্থালীর ‘সাজানো-গোছানো’ গল্পগুলো বেশ ভালোই মিশ খায়। বরাবর যেটা করি, কৌতুকপূর্ণ কাহিনীর প্রাধান্য টানি আড্ডায়। সবধরণের শ্রোতার হাসি সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে হয়। :) ক্ষেপাতেও মন্দ লাগেনা। :P ‘সর্দারজী’ আমার বেশ প্রিয়। আজও ঘোর লাগা সন্ধ্যায় তাকেই স্মরণ করছিলাম। প্রচলিত একটি ম্যাগাজিনের ঈদ সংখ্যায় তাকে নিয়ে বেশ কয়েকটি কৌতুকপূর্ণ গল্প ছাপা হয়েছে।

মানুষের ‘মৃত্যু’ বা বড় ধরণের কোন ‘ক্ষতি’ সংক্রান্ত কৌতুকগুলোকে বলে ‘সিক জোকস’। গভীর হিউমারে পরিপূর্ণ সেরকম-ই একটা আওড়াই,

জাহাজ ডুবছে। যাত্রীরা সব ছোটাছুটি করছে, কাঁদছে, চিৎকার করছে, স্রষ্টার নাম নিচ্ছে।

এমন সময়, নিস্পৃহভাবে সর্দারজীকে বাদাম চিবুতে দেখে এই ইউরোপিয়ান যাত্রী তাকে জিজ্ঞাসা করলো, “এখান থেকে মাটি কতদূর?”

সর্দারজী বললেন, “দুইমাইল”।

ইউরোপিয়ান অবাক হয়ে বললেন, “মাত্র দু’মাইল? তার জন্য এত হইচই কেন? দু’মাইল তো সাঁতরেও যাওয়া যায়। যতসব আহাম্মক ভ্রমণকারী! আমি তো টানা পাঁচ মাইল সাঁতার কেটেছি।”

সর্দারজী বললেন, “তাহলে তো কথাই নেই।”

সর্দারজী বাদাম হাতে করে রেলিং পর্যন্ত গেলেন। আর সাঁতারু ডাইভ দিলেন মহাসাগরে।

একডুব দিয়ে তার মনে হলো, ডিরেকশনটা তো নেয়া হয়নি। তিনি চেঁচিয়ে সর্দারজীকে জিজ্ঞেস করলেন, “দু’মাইল এখান থেকে কোনদিকে?”

নির্বিকার সর্দারজী বললেন, “নিচের দিকে!”


মা’দের মন নরম। হেসে ওঠার পাশাপাশি তলিয়ে যাওয়া মানুষের জন্য মন খারাপ করে ফেলে। অথচ, আমরা আধুনিক মানুষেরা এ সবে মজা পাই! ইউটিউব থেকে ডাউনলোড করা মানবমৃত্যুর ‘লাইভ’ দৃশ্য ‘উপভোগ’ করি। শরীরের বেশিরভাগ অংশ উড়ে যাওয়া আত্মঘাতি মানুষটির বিভৎস ছবি দেখে ‘পুলকিত’ হই। মৌখিক স্বীকারোক্তি-তে অসম্ভব রকমের দ্বিধা থাকলেও, এক ধরণের অনির্বচনীয় আনন্দ উপভোগ করি প্রায় সবাই। খবরের কাগজের প্রধান শিরোনামে ‘এইগুলো’ বড় ‘ফন্ট’ পায়। সংবাদপাঠক এগুলোকেই সবার আগে বলে। চাহিদা আর যোগান এর মহাজাগতিক সম্পর্কটা যেন সবাই জানে!

“মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে, কেউ এমন শান্তভাবে কথা বলতে পারে?” মা কৌতুকটার ব্যবচ্ছেদ করে।

কে যেন বলেছিলো, “রসিকতা হলো সিরিয়াস কিছু বলার সবচেয়ে ভালো উপায়!” কৌতুকের কাটাছেঁড়ায় তাই বেরিয়ে পড়ে অনেক সময় অদ্ভুত সব সত্য!

“পারে তো,” – আমি বলি, “আমরা নিজেরা-ই তো তাই ...”

“মানে কী?”... মা আমার কথা বিশ্বাস করতে পারেনা।

“এই যে, ভূমিকম্পের ভয়াবহ আশঙ্কার মুখে দাঁড়িয়েও আমরা নির্বিকার রয়েছি। আড্ডা দিচ্ছি। একটা কৌতুকও বললাম তোমাকে। তুমিও হাসলে...” আমার দুইপয়সার তত্ত্বকথার ঝনঝনানি ভালোই বাজে।

মা অবাক হয়েও, আমার কথা মেনে নেয়!


ভূমিকম্পে সব নড়ে। বাড়ি-ঘর-গাড়ি-রাস্তা সব নড়ে। এমনকি পুকুরও নড়ে!

নড়েনা শুধু আমাদের ‘টনক’!


স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরোধ ও দূর্যোগ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা নিয়ে তেমন কোন গা নেই কারও। আমারও।



পুনশ্চঃ

১. আমাদের দেশের পটভূমিতে, ভূমিকম্প ও তার ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি স্বাস্থকর আলোচনা আছে এখানে।
http://www.sachalayatan.com/tanveer/17193

২. অভিধান না দেখে বলুন তো, ‘টনক’ মানে কী?

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

উল্টা ভাবনা

আস্তে আস্তে মানসিক রোগীতে পরিনত হচ্ছিনা তো?

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

আজকের ফেসবুক স্ট্যাটাস

"শরৎ আসে যায়, মেঘের ফাকে নীল ... এই শহরটায় অতিথী গাঙচিল"

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

কর্মবিরতির ঈদ (~শুভেচ্ছা-সহ~)

নিজেদের ‘অতিমানব’ মতান্তরে ‘অমানুষ’ প্রমাণ করতেই বোধহয় টানা ১৯ দিন অফিস করতে হলো, শুক্রবার সহ! উদ্দেশ্য খুব সরল সোজা। ঈদের সময় টানা বাড়তি সময়ের ছুটির ‘বোঝা’ টানা। ছুটি এখন একটা ‘বোঝা’ বটে! লম্বা ছুটি পেলে কর্মজীবীদের বেশির ভাগেরই নাকি এ রকম মনে হয়! কার্যদিবসের একরাশ বিরক্তি, ক্লান্তি আর অধৈর্যের লাগাম ছিঁড়ে যখন আমার কলিগ তথা বন্ধু আরিফ যখন অজান্তেই জোর গলায় হামদ খানি গেয়ে ওঠে, “দে পানাহ দে, ইয়া ইলাহি!” – সেটি ধর্মীয় গুণাগুণ গৌণ হয়ে যায়! ছেলেটা খাটাখাটনি করতে পারে খুব। ব্যবস্থাপক ও মালিক মহলে ওর প্রশস্তি চুঁইয়ে পড়ে অন্যদের স্বাভাবিক কাজের নিপূণতার উপরও – “আরিফের মত হও।” অফিসের সারাটা সময়ের পর বাসায় ফিরে নিজের ইচ্ছায় রাত তিনটা পর্যন্ত অফিসের কাজ করে আবার সকাল নয়টায় অফিসে ফেরে। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও চরম উদাসীন। ‘বাসায় ফেরা’র চেয়ে ‘অফিসে ফেরা’র প্রবাদটাই বেশি ভালো খাটে ওর জন্য। ছেলেটা প্রাণবন্ত, খুবই বন্ধুবৎসল আর পরোপকারী। সবাই ওকে পছন্দ করি। তাই প্রায়ই ওকে বলি, “দোস্ত, নিজের যত্ন নে!” হেসে বলে, কাজ করতে ভালো লাগে, নেশার মত লাগে। ঈদের আগের সপ্তাহে, একদিন সকালে মুখটা দেখেই ওর শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করতে পারি, “কী হইছে? শরীর খুব খারাপ?” বরাবরের মতই হেসে জবাব দেয়, “পেটে ব্যাথা, সেহরীর পর কয়েকবার বমি করছি!”

“তাইলে অফিসে আইছিস কেন? বাসায় যা, ঘুমা।” নিজের যত্ন নেবার কথা আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিই।

“এই ডিজাইনটা আজকেই দিতে হবে। স্যার কইছে।” ও আত্মরক্ষা করে।

“যা ভাগ। ” মেজাজ খারাপটা চরমে ওঠে।

একটু পরেই শরীর খুব খারাপ করছে বলে ও বাসায় ফিরে যায়। ব্যাচেলর মানুষ। এটাকে বাসা না বলে মেস বাড়ি বলা-ই উত্তম। সবাই অফিসে থাকায় দিনের বেলা ফাঁকা পড়ে থাকে। মেডিক্যাল পরিভাষায় কী বলে জানিনা, আমরা আমজনতা যেটা জানি, বিকালে খবর পাই, অবহেলায় ওর ‘এপেন্ডিসাইটিস ব্লাস্ট’ করেছে! এমনিতে ‘এপেন্ডিসাইটিস’ এর ব্যাথা নিরাময় ছোট্ট একটা অপারেশনের মাধ্যমেই করা যায়। কিন্তু সেটি ব্লাস্ট করলে তার ফলাফল মারাত্বক হয়ে উঠতে পারে। এমনকি মৃত্যুও!

নাহ, ও মরেনি। প্রতিদিন এত বেশি মানুষ অপঘাতে মরে যে, এখন এসবে আর গায়ের একটা লোমও উন্থিত হয়না। আর, এক্ষেত্রে? ও তো মরেইনি। যদিও অন্ত্র, ফুসফুস আর কিডনীর ভয়াবহ জটিলতার আশঙ্কা নিয়ে হাসপাতালের বেডে ‘কর্মহীন’ সময় কাটাচ্ছে!

ঈদ-টা এবার হাসপাতালেই কাটবে ওর! অফিসের ম্যানেজমেন্ট উপদেশ দিয়েছে, অবস্থা বেশি খারাপ হলে ব্যাঙ্কক নিয়ে যেতে। খরচটা অবশ্য আরিফ-কেই বহন করতে হবে!

*** বাঙ্গালী অলস বলে তার দূর্নাম রয়েছে, প্রমাণ-ও যথেচ্ছ দেয়া যায় হয়তো। কিন্তু, আমাদের মধ্যেও এরকম ‘কাজপাগলা’ লোক আছে। নিজেদের উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পূঙ্খানুপুঙ্খ পালন করাই এক অর্থে মানবিকতা। সঠিক পথে চলা। কিন্তু নিজের উপর বাড়তি চাপ দিয়ে অসুস্থতা ডেকে আনা তো মারাত্বক ক্ষতির কারণ তো বটেই। সুদুরপ্রসারী ভাবনায়, ক্ষতিটা অফিসেরও, সমাজেরও। তাই, নিজের ও নিজেদের নিরাপত্তা-ই সবচে’ আগে!

****


‘দাড়ি স্বাধীনতায়’ বিশ্বাসী হয়ে অফিস ডিকোরামের থোড়াই কেয়ার করে রোজার শুরু থেকে কয়েকদিন ইচ্ছেমত চললাম! সবার মধ্যে ইতিউতি- তালেবান না দেবদাস? সবাইকেই নিরাশ করি। আসল কথা হলো, শাওয়ার রুমের আর্দ্র পরিবেশের একঘেয়ে পরিবেশে থাকা শেভিং ফোমের ক্যানে মরিচা-বিদ্রোহে সব চুঁইয়ে পড়ে শেষ! আলসের একশেষ আমি। নতুন কেনা হয়নি।
বিকালে তাই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম- 'ঈদ' !!! ~ শেভিং ফোম নাই - স্যান্ডেল ছিঁড়ে গেছে - মোবাইলের ব্যালান্স তলানীতে- বিকাল সাড়ে তিনটায় ঘুম ভেঙ্গে... এবার একটু গা ঝাড়া দিয়ে ওঠা যাক!-- 'মোবারক' সাহেব কই?

গা ঝাড়া দিয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি, পাকাচুলো মুরুব্বীরা-ও সালাম দেয় আমাকে দেখে। বুঝলাম, মুন্ডনকাল সমাগত! দলাই-মলাইয়ের ও!

হ্যাপি ঈদ!

হ্যাপি ব্লগিং!

শুক্রবার, ২৮ আগস্ট, ২০০৯

শিষ্টতার গল্প

সকাল থেকে চলে আসা শিক্ষায় দান-গ্রহণের পর গুরু-শিষ্য দু’জনেই ক্লান্ত। ঘরের বাইরে বেরিয়েই গনগনে রোদ মাথার উপর। গাছের ছায়া বসে গুরুর ইচ্ছা জাগে ডাবের পানি পান করবার।

- বাবা, আমি তৃষ্ণার্ত। তুমি গাছে উঠে আমার জন্য ডাব পেড়ে আনো।
- গুরু, আমার বেয়াদবী মাফ করবেন। এটা আমি করতে পারবো না।
- আমার আদেশ পালনে তোমার বেয়াদবী কোথায়?
- গাছে ঊঠলে আমি উপরে আর আপনি নিচে থাকবেন। গুরুর উপরে শিষ্য থাকবে, এটা হতেই পারেনা। নির্ভেজাল বেয়াদবী!
- তাই? ঠিক আছে, গাছে আমিই উঠছি। তুমি বাড়ির ভেতর থেকে একটা দা নিয়ে এসো।

গুরু গাছ থেকে ডাব পেড়ে আনলেন। ইতোমধ্যে শিষ্য দা নিয়ে হাজির।

- নাও, এবার ডাবগুলো কেটে ফেলো।
- গুরু, এতো বেয়াদবী আমাকে দিয়ে হবেনা!
- মানে? এতে আবার বেয়াদবী কিসের?
- আপনার সামনে ‘কোপাকুপি’ করাটা কী ঠিক?
- আচ্ছা, ঠিক আছে। আমিই কাটছি।

আপ্রাণ কসরত করে ডাব কেটে, নিজে একটা নিয়ে, শিষ্যের দিকে আরেকটি ডাব এগিয়ে দিলেন গুরু।

- নাও, খাও।
- আদেশ না মেনে আপনার সঙ্গে আজ অনেক বেয়াদবী করছি। আর বেয়াদবী করবোনা। এখুনি খেয়ে নিচ্ছি।

ঢক! ঢক!! ঢক!!! :D

সোমবার, ১৭ আগস্ট, ২০০৯

ফাটকাবাজির অণু-কথোপকথন...

ক’দিন আগের মোহাম্মদপুর। সারারাতের বৃষ্টিবিধৌত সকাল। অফিসে যাওয়ার জোর প্রস্তুতির সময়ে রাস্তায়।

-- এই সিএনজিওয়ালা ভাই, যাবা?
-- কই?
-- বনানী।
-- যামুনা।
-- ক্যান?
-- ঐ দিক পানি উঠছে। ইঞ্জিন নষ্ট হইয়া যাইবো।
-- আরে চলো। বাড়ায়া দিমুনে।
-- তাইলে ২৫০ টাকা দিয়েন।
-- ঠিকাছে। তবে এতোক্ষণে পানি নাইম্যা যাবার কথা। ওইখানে যাইয়া যদি দেখি পানি নাইমা গেছে, তাইল কত নিবা?
-- তাইলে যামুনা!

:-&

শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০০৯

অতঃপর ... আবারও বি.সি.এস এর শামুক!

সরকারী বিজ্ঞান কলেজ এক আজব জায়গা। অন্ততঃ পরীক্ষার কেন্দ্র হিসাবে! বিগত ২৮-তম এর লিখিত’র সিটপ্ল্যান অনুযায়ী রুমে প্রবেশ মাত্রই চোখের সামনে সাদা ইউনিফর্ম বিস্ফোরণে মূর্ছা যাই। এইচ.এস.সি এর কচিকাঁচারা আগে থেকেই ওখানে বসে! একই জায়গায় ওদের সিট! ওরা আমাদের কোলে বসে একসঙ্গেই পরীক্ষা দেবে কিনা, কর্তৃপক্ষের এ আয়োজনের ভাবনাও মনে এলো! :-/

সারা কলেজ দৌড়ে, কোথাও ‘তাল’ ধারণের জায়গা না পেয়ে অবশেষে এক স্যারকে বলি, “মহামহিম! দয়াপরবশ হউন, আপনার কামরায় এই অধমের স্থান সংকুলান করুন!” তিনি ইচ্ছে করলেন- কৃতার্থ হলাম।

বিজ্ঞানের ন্যাড়া বলেই কি বিজ্ঞান কলেজের বেলতলায় যেতে হবে বারেবার? কে জানে! দেশে এত মতবাদ, এত দল-উপদল- খালি প্রভেদ-বিভেদ! সিটপ্ল্যানেও জোড় বিজ়োড়ের দেশভাগ! বিশ্বদরবারে নিজ স্থান খুঁজে পাওয়া দায় আবারো! রাখিস মা আমারে রসে বশে!

পরীক্ষার হলে অসদুপায় অবলম্বন ভালো কথা নয়! পাশের জনকে বাজাইলাম, সাহায্য পাবার সুযোগ পেতে পারি কী? ভদ্রমহিলা কৃষিবিদ। বললেন, ‘সৎ’ ভাবে সাহায্য করলে তো ভালোই!

সদ্য ব্রাশ করা ভাঙ্গা দাঁত দেখিয়ে দিই- হক কথা! 'সৎ' ভাবে অসদুপায়ের দোষত্রুটি ক্ষমার্হ! :P

প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েই মন খারাপ! X( অন্তত ৭৫ না পেলে এই পরীক্ষায় আশার গুড়ে কিং ব্রান্ড সিমেন্ট! এত্তো সহজ! ইউনিভার্সিটির দুঃসহ স্মৃতি মনে পড়ে যায় এক লহমায়! বিভিন্ন কুইজে প্রশ্ন সহজ হলে, মন বাজাতো কৃষ্ণের বিরহী বাঁশি--- সহজ কিংবা কঠিন- কিছুই তো পারিনা। বরং, প্রশ্নের কঠিন দাওয়াই এলে বেশ ভালো লাগে- অন্তত আমার মত ‘না-পারা’র দলটা একটু ভারী হয়ে ওঠে বৈকি! ১০০ কেজি ‘অপমান’ তখন ৩ জনের ভিতর ভাগ না হয়ে ১৫ জনের উপর পড়ে! গায়ে ওটার ‘চাপ’ কম লাগে!

রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, আনন্দের সাথে শিক্ষালাভ করতে! পরীক্ষার খাতায় নিজের পরিচয় দেখলে কার না আনন্দ লাগে! :D

প্রশ্ন ৪৩ : ‘জনৈক’ শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ -

(ক) জন+ইক
(খ) জন+ এক
(গ) জনৈ+এক
(ঘ) জন+ঈক

কেউ কোন দিন আমাকে কিছু উৎসর্গ করলোনা। ‘পিএসসি’ই বুঝলো আমারে! আহা!

“এতো সুখ সইবো কেমন করে-
সুখেও কান্না আসে দু’চোখ ভরে!” :((

পুনশ্চঃ পুরো ‘বিসিএস’ নিয়োগ কার্যক্রম এমনই শ্লথগতির যে, ‘শামুক’ ও এ ব্যাপারে লজ্জা পেতে পারে!

বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০০৯

গ্রেট কম্বিনেশন, (নো) কনফিউশন!

গ্রেট কম্বিনেশন অংশঃ



দু’দিন ধরেই অফিসে একটা অদ্ভুত কম্বিনেশনের নাস্তা দেয়া হচ্ছে বিকেলে। মোসুমী ফলের সুযোগ্য প্রতিনিধি আমের সঙ্গে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মুড়ি! দু’টোই একইবাটিতে আসে। মুড়ির উপর কাটা আমের টুকরোগুলো ভাসতে থাকে যেন যেন কনক্রিট মিক্সারের উপর কতক খোয়া!

সেটিও না হয় মেনে নেয়া গেলো। তাই বলে মুড়ি খাবার জন্য ‘আন্তর্জাতিক’ কাঁটাচামচ? স্ট্যাটাস মেইনটেইন কেস? :-*

সবজায়গাতেই কী একই অবস্থা?

আগের অফিসটাতে প্রায়ই খোরাকি হিসাবে আসতো ডিম সিদ্ধ উইথ বম্বে চানাচুর! X(




(নো) কনফিউশন অংশঃ

পাঁচ-পঞ্চাশ মানে আসলে কত?/:)

দু’দিন আগেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপডেট দিয়েছিলাম। নানা ব্যাটসম্যানের নানারকম স্টাইল থুক্কু নানা মুনির নানা মত! জবাব গুলো শোনা যাক....

ক. ৫৫
খ. ৫৫০
গ. ২৫০ (৫০X৫=২৫০)
ঘ. ৫০৫০৫০৫০৫০ (এক ‘শ্রদ্ধেয়া’ এই জবাবটি দিয়েছেন। লজিকের খাতিরে এটিও রাখতে হলো!)

নিশ্চয় এতক্ষণে মনস্থির করে ফেলেছেন? তাহলে একটু অনুবাদক হওয়া যাক।



এবার বলুন, পাঁচ-পঞ্চাশ অর্থাৎ Five-Fifty মানে কত?

স্যাম্পল

চেহারা সুরতে তেমন একটা মনোহারী নই। গড়পড়তার চেয়েও বেশ খানেকটা নিচে! কিম্ভুতকিমাকার বললেও মানিয়ে যায়! ভাগ্যিস, বাংলা সিনেমার কোন ‘বিশিষ্ট’ পরিচালকের সামনে কখনও পড়িনি! তাহলে, একালের ভিলেনেরা বেকার হয়ে পড়তো! কী দরকার অন্য কারো পেটে লাথি দেবার! :P ভারী অন্যায়, ভারী অন্যায়!!

তবে, পৃথিবীর সব মা’এর চোখেই তার সন্তান সবচেয়ে সুদর্শন! তার কথা তাই কখনও মেনে নিই। কখনও আপত্তি করি! মায়ের চোখে ছানি পড়েছিলো। অপারেশন করিয়েছি। মা এখন দুনিয়াটাকে দেখে একেবারে তকতকে পরিষ্কার। “বাবা, তোর চেহারাটা এমন মলিন লাগছে কেন?”

জবাবে শুধু হেসে উঠি! মুচকি হাসি। সময়ে সময়ে একই প্রশ্নে হাসির দমক ফোটে আমার মুখে-চোখে।

মনে পড়ে, ইউনিভার্সিটিতে বন্ধুদের চোখ ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মন ফোটারও মৌসুম এলো। একবন্ধু সারারাত একমেয়ের সঙ্গে কথা বলতো। যেটিকে বুয়েটিয় পরিভাষায় বলে, ‘ফোন ফাইট’! কিন্তু, দেখা করার ব্যাপারে চিরন্তন গড়িমসী তার।

“কারণ কী, ভ্রাতা?” সপ্রশ্ন দৃষ্টি দেই ওর দিকে।
“জানিনা”।এরপর, একটু ভেবে, “যদি আমাকে পছন্দ না করে?”
“ঠিক আছে, আমি সঙ্গে যাবো! আমার পাশে যে থাকবে তাকেই সুন্দর লাগবে! তবে আমাকে কিন্তু খাওয়াতে হবে!” :)


এবং খাবারটা সুস্বাদু ছিলো!

এটাকেই বুঝি ফেসভ্যালু বলে!? B-)

আরেক বন্ধুর অনেক দিনের ‘ইটিশ-পিটিশ’! প্রায় এক হালি বছর ‘ওয়ার্ম-আপ’ ম্যাচ খেলার পর তারা নিজ নিজ পরিবারে মাঠে নামলো তারা!

কিন্তু ছেলে হলো ‘বর্ণবাদী’ বৈষম্যের শিকার! :((
“এতো বাজে চেহারার ছেলের সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে হতেই পারেনা!” :-*

এই নিয়ে তাদের ‘প্রিপেইড’ দাম্পত্য জীবনে আজ দূর্যোগের ঘনঘটা!

স্বান্তনা দিতে ইচ্ছে করেনা! বরং, উলটা রাগ দেখাই!
“তোরই তো ভুল!”

আশ্চর্য হয়ে তাকায় আমার দিকে!
“সঙ্গে আমার ছবিটাও দিতে পারতি তোর ‘ইয়ে’ কে! আমার ছবিটাই নাহয় দেখাতো প্রথমে এবং অবধারিতভাবে একই কথা শুনতো!”
“এতো বাজে চেহারার ছেলের সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে হতেই পারেনা!”

তখনই, চট করে তোর ছবিটা দেখিয়ে বলতো, “এই নাও আসল ছবি! ওটা তো ছিলো স্যাম্পল!”:-/

তুলনামূলক তত্ত্ব বিচারে তোর তো কেল্লা ফতে হতোই!

এই রকম বিটকেলে ব্যাখ্যা শুনে বন্ধুবর দুঃখেও হেসে ওঠে!:D

[আশা করছি, বন্ধুটি এই লেখাটি পড়ছেনা! আর, ওদের জন্য শুভকামনা, যেন এই সাময়িক খরা ওরা কাটিয়ে উঠতে পারে, খুব শিগগির!] :)

বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০০৯

আসুন, পুরনো একটা ওয়াজ শুনি, নতুন করে...

ওয়াজঃ

ঈমানী জোশ আর জেল্লায় হুজুর তার গলার টোন সপ্তসুরে তোলেন- উত্তেজনায় পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে উঁচু হয়ে বলেন, “আল্লাহর কী রহমত! আল্লাহপাক আমেরিকারে আমাদের পায়ের তলায় রাখছেন। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ! মাশাআল্লাহ!! এভাবেই আমেরিকার লোকজন আজীবন আমাদের পায়ের নিচেই থাকবে। সবাই বলেন, আমীন!”

“আ-মী--ন!” সমস্বরে হাঁক ওঠে!

(বদ্ধ ঘরের সজোরে আওয়াজে হয়তো আকাশ বাতাস কাঁপেনা। যদি পলেস্তরার প্রাণ থাকতো, ইটের সঙ্গে তার প্রথাগত সখ্যের অকাল মৃত্যু ঘটতো!)

তরজমাঃ

ভূ-গোলকীয় অবস্থানে বাংলাদেশের প্রায় মধ্যখান দিয়ে গেছে ৯০ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমা রেখা। আর বিশাল দেশ আমেরিকার মধ্যে কোন এক খানে ছেদ করেছে ৯০ ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমার কল্পিত রেখা। পৃথিবী গোলকের অবস্থান হিসাবে যেটি বাংলাদেশ একদম উল্টোদিকে।

বিজ্ঞান বলে, মানুষের বাস পৃথিবী পৃষ্ঠে। সেই হিসেবে আমেরিকানরা ঠিক আমাদের পায়ের নিচেই থাকে সবসময়।

শাস্ত্রে বলে, মিথ্যে বলা মহাপাপ।
হুজুর তো মিথ্যে বলেননি।

ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে।

(তাহলে, আমরা নিজেরা আমেরিকানদের সাপেক্ষে কোথায় আছি, সাধু?)

শানে নুজুলঃ

ছাপোষা কর্মচারী হিসাবে দেখছি, শুনছি -- অফিসের নতুন একটি সিস্টার কনসার্ন খোলা হচ্ছে। বেশ লাভের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে শুরুর আগেই। নতুন ফ্লোর নেয়া হলো এজন্য। ইমাম ডেকে মিলাদ পড়ানো হলো। এ উপলক্ষ্যে উচ্চপদস্থদের অনেককেই প্রথমবারের মত টুপিতে সয়লাব হতে দেখে ‘কেমন জানি’ লাগলো! নামাজে যাবার কারণে নামাযীদেরকে টিটকারীও শুনতে হয়েছে বেশ ক’বার এঁদের কাছ থেকেই!

নামাযের চেয়ে মিলাদের প্রয়োজনীয়তাই ‘হয়তো’ বেশি জরুরী।

একটি প্রভাবশালী পত্রিকা ধর্মের অনেক মৌলিক বিষয়ের উপর ‘তর্কের খাতির তর্কের’ মত কটাক্ষ প্রকাশ করে। কিন্তু দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা ‘অপ্রমানিত’ ও বিচিত্র আচারে আচরিত ‘মাজার’ রক্ষায় তাদের গলার স্বর খুবই জোরালো। ধুঁয়াটা তখন ওঠে প্রত্বতত্তের! মূলটা আসলে কোথায়?

সম্ভবত নজরুলের একটা কবিতার লাইন আছে, প্রায় সম্পূর্ণ ভুলভাবে সেটি খেয়াল আছে... শুধু ভাবটা...
“জিলাপি অর্ধেক বাঁচিয়া গিয়াছে, হুজুর তাই হাসিয়াই কুটি কুটি...”

কেউ কি পুরো কবিতাটি আমাকে দিতে পারবেন? ভুলটা সংশোধন করে নিতাম! :)

আর, পুরনো অথচ চমৎকার একটা পোস্ট পড়লাম একটু আগে। Click This Link


-------------------------------------------------
রাতমজুর ভাইয়ের সৌজন্যে কবিতার সঠিক অংশটুকুঃ
-------------------------------------------------
মানুষ- নজরুল ইসলাম

গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান,
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে, সল কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
‘পূজারী, দুয়ার খোল,
ক্ষুদার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পূজার সময় হলো!’
স্বপ্ন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়
দেবতার বরে আজ রাজা-টাজা হ’য়ে যাবে নিশ্চয়!
জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুদায় কন্ঠ ক্ষীণ
ডাকিল পান্থ, ‘দ্বার খোল বাবা, খাইনি তো সাত দিন!’
সহসা বন্ধ হ’ল মন্দির, ভুখারী ফিরিয়া চলে,
তিমির রাত্রি, পথ জুড়ে তার ক্ষুদার মানিক জ্বলে!
ভুখারী ফুকারি’ কয়,
‘ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয়!’

মসজিদে কাল শিরনী আছিল, অঢেল গোস্ত রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি!
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে-আজারির চিন্
বলে ‘বাবা, আমি ভুকা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’
তেরিয়াঁ হইয়া হাঁকিল মোল্লা – “ভ্যালা হ’ল দেখি লেঠা,
ভুখা আছ মর গো-ভাগাড়ে গিয়ে! নামাজ পড়িস বেটা?”
ভুখারী কহিল, ‘না বাবা!’ মোল্লা হাঁকিল – তা’ হলে শালা
সোজা পথ দেখ!’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা!
ভুখারী ফিরিয়া চলে,
চলিতে চলিতে বলে-
“আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তোমায় কভু,
আমার ক্ষুদার অন্ন তা’বলে বন্ধ করোনি প্রভু
তব মসজিদ মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবী,
মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবী!”

শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০০৯

আহাম্মক

লোকটা ইচ্ছে করলেই রামপুরা ব্রিজের কাছে নামতে পারতো বাস থেকে। বাসটা ওখানে অনেকক্ষণই থেমেছিলো। যাত্রীনামার সুযোগ দিলো-তারপর ওঠারও। কাউন্টারের নিয়ম-তাগিদই তো সেটা।

পরবর্তীটি রামপুরা বাজার। কিন্তু, তার আবদার ছিলো মধ্যবর্তী কোন এক স্থানে নামার। ড্রাইভারকে বললো। প্রথমে মৃদুস্বরে-তারপর একটু জোরে-পরে গলার তার চড়িয়ে-তারপর?

চলন্ত গাড়িতে অবৈধ সুবিধা না পেয়ে তাই হাত লাগালো ড্রাইভারের গায়েই! আচমকা আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ড্রাইভার বাধ্য হয়েই ব্রেক কষলো বাসে। কুশলী চালনক্ষমতায় বড় ধরণের দূর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলো সবাই। ভাগ্যও ছিলো সঙ্গে।

বড় আকারের দূর্ঘটনা ঘটলে বাসের সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হতো। বাসের ভিতরে তো সে নিজেও ছিলো। নিস্তার পেতো সে? এভাবেই ছোট ছোট ব্যক্তিগত সুযোগসুবিধার জন্য বৃহত্তর ক্ষতি ডেকে আনি আমরা এভাবেই। সে, আমি কিংবা আপনি!

অথচ, সারাটি পথ আমার পাশে বসা এই ব্যক্তিই এতোক্ষণ দেশের উন্নতি নিয়ে সারারাস্তা জ্ঞান বিতরণ করলো আমাদের!

আহাম্মকীর কোন সীমা পরিসীমা নেই বোধহয়।

আর “Never underestimate the power of human stupidity.”

--------------

থেমে থাকাটা জীবন নয়। সামনে এগিয়ে যেতে হয় কিংবা পিছে পড়ে কাতরানোর নিয়তি বরণ। প্রতিনিয়ত একই অবস্থানে থাকাটা পিছিয়ে পড়ারই নামান্তর।

দেশের কী অবস্থা?

নৈরাশ্যবাদীদের জন্য অনেক খোরাকী মিলছে কালের এ সময়টায়। এটা নেই। ওটা নেই। পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, গ্যাস নেই- নেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের সুলভ সরবরাহ। এটা আছে, ওটা আছে। আছে মাস্তানী, আছে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই-আছে নারীর প্রতি অবমাননা। দূর্নীতির সহাস্য পদচারনাও আছে। আছে ধোঁয়াটে ভবিষ্যতের নিকষ হাতছানি। আছে ফারাক্কার বর্তমান চোখরাঙানীতে টিপাইমুখের ভবিষ্যৎ কান্নার জল।

তবুও আশা আছে। খুব সাধারণ কারণেই সুখী হবার আপ্রাণ প্রবণতা আছে। আছে খেলায় জিতে যাবার আনন্দ কিংবা হেরে গেলে রেগে ক্ষোভে ফেটে পড়ার স্বাধীনতা-সেটাও আনন্দ-স্বাধীনতা প্রকাশের আনন্দ। আরও আছে অনেক কিছু।

‘কালের কলস’কে সময় দিতে গিয়েই সামহোয়ারইনের অনেক ভালো লেখাই চাপা পড়ে যায় ব্লগের আর্কাইভে। তাই হয়তো, নতুন ব্লগের চেয়ে পুরনো সৃজনশীল আর তথ্যসমৃদ্ধ লেখাই আমাকে টানে বেশি। অন্যতম প্রিয় একজন ব্লগার ‘পাললিক মন’ ভাই এর ব্লগটা তাই প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। চলুন, সেটিই না হয় আরেকবার দেখে আসি। :)
Click This Link

দেশ আসলেই এগিয়ে চলেছে। হয়তো একটু ধীরে। জ্যামে আটকে থাকা বাসটাও কিন্তু একসময় লক্ষ্যে পৌছে যায়। যদিও এভাবে এগিয়ে যাওয়াটা আমাদের কাম্য নয়।

তারপরও আমাদের মাঝেই লুকিয়ে থাকা যেসব পোড়ামুখ-যেসব ক্ষয়ে যাওয়া হৃদয় ‘সবসময়ই’ জাতীয় উন্নতির এই চাকাটাতে ব্রেক কষিয়ে থামাতে চায়-তারা কী নিস্তার পায়, কখনও কী পাবে?

ইতিহাস কী তাদের ক্ষমা করে?

ক্ষমা কী পেয়েছে মীরজাফর? অন্য কোন আহাম্মক?

সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০০৯

মহিষের ডানা

হঠাত করেই আতিকের ফোন, “চাকরী পার্মামেন্ট হইছে। সংগে প্রোমোশনও ফ্রি দিছে! তোমারে খাওয়াবো। মিশু ও আসবে।” খাওয়াদাওয়ার এমন প্রস্তাব এপ্রিশিয়েট না করাটা একরকম গুরুতর অপরাধের পর্যায়েই পড়ে। তার উপর নাকি হাসিবুল-মিশুও আসবে। সেই স্কুলের পর আবার দেখা হবে। বছর দশেক হবে। না করার উপায়ই নেই।

ভেন্যু ঢাকার বাইরে। উত্তরায়! তাতে কী? বেদুইনরা মরুভূমি পাড়ি দেয় আর আমিতো খাবার জন্যে মঙ্গলে যেতেও রাজী! কেউ যখন খাওয়ানোর প্রস্তাব দেয়, তখন একটা স্বাভাবিক প্রবনতা থাকে একটু বেশি খসানোর! হুমকিটা তাই আগেই দিয়ে রাখলাম ওকে। অভয় দিলো - মোহাফেজখানা ওর সংগেই আছে।

রেস্টুরেন্ট বাছাই করাও একটা প্রকট সমস্যা বটে। সবগুলোতেই চেখে দেখতে ইচ্ছ করে। কোনটায় ঢুকবো সেটা ঠিক করে হেঁটে হেঁটে ৫ নম্বর পেরিয়ে ১১ তে এসে হাজির। অবশেষে ক্লান্ত পা’গুলি ডানে মোচড় দিয়ে কোন একখানে থিতু হলো!

ইচ্ছা মত অর্ডার দেয়ার পর মেন্যুকার্ডটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিলাম। হঠাত একটা আইটেম নজরে এলো- ‘Buffalo Wings’। মনের ভিতর ধুলোপড়া ‘ডিকশনারি’টার পাতা উলটে ‘মহিষ’ ছাড়া আর কিছুই ভাসেনা! মহিষ বড় দূর্ভাগা প্রাণী! মৃত্যুর পর জাত হারায় ওরা। গরু হয়ে আমাদের প্লেটে আসে! বেচারাদের গায়ের রঙ কালো। তাই কালো গরু নামেও ওরা পরিচিত। ঘোরানো শিংগুলোও বেশ রোমান্টিক! কিন্তু কখনও কোন মহিষের wing তথা পাখা গজিয়েছে, এমনটি শুনেছি বলে মনে পড়েনা। ঘোড়া হলেও উইনিকর্ন বলে চালিয়ে দেয়া যেতো। তাই বলে মহিষাসুর?

পরিবেশনকারীকে তলব করি। অমায়িক হাসি দিয়ে জানায়, “স্যার ওইটা আমাদের ‘ইশপিশাল’ আইটেম!”
“কিন্তু মহিষের পাখনা পাইলেন কই?”
“ওইটা মুরগী দিয়ে তৈরী! মুরগীর পাখা।”
“মহিষ সাইজের মুরগী?! কত্ত বড়? এত দাম কম? কিন্তু আবার দেখি লেভেল ১ থেকে লেভেল ১০ পর্যন্ত! এর মানে কী? বসুন্ধরার মত লেভেল ১ খাইলে দাম কম, লেভেল ১০ এ খাইলে বেশি?”
“স্যার, ওটা হলো ঝাল এর মাত্রা! কোন মাত্রায় ঝাল খেতে চান, সেটার উপর নির্ভর করে! প্রতিলেভেল মাত্র ১০ টাকা!”

মনে পড়লো, শুরুতে ঝাল-কোক নিয়েছিলাম। এটাও নাকি ওদের ইশপিশাল মেনু! শা----, কোকের ভিতর একগামলা গোলমরিচ! প্রতি চুমুকেই নাকের ভিতর চুলকানী!

“ঠিক আছে ভাই, আমাদের জ্ঞান বাড়লো! প্রয়োজ়ন পড়লো ডাক দেবো। আহেম!”


খাওয়ার শেষে পরিবেশনকারী আবার এসে মুখে ‘ড্রাইওয়াশ মার্কা’ হাসি ঝুলিয়ে জিজ্ঞাসা করে, “স্যার, খাওয়া কেমন লাগলো?”

এসব ক্ষেত্রে মনে হয় ভদ্রতা করে বলতে হয়, “ভালো ভালো, অসাধারণ!” কিন্তু এত দাম দিয়ে এত অল্প সাধারণ মানের খাবার চেখে মেজাজ এমনিতেই টং! তার উপর ঝাল কোক! সেটাই মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো অবলীলায় , “যত আশা করে ঢুকেছিলাম, ততটা ভালো লাগেনি।” বলেই নিজের হাতের দিকে নজর গেলো, ছুরি-চামচের ‘ওএসডি’ অবস্থা দেখে ওয়েটার যেন আবার ‘খ্যাত’ মনে না করে তাই আবার যোগ করলাম, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় খেয়ে খাবারের মান দেখি। যদিও হাত দিয়েই খাই!”

মিশু আমার মত অত রূঢ় নয়, “না ভাই, মিনারেল ওয়াটারটা দারুন মজা লাগছে!”


***
[ বিয়ে বাড়িতে রান্না ভালো না লাগলে আমাদের মধ্যে বলার চল আছে, “রান্না অসাধারণ হইছে, বিশেষ করে কোক রান্না তো অতুলনীয়!”]

শনিবার, ১৩ জুন, ২০০৯

অসুস্থ্যতা

শুক্রবার দুপুরের অলস সময়ের বদৌলতে হঠাত করেই একটা ছোট্ট মজার ঘটনা মনে পড়লো। ভুলের যাবার আগেই ঝট করে লিখে ফেলি।

--

আগের অফিসে ছুটি চাওয়া ও সেটা চেয়ে পাওয়াটা চরম ঝামেলার একটা ব্যাপার ছিলো। এডমিনিস্ট্রিটিভ অফিসার তথা এ.ও সাহেবের সামনে নানা রকম জবাবদিহিতার খেতাপুরি! কয়েক মিনিটের রিমান্ড! মেজাজ খারাপের একশেষ।

এর চেয়ে সহজ অথচ- ‘দূর্ণীতিমূলক’ অসুস্থ্যতা অনেক ভালো! টিম ম্যানেজারকে ফোন করে দিলেই হয়, “ভাইয়া, আজ আসতে পারবোনা মনে হয়। তবে একটু ভালো বোধ করলেই চলে আসার চেষ্টা করবো।”

উনিও ঘোড়েল। আমার আগেই পাশ দিয়েছেন এ লাইনে! জানেন সবকিছুই। তাই, আগাম শারীরিক আবহাওয়াবার্তা ছাড়া যেত মাঝে মধ্যে-“ভাইয়া, আগামী পরশু আমি অসুস্থ্য থাকবো!”;)

এরকমই কোন এক শুক্রবার দুপুরে ‘অসুস্থ্য’ আমি গিয়েছি বুয়েটে! ওহ! আগের অফিসে ছুটি ছিলো রবিবার, সেটা বলাটা আগেই দরকার ছিলো! পলাশীর প্রান্তরে থুক্কু মোড়েই আচমকা- ও মোর জ্বালা- এ.ও সাহেবের সঙ্গে দেখা- দুই জোড়া চোখের ‘অ-মধুর’ মিলন!/:)

লজ্জায় মুখাবনত! তবুও ‘বীরবাঙ্গালী’ সাহসে তাকিয়ে দেখলো, উনি আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলেন!:-/

পরদিন অফিসে গিয়ে শুনলাম, উনি অসুস্থ্যতার কারণে আগের দিন আসতে পারেন নি!