সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

♫ ♫ ♫ [লোপামুদ্রা মিত্রের গান। ]

ঠিক যেখানে দিনের শুরু অন্ধ কালো রাত্রি শেষ
মন যতদুর চাইছে যেতে ঠিক ততদূর আমার দেশ
এই কাঁটাতার জংগী বিমান এই পতাকা রাষ্ট্র নয়
দেশ মানে বুক আকাশ জোড়া ইচ্ছে হাজার সূর্যোদয়
এ মানচিত্র জ্বলছে জ্বলুক এই দাবানল পোড়াক চোখ
আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক

দেশ মানে কেউ ভোরের স্লেটে লিখছে প্রথম নিজের নাম
হাওয়ার বুকে দুলছে ফসল একটু বেঁচে থাকার দাম

সব মানুষের স্বপ্ন তোমার চোখের তারায় সত্যি হোক
আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক

এ মানচিত্র জ্বলছে জ্বলুক এই দাবানল পোড়াক চোখ
আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক।

বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

Entry for September 25, 2008


একজন মানুষ। আমার বেশ প্রিয় একজন মানুষ। যার সাথে আমার পরিচয় বছরখানেকের সামান্য উপরে। নামটা না হয় না-ই বললাম। তার মুখেই শোনা। তার নিজের কথা। অনেক কথা। তার সম্ভাবনা। তার ব্যর্থতা। অনেক কিছুই। সেগুলোও না হয় লুকিয়ে ফেলি। সব কথা বলতে নেই।

মানুষটা বেশ ব্রিলিয়ান্ট।

কিন্তু একবার তার মারাত্মক মানসিক সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। ছাত্রাবস্থায়।

সাইক্রিয়াটিস্ট দেখাতেই হয়েছে তাকে। অনেক সিটিং। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অনেক যন্ত্রণা।

মূল ঘটনাটা আমাকে তিনি বলেননি।

শুধু সাইক্রিয়াটিস্ট এর শেষ কথাটাই আমাকে রিলে করেছিলেন তিনি, My boy, I don’t know what to say about you. This is either a curse or boon upon you. The problem with you is you can think while most of the people don’t!

সংগে সংগে নিজেকেই প্রশ্ন করেছিলাম, Do I think? ... may be or not!

দোষ-গুণের অবিরাম মিশেলে একটা মানুষ। তবুও সাধারণের খোলসে অদ্ভুত অসাধারণ একটা সত্ত্বা।

প্রশ্ন জাগতেই পারে, আজাইরা চিন্তা কইরা মাথা নষ্ট হইয়া লাভ কি?

প্রতিটা মুহূর্তেই একজন মানুষের উচিত নিজেকেই মূল্যবোধের কষ্টিতে যাচাই করে নেয়া। না হলে তার আত্মিক অবনতি ঘটে। এর জন্য অসীম চিন্তাশক্তির প্রয়োজন। শুধুমাত্র গৎবাধা শাস্ত্রজ্ঞানের ব্যবহারিক ও আনুষ্ঠানিক আচরণবিধি-ই ধর্ম নয়! হয়তো জ্ঞানীরা সেটা জানেন। আমরা জানিনা। আমরা বারেবারে ভুল করি।

একজন মানুষের আচরণের বহিপ্রকাশই তার ধর্ম!

ভুলে গেছি।



অফিসটা দূরে হওয়ায় দুজন বন্ধু তাদের অফিসের কাছাকাছি জায়গাতে বাসা নেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিলো। তারা দুজন থাকতো দুই প্রান্ত এলাকাতে। তাই তারা ছুটির দিনে আলাদাভাবে এসে অফিসের সামনে মিলিত হয়ে একসাথেই বাসা খুঁজতে যাবে বলেই ঠিক করলো। প্রস্তাবটা ভালো।

কথায় বলে, টাকা থাকলে নাকি ঢাকাতে বাঘের দুধও হরদম মেলে। কিন্তু ব্যাচেলরদের জন্য বাসা পাওয়াটা শুধুমাত্র টাকার উপর নির্ভর করেনা। সংগে থাকতে হয় ভাগ্য আর আপ্রাণ প্রচেষ্টা। মুরুব্বীদের দোয়া ও বোধহয় লাগে!

ছুটির দিন যথাসময়ে সাতসকালে একজন এসে হাজির।

আরেকজন লাপাত্তা।

সকাল আটটায় আসার কথা। উপস্থিত বন্ধু এসে অপরজনকে ফোন করে। রিং হয়, কেউ ধরেনা। হয়তো ধারে কাছেই আছে অপরজন। এক্ষুনি চলে আসবে। তাই হয়তো ফোন রিসিভ করছেনা। ভাবে প্রথম বন্ধু।

সময় যায়। নটা বাজে। কোন চিহ্ন নেই অপরজনের। নেই এধরণের কোন ফোনকল, দোস্ত, একটু দাঁড়া। আসছি

দশটাও বাজে। রোদ চড়া হতেই রাগের ব্যারোমিটারও বাড়তে থাকে। এই ফাঁকে নাস্তাটা সেরে ফেলা যাক।

বেলা এগারোটা। আর কাহাতক দেরী সহ্য করা যায়? ফিরেই গেলো সে। অপরজন সারাবেলাই অনুপস্থিত।

পরের দিন অফিসে এসেই, তুই কাল আসলিনা কেন?

ওহ! শি----, দোস্ত! একদম ভুলে গেছি, ডিফল্টারের প্রতিউত্তর।

অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। অভিমান ঝরে পড়ে কন্ঠে।

আর বলিসনা, সারারাত মুভি দেখলাম। সকালে যা জোস একটা ঘুম দিয়েছি! পাল্টাপাল্টি আত্মতৃপ্তি ও ঝরে পড়ে কন্ঠে।

শালা, তোর জন্য এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। এখন ব্যাটা মুভি দেখার গল্প করছিস? তোর কমন সেন্স বলে কিছুই নাই। রেসপনসিবিলিটি বলে কিছুই নাই

তুই আমার সাথে এরকম আচরণ করছিস কেন? আমি তো বলেছিই, আমি ভুলে গেছি। টেক ইট ইজি, ম্যান।

করবোনা কেন? তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। ফোনের পর ফোন দিলাম। কোন রেসপন্স নাই। তার পরও তোর কোন ভাবান্তর নাই

তোর মত ফালতু লোক আর আমি দেখিনি। আমি তো বলছিই, ভুলে গেছি। ...তারপরও...এইরকম বাজে ব্যবহার করছিস?

একবারও সরি বলেছিস?...

আমি পাশে দাঁড়িয়েই পুরোটা দেখলাম, শুনলাম। যদিও পরের কথোপকথনগুলো আর বলতে ইচ্ছে করছেনা। সেগুলো শ্রুতিমধুর নয় মোটেই

পুরনো কথাটা মনে পড়লো, দ্বায়িত্বজ্ঞানহীনতার সবচেয়ে বড় অজুহাত হলো ভুলে গেছি!

আমার নিজের ক্ষেত্রেও এ ধরণের তিক্ত অভিজ্ঞতা ঘটেছে বেশ কবার।

খুব ভালো লাগতো, যদি বলতে পারতাম, এই বিচ্ছিরি ঘটনাগুলো আমি ভুলে গেছি

***

ওহ! এটাও বলতে বলতে ভুলে গেছি, এইটা আমার শততম ব্লগ!

***

শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

কথোপকথন


... ক্রিং ক্রিং ক্রিং ...

“হ্যালো, ‘অমুক’ বলছেন?” ফোনে আকস্মিক কোমল তরুনীকন্ঠ!
“জী, বলছি।” অপ্রস্তুত পুরুষকন্ঠের জবাব!

“কেমন আছেন?”
“ভালো। আপনি?”
“ভালো। আচ্ছা, আপনার পুরো নাম তো ‘অমুক’ হাসান, তাই না?”
“জী।”
“ভালো, তো আপনি তো বুয়েট থেকে পাশ করেছেন? ”
“জী, ঠিক। গত বছর।”
“দেশের বাড়ি কোথায়? ”
“ঝিনাইদহ।”
“আপনারা ভাই-বোন ক’জন? ”
“তিন ভাই, তিন বোন।”
“আপনি সবার ছোট? ”
“হ্যাঁ, কেন বলুন তো? ”
“আচ্ছা, ঢাকায় কোথায় থাকেন?”
“মহাখালীতে বড়ভাইয়ের সংগে।”
“আপনার হাইট কত? ”
“ছয় ফিট দুই ইঞ্চি। আপনি কে বলছেন? আপনি কি XYZ কোম্পানী থেকে বলছেন, যেখানে আমি গত সপ্তাহে চাকরীর ইন্টারভিউ দিয়েছি? ”
“নাহ…! ”
“আপনাকে তাহলে এত কথা কেন বলছি? কে আপনি?? আমি তো ভেবেছি.....”
“আচ্ছা রাখি, পরে কথা হবে! ”

...খট...


“হায় হায় আমার ‘সর্বস্ব’ নিয়ে গেলো!”
অচেনা রমনীর সংগে আলাপচারিতা শেষে বন্ধুবরের প্রাথমিক অভিব্যক্তিটা এরকমই ছিলো!

সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

স্বাবলম্বী



অনলাইনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জুনিয়রের সঙ্গে কথা হচ্ছিলো। একটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে একটু জড়িত ছিলাম। এখন পড়াশুনার পাট চুকেছে। তাই সেই দ্বায়িত্ব পড়েছে ওদের উপর। ওরা আমাদের চেয়েও অনেক অনেক ভালো কাজ করে। কাজের অনেক কথা শেষে যখন সে বিদায় নিতে চাইলো, হালকা চালেই তাকে বললাম, বাই, টেক কেয়ার। দোয়া করি যেন একশ বছর বাঁচো!

বিদায়টা স্বাভাবিক ভাবেই হতে পারতো।

এত বছর বাঁচতে চাইনা, ফোঁস করে উঠলো সে, সে শব্দ শুনতে না পারলেও তার চেহারা আন্দাজ করতে একটুও কষ্ট হলোনা। জানতাম, সে একটু আবেগী, পরনির্ভরশীল হয়ে মরতে চাইনা

পরনির্ভরশীল হয়ে মরতে চাওনা?

না!

তাহলে নিশ্চয় স্বাবলম্বী হয়ে মরতে চাও?

স্বাবলম্বী হয়ে মরা মানে কী?

সেটা তো জানিনা। কেউ যখন সত্যি কথা বলতে চায়না, তখন সে মিথ্যা কথা বলে। সেভাবেই, কেউ পরনির্ভরশীল না হতে চাইলে, তাকে তো স্বাবলম্বী হতেই হবে।

তাই বলে স্বাবলম্বী হয়ে মরা? সেটা কিভাবে সম্ভব?

আমি জানিনা। তুমি যেভাবে বললে, আমি সেভাবেই বললাম।

তার ব্যস্ততা ছিলো। কথা আর এগুলোনা তাই।

কিন্তু কেউ পরনির্ভরশীল হয়ে মরতে না চাইলে, সে কিভাবে মরতে চায়?

হঠাৎ মুখ ফসকে বলে ফেলেছি বটে... কিন্তু নিজেই বুঝিনি কথার তাৎপর্য ... বেশ ভেবেছি... কিন্তু সফল হইনি।


স্বাবলম্বী হয়ে মরা মানে কি? শুধুমাত্র অল্পবয়সে মরা?