শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০০৮

আজকের ডায়রী

অফিস সেরে ক্লান্ত শরীরে বাসায় ফিরে কখনও কম্পিউটারে গেম খেলি, ইন্টারনেটের অবারিত জগতে বিচরণ করি, কিংবা কখনও বা শুধুই ঘুম কখনও আবার বালিশের পাশে অযত্নে পড়ে থাকা একটি গল্পের বই আমাকে সংগ দেয় গল্পের বই মাঝে মাঝেই ছুটিতে যায় সেখানে চলে আসে কঠিন কঠিন সুত্রে বাধা মোটা মোটা ইঞ্জিনিয়ারিং এর বই কিংবা খসখসে শব্দের আর্তনাদ করে ওঠা প্রাত্যাহিক খবরের কাগজ পড়তে পড়তে কখন যেন নিজের অজান্তেই ঘুমিয়ে পড়ি খোলা আকাশ তখন আমাকে ডাকেনা তারাদের সংগী চাঁদ ও তখন অনেকটা অচেনা তখন শুধুই ঘুম অনন্ত চাওয়ার পূর্ণ প্রাপ্তির ঘুম

টিউব লাইট এর দুধ-সাদা আলো জ্বলতে থাকে জ্বলুক কোন কোন দিন মাঝরাতে ঘুম ভাঙেগ বিরক্ত চোখে আলোটাকে জন্ম জন্মান্তরের শত্রু মনে হয় আলুথালু বেশে নীলচে-সবুজ মশারীর দেয়ালের নিচ দিয়ে উঠে আলোটাকে হত্যা করি ভালো লাগে তারপর আবার সেই ঘুম কে যেন বলেছিলো, “ঘুমাতে এত ভালো লাগে কেন? না জানি, চিরদিনের ঘুম কতই না মজার” মাঝে মাঝে কথাটার সত্যাসত্য নির্ণয়ের সাধ জাগে শোনা কথায় কান দিতে নেই যে! কখনও শত্রুর মত সামনে ভেসে থাকা আলোটাকে নিজ হাতে বধ করতে ইচ্ছা জাগেনা কিংবা সহজ ভাষায় বললে, মাঝরাতে আর ঘুম ভাঙেনা কৃত্রিম আলোটা প্রভাত সূর্যের সংগে তেজ দেখাতে চায় কিন্তু পারেনা পারতে দেইনা খট করে নিভিয়ে দিই

এখন কবিগুরুর ‘গল্পগুচ্ছ’ পড়ছি আবার তাঁর প্রতিটা শব্দের দ্যুতি আমাকে আলোকিত করে নগন্য এই আমার পক্ষে তার লেখার আলোচনা-সমালোচনা করা তো অতিদূরের ব্যাপার, প্রশংসা করাও একপ্রকার নিকৃষ্টতম ধৃষ্টতার সমতুল্য একটা মানুষ সারাটা জীবন নিরবচ্ছিন্ন ভাবে নিজ লেখার মাধ্যমে মানব চিত্তকে আলোড়িত করে গেছেন, এখনও করছেন ভাবতেও শিহরণ জাগে তার নামে গোঁড়ামী প্রসূত অপবাদ শুনলে কপালের পাশের অনুভুতির শিরাটা দপ দপ করে আন্দোলিত হয় মুষ্টি অনমনীয় হয় দূর্বিনীত আক্রোশে বলা হয়, ধনী পরিবারের সন্তানের পক্ষে খুবই সম্ভব ছিলো সাহিত্য রচনায় বাঁধনহীন নিমগ্ন থাকা খাওয়া পরার তেমন চিন্তা ছিলোনা তাঁর জীবনটাকে উপভোগ করেছেন আর লিখেছেন খুবই সহজ হিসাব! সমকালীন কিংবা পরবর্তীকালের অনেক সাহিত্য-পথিকের মত জীবন সংগ্রামের ময়দানে তাকে নামতে হয়নি তিনি একান্ত সময় কাটানোর ছলেইই তার কলমের নিবে ছত্র লিখে দিন গেছে তাঁর! শুনলে হাসি পায় কান্নাও পায় রবীন্দ্র সমসাময়িক অনেকেই ছিলেন অর্থবিত্তে সমকক্ষ কিংবা আরো অনেক বেশি তাদের ক’জন আমাদের মানসপটে বিরাজমান আজও? তাদেরও তো সে সুযোগ ছিলো কিন্তু কবিগুরু আছেন, থাকবেন তাঁর নিজের সৃষ্টিতে, কীর্তিতে

তাঁর সবগুলো কাহিনী বিন্যাস-ই যে কালোত্তীর্ণ, সেটা বলা নিরপেক্ষতার পরিচয় হবেনা কিন্তু আগের মত আবার বলছি, তাঁর ব্যবহৃত প্রতিটা শব্দের আলোকছটা নক্ষত্রের চেয়েও প্রখর গল্পের মাঝে মাঝে নিজস্ব জীবনবোধ থেকে উতসারিত কিছু শব্দ, কিছু বাক্য আমাকে বজ্রাহতের মত চমকে দেয় কাহিনী পিছে পড়ে রয় মনচক্ষু খুঁজে বেড়ায় এখানে ওখানে ছড়িয়ে থাকা সেসব মুক্তার খনি

কাল একটা গল্প পড়ছিলাম প্রথম কয়েক ছত্র পড়েই পড়েই উপসংহারের ধরণ কল্পনা করে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি কিন্তু সেটা আমার ক্ষতিবৃদ্ধির কারণ নয় আদতে কোন ক্ষতি-ই নেই এখানে একটা প্যারাতে চোখ আটকে গেলো...

“একটা পাখিকে সুবিধামত ডালের উপর বসিয়া থাকিতে দেখিলেই শিকারীর ইচ্ছা করে তাহাকে গুলি বসাইয়া দিতে, পাহাড়ের গায়ে প্রস্তর পতনোন্মুখ থাকিতে দেখিলেই বালকের ইচ্ছা করে এক লাথি মারিয়া তাহাকে গড়াইয়া ফেলিতে - যে জিনিষটা প্রতি মুহূর্তে পড়ি-পড়ি করিতেছে, অথচ কোনো একটা কিছুতে সংলগ্ন হইয়া আছে, তাহাকে ফেলিয়া দিলেই তবে যেন তাহার সম্পূর্ণতা সাধন এবং দর্শকের মনে তৃপ্তিলাভ হয়

আজ এই পর্যন্তই
অনেক দিন কিছু লেখা হয়না শুধুমাত্র লেখার আনন্দেই লিখে ফেললাম এতটুকু!

মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০০৮

VISA


এমবাসী’তে ভিসা পাওয়া যা-তা ব্যাপার নয়। অনেক রকম হ্যাপা পোহাতে হয়। নাকের জল, চোখের জল .. কার্যক্ষেত্রে আরো অনেক কিছুর সংগে এই দুইটার ও প্রয়োজন হয়। ভুক্তভুগী মাত্রই জানেন। আমি ভুক্তভুগী নয়। ব্যাপারটা আমার এককালের সহপাঠী আর বর্তমানের কলীগ মফিজ এর! তবে ভার্সিটিতে মেয়েরা ওকে ডাকতো ‘মুস্তাফিজ’। সবখানেই কেন জানি জেন্ডার-অসমতা!

মোটামুটি নিষ্পাপ আচরণ। এফেয়ার করতে খুব একটা প্রবলেম হলোনা ওর। মেয়েও আমাদেরই ক্লাসের। সোনায় সোহাগা! পরিনতি ভালোই। সরাসরি পারিবারিক ভাবে বিবাহ! প্রেমের কাহিনীতে ভিলেন না থাকলে কী চলে? এইখানে ভিলেন হলো, মেয়েটার পাওয়া জাপানী স্কলারশিপ। যে নারীর স্বামী বিদেশে ত্থাকে... ব্যকরণ বইতে এর একটা এককথায় প্রকাশ আছে... প্রষিতভর্তৃকা! মফিজ হলো 'প্রষিতভর্তৃক’! (জানিনা, আদৌ এরকম শব্দ বাংলা ভাষায় আছে কিনা!) বাংলা সিনেমার ‘টেরাজিডি' কে হার মানিয়ে নববধু ঈদের আনন্দ-সকালে কান্নাকাটি করে উড়াল দিলো সূর্যোদয়ের দেশে। দিলো অনেক প্রতিশ্রুতি। তোমাকে শীঘ্রই নিয়ে যাবো... ইত্যাদি ইত্যাদি।

বিশ্বাসভঙ্গের ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে? উহু! নাহ!

মেয়েটা কাগজপত্র সবই পাঠালো। কিন্তু বাগড়া দিলো জাপানী এমবাসী! সব ডকুমেন্টস ঠিক আছে। তবে প্রতিদিনই নতুন নতুন কাগজপত্রের আবদার করে তারা। ব্যাংক স্টেটমেন্ট, নিকাহনামা এইরকম উল্টোসোজা যাবতীয় সিলমোহরযুক্ত কাগজ দেখানোর পরও তাদের খায়েশ মেটেনা! সর্বশেষ বার বলেছে, বিয়ের আগে তোমার বউ এর সংগে কিভাবে পরিচয় হয়েছে, সেটার উপর একটা রচনা লিখে জমা দাও! ফার্স্টক্লাস গেজেটেড অফিসার কর্তৃক সত্যায়িত করে দিতে হবে কিন্তু!

কাল সন্ধ্যায় বেচারাকে দেখালাম, কাগজ কলম নিয়ে বসেছে!

উপদেশ দিই, “কষ্ট করে লিখে আর কী করবি? অন্তরঙ্গ ভিডিও দেখাইয়া দে ওদের!”

“ওইটা তো বিয়ার পর। কিন্তু এবার তো চাইছে, বিয়ার আগের কাহিনী!”

“তাইলে আর কী করবি? রেফারেন্স হিসাবে আমার ফোন নাম্বার দিস ওদের! ফোন করলে বলবো, সন্ধার পর তোদের প্রায়ই আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছি!”

হা হা হা!

বেচারা আজ দুপুরে গেছে আবার এমবাসীতে...।

দেখি কী হয় এবার...!

বুধবার, ১২ নভেম্বর, ২০০৮

মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০০৮

লস!


কয়েক দিন আগে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে ব্লাড ডোনেট করতে গিয়েছিলাম। এই নিয়ে মোটে নয় বার হলো! :(

পাশের টেবিলে শুয়ে থাকা আরেক ডোনারকে আক্ষেপ করতে শুনলাম এভাবে, "সেদিন শরীরটা বেশি ভালো ঠেকছিলো না। তাই ডাক্তারের কাছে গেলাম। ডাক্তারের কথামত ১০ হাজার টাকা খরচ করে অনেক রকম টেস্ট করালাম। কিছুই পাওয়া গেলোনা। পুরো টাকাটা-ই লস! "

মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০০৮

সম্মতি না অসম্মতি?

জ্ঞান থাকতে ওই মেয়েকে আমি বিয়ে করতে পারবোনা। তাই জ্ঞান হারাইছিলাম...

অনেক আগে একটা ধারাবাহিক নাটকে এক গ্রাম্য লোকের মুখে এই ডায়ালগটা শুনেছিলাম।

ধন্ধে পড়ে গেছি, এই বাক্যটা বিয়েতে সম্মতি না অসম্মতি?

আবার অফিস...




জামাল ভাইয়ের বঊ মানে আমাদের জামালভাবী ঘরে বসে থাকতে থাকতে একটু টায়ার্ড। তাই বাড়তি কাজ হিসাবে তিনি শুরু করেছেন ফতুয়া ডিজাইন।

ফর্মুলা অনুযায়ী প্রথম ফতুয়াটা অবশ্যই জামাল ভাইয়েরই হওয়া উচিত। আর সেটাই তিনি অফিসে পরে এসেছেন!

ফতুয়াটা ভালোই। হাতের কাজের প্রশংসা কুড়োচ্ছে দেদারসে ওটা! আমাদের মুখে বউয়ের প্রশংসা শুনে জামাল ভাই নিজেই ফুলে যাচ্ছেন! (কানে কানে একটা কথা বলে রাখি, একটু বয়স্করা টি-শার্ট অথবা ফতুয়া পড়লে, তাদের ভুড়িটা সহজেই দৃষ্টিগোচর হয়। সেই জন্যই ফুলে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক! )

ফতুয়াটা আসলেই দেখতে ভালো। যার যা প্রাপ্য সেটা দিতে আমি কখনই কার্পণ্য করিনা, ওহ জামাল ভাই! ফতুয়াতে আপনাকে দারুন লাগছে! মনে হচ্ছে আপনার বয়স পাক্কা তিন দিন কমে গেছে!

জামাল ভাই আমার উপর একটু বিরক্ত হলেন মনে হয়, মাত্র তিনদিন?! ভেবেছিলাম বলবেন, ১০ বছর!

মাঈনুল ভাই তাকে ুশি করার জন্য ঝপট বললেন, জোস! আপনি যেই স্টাইলে দাঁড়িয়েছেন... যেন একটা scare-crow!

আশ্চর্যজনকভাবে শব্দটার অর্থ তিনি জানেন না! তাই ইংরেজী প্রশংসা শুনে খুশি হয়ে আরেকটা পোজ দিয়ে আমাকে জিজ্ঞেসলেন, এবার কেমন লাগছে?

কঠিন! আপনাকে এবার ফুরফুরে মেজাজের Traffic-Police এর মতই লাগছে! ... এবার ইংরেজীটা তিনি ঠিকই বুঝলেন।

আর আবার বিরক্ত হলেন আমার উপর!

***

গণ অসন্তোষের কারণে কোথায় যেন পুলিশকে মোলায়েম লাঠিচার্জ করতেই হয়েছিলো। তাতেও যখন কাজ হলোনা, তখন ভরসা রাবার বুলেট ! ঘটনা একটু ভয়াবহ!

তাই পরেরদিন স্থানীয় সংবাদপত্রে জব্বর একখানা হেডলাইন জায়গা করে নিলো,

পুলিশের গুতে তিনজন আহত!

চারিদিকে হৈচৈ... ব্যাপার কি? এবার ঘটনা একটু আকর্ষণীয়!

পরেরদিন পত্রিকায় সংশোধনী দিতেই হলো,

পাছার ভুলের কারণে গুলি গু হয়ে যাওয়ায় আমরা দুঃখিত।

তৃতীয় সংশোধনীতে কি এসেছিলো সেটা আর জানা যায়নি!

[প্রকৃত শব্দদ্বয় যে গুলিছাপা, সেটা বলাই বাহুল্য!]

***

রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০০৮

অবসর

আজ দুপুরে একা একা অনেকটা পথ হেঁটেছি। কোন সুনির্দিষ্ট কিছু করার ছিলো না তাই। বেশ খানিকটা পথ। কতটা পথ? মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে টেকনিকাল মোড়। সেখান থেকে বাসে চেপে আবার শেওড়াপাড়া। এক বন্ধুর বাসায় প্রয়োজনে যাবার দরকার ছিলো। কিন্তু আগেই পৌছে যাওয়াতে সময়টা কাটানোর প্রয়োজন ও ছিলো। কিন্তু সেটা অন্য কাহিনী।

বাসায় ফিরে একটু আত্মস্থ হয়ে চেখভ পড়ছিলাম। বাংলা অনুবাদে। গল্পগুলো বেশ ঝরঝরা,সাধারণ। ভালোই লাগে পড়তে। পুরনো দিনের রাশিয়ান দৈনন্দিন জীবন। আমাদের চেয়ে বেশ আলাদা। তবুও মিশে গিয়েছিলাম খানেকক্ষণের জন্য। তারপরই ডুবে গেলাম আমার চিরপ্রিয় সৈয়দ মুজতবা আলী-তে। হালকা রস মিশিয়ে জীবনের নিগূঢ়তম সত্যগুলো কেমন যেন মূর্ত হয়ে ওঠে তার লেখায়। মুগ্ধতার কখনও শেষ হয়না আমার।

হুবহু, সেখান থেকেই তুলে দিলাম কিছু অংশ।

***
রুশ কবি পুশকিনের রচিত একটি কবিতার সারমর্ম এই-

‘হে ভগবান, আমার প্রতিবেশীর যদি ধনজনের অন্ত না থাকে, তার গোলাঘর যদি বারো মাস ভর্তি থাকে, তার সদাশয় সচ্চরিত্র ছেলেমেয়ে যদি বাড়ি আলো করে রয়, তার খ্যাতি প্রতিপত্তি যদি দেশ দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ে, তবুও তাতে আমার কণামাত্র লোভ নেই, কিন্তু তার দাসীটি যদি সুন্দরী হয় তবে- তবে, হে ভগবান, আমাকে মাপ করো, সে অবস্থায় আমার চিত্ত-চাঞ্চল্য হয়।’

পুশকিন সুশিক্ষিত, সুপুরুষ ছিলেন এবং খানদানী ঘরের ছেলে ছিলেন।, কাজেই তার ‘চিত্তদৌর্বল্য’ কি প্রকারের সেকথা বুঝতে বিশেষ অসুবিধা হয়না। এইবারে সবাই চোখ বন্ধ করে ভেবে নিন কোন্‌ জিনিষের প্রতি কার দূর্বলতা আছে।

আমি নিজে বলতে পারি, সাততলা বাড়ি, ঢাউস মোটরগাড়ি, সাহিত্যিক প্রতিপত্তি, রাজনৈতিক কর্তৃত্ব এ সবের প্রতি আমার কণামাত্র লোভ নেই।

আমার লোভ কেবল একটি জিনিষের প্রতি- অবসর। যখনই দেখি, লোকটার দু’পয়সা আছে অর্থাৎ পেটের দায়ে তাকে দিনের বেশির ভাগ সময় এবং সর্বপ্রকারের শক্তি এবং ক্ষমতা বিক্রি করে দিতে হচ্ছেনা, তখন তাকে আমি হিংসে করি। এখানে আমি বিলাস ব্যসনের কথা ভাবছিনে।, পেটের ভাত ‘-’র কাপড় হলেই হল।

অবসর বলতে কুঁড়েমির কথা ও ভাবছিনে। আমার মনে হয়, প্রকৃত ভদ্রজন অবসর পেলে আপন শক্তির সত্য বিকাশ করার সুযোগ পায় এবং তাতে করে সমাজের কল্যাণলাভ হয়।

***

কিন্তু ব্যাস্ত সময়ে অবসর মেলে কই?
আজকে না হয় আচমকা পেয়ে গিয়েছিলাম সেটা।
আজকে দিনটা হয়তো একটু বেশিই লাকি।

বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০০৮

মুখোমুখি সংঘর্ষ


আচম্বিতে জ্ঞানতাপস জিজ্ঞাসা করিলেন, মুখোমুখি সংঘর্ষ বলিতে কি বুঝিয়া থাকো?

ভরদুপুরে এইরুপ প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হইয়াও নিজেকে সামলাইয়া কহিলাম, যেই বিষাদময় মূহুর্তে দুটি যান সম্মুখসমরে আলিঙ্গন করিয়া উদরস্ত যাত্রীদিগের প্রাণোৎপাটন, অন্ততপক্ষে অঙ্গহানি, করিয়া থাকে, তাহাকেই মুখোমুখি সংঘর্ষ বলিয়া সংজ্ঞায়িত করা হয়।

ইহাতে তাহার বিশেষ সন্তুষ্টি লাভ হইলোনা বলিয়া বোধ হইলো।

বন্ধুস্থানীয় ব্যক্তিদিগের অসন্তুষ্টি নিতান্তই কাম্য নহে। এতদকারণে তাহার চিত্তবিনোদনকল্পে তাহাকে পূতপবিত্র-অরণ্যে তৈয়ারীকৃত সবাক চলচ্চিত্র উপভোগ করিবার স্পষ্ট আহবান করিলাম। তিনি সানন্দে ইচ্ছা পোষণ করিলেন। জমকালো শব্দানুভুতি ও দৃশ্যাবলীর অব্যবহিত পরেই প্রধান পাত্রাপাত্রী প্রেমাঙ্কুর দৃশ্যে অবতরণ করিলেন। ঘটনাসমূহ আরও প্রগাঢ় ও অন্তরঙ্গ হওয়া পূর্বক ওষ্ঠাধরসমূহ অতীব নিকটবর্তী হইতেই অক্ষিযুগল তৎক্ষণাত করাবৃত করিয়া তাহাকে বলিলাম , ইহাকেই হয়তো প্রকৃতপক্ষে মুখোমুখি সংঘর্ষ বলিয়া থাকে!

মুদিত নয়নেও তাহার স্মিতহাস্য অনুভব করিলাম।

বুঝিলাম, তিনি আশাপ্রদ সদুত্তর পাইয়াছেন!

রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০০৮

অন্তর্ধান।


বিকাল বেলায় অফিসে একটা ঝিমুনী চলে এসেছিলো! কোন ইঞ্জিনিয়ারেরই কাজে তেমন মনোযোগ নেই ! এই সময়টা অফিসের সিনিয়র এডমিনিস্ট্রেশন অফিসার ও নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমানবয়স হয়েছে তো! পিয়নরা অবশ্য বলে, তিনি রেস্টনিচ্ছেনআমার বসার জায়গাটা তার রুমের দেয়াল লাগোয়াআমিও সেই সুযোগে তার মতই একটু ঝিমিয়ে নেবার সুযোগটা নিইঅন্যরা তাই আমাকে বলে, আমি নাকি তারমিরর ইমেজ’! একদিন বিকালে দেখি তার রুমের দরজাটা খোলাপিয়ন নুরুর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই সে ব্যাপারটা আমাকে বুঝিয়ে বললো


রুমে এসে কলিগদের সামনে আকস্মিক একটা ঘোষণা দিলাম, “এডমিনিস্ট্রেশন অফিসার স্যার আজ আর আমাদের মাঝে নেই!

ঘুমের মৌতাত লাগা কলিগদের মধ্যে একটা মৃদু আলোড়ন বয়ে গেলো! ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনআহা, দুপুরেই তো দেখলাম সুস্থ্য মানুষটাকি হয়েছিলো? আমরা টের পেলাম না কেন?” উৎসুক চোখ সবার!

হুম... উনি আজ আর আমাদের মাঝে নেইআজকে একটু আগেই ছুটি নিয়ে বেরিয়ে গেছেন!সবাইকে আশ্বস্ত করি

সবার মাঝে একটা হাসির রোল বয়ে গেলোশেষ বিকালের তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাবটা কাটিয়ে কাজের পরিবেশ ফেরাতে এই ছোট্ট মজাটা যথেষ্ট ছিলো সেদিনের জন্য!

বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০০৮

হিসাব মেলেনা।




অফিসে, অন্যদের কাজ দিলে অনেকেই ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে সেটা শেষ করতে ১ ঘন্টার উপর লাগিয়ে ফেলে!

আর আমাকে দিলে সেটা ২০ মিনিটে শেষ করে আধাঘন্টার মত টেবিলে মাথা রেখে চট করে ঘুমিয়ে নিই!

তবুও কেন আমার বিরুদ্ধে কাজে ফাঁকি দেয়ার এন্তার অভিযোগ?

কারণ তো বুঝলাম না!

***

উফ্‌! শুধু কাজ, কাজ আর কাজ! জীবনে কি আর কিছুই নেই?

আছে তো!

কী?

কাজ থেকে কদিনের ছুটি পেলাম যে!

কেন?

কারণ? ...

ঈদ মোবারক!*

* শর্ত প্রযোজ্য

* কি শর্ত? ঈদের আনন্দ ও শিক্ষা শুধুমাত্র একদিনের জন্য সীমাবদ্ধ না রেখে আজীবনের জন্য বলব রাখতে হবে! অন্তত পক্ষে চেষ্টা করতে হবে!

সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

♫ ♫ ♫ [লোপামুদ্রা মিত্রের গান। ]

ঠিক যেখানে দিনের শুরু অন্ধ কালো রাত্রি শেষ
মন যতদুর চাইছে যেতে ঠিক ততদূর আমার দেশ
এই কাঁটাতার জংগী বিমান এই পতাকা রাষ্ট্র নয়
দেশ মানে বুক আকাশ জোড়া ইচ্ছে হাজার সূর্যোদয়
এ মানচিত্র জ্বলছে জ্বলুক এই দাবানল পোড়াক চোখ
আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক

দেশ মানে কেউ ভোরের স্লেটে লিখছে প্রথম নিজের নাম
হাওয়ার বুকে দুলছে ফসল একটু বেঁচে থাকার দাম

সব মানুষের স্বপ্ন তোমার চোখের তারায় সত্যি হোক
আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক

এ মানচিত্র জ্বলছে জ্বলুক এই দাবানল পোড়াক চোখ
আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক।

বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

Entry for September 25, 2008


একজন মানুষ। আমার বেশ প্রিয় একজন মানুষ। যার সাথে আমার পরিচয় বছরখানেকের সামান্য উপরে। নামটা না হয় না-ই বললাম। তার মুখেই শোনা। তার নিজের কথা। অনেক কথা। তার সম্ভাবনা। তার ব্যর্থতা। অনেক কিছুই। সেগুলোও না হয় লুকিয়ে ফেলি। সব কথা বলতে নেই।

মানুষটা বেশ ব্রিলিয়ান্ট।

কিন্তু একবার তার মারাত্মক মানসিক সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। ছাত্রাবস্থায়।

সাইক্রিয়াটিস্ট দেখাতেই হয়েছে তাকে। অনেক সিটিং। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অনেক যন্ত্রণা।

মূল ঘটনাটা আমাকে তিনি বলেননি।

শুধু সাইক্রিয়াটিস্ট এর শেষ কথাটাই আমাকে রিলে করেছিলেন তিনি, My boy, I don’t know what to say about you. This is either a curse or boon upon you. The problem with you is you can think while most of the people don’t!

সংগে সংগে নিজেকেই প্রশ্ন করেছিলাম, Do I think? ... may be or not!

দোষ-গুণের অবিরাম মিশেলে একটা মানুষ। তবুও সাধারণের খোলসে অদ্ভুত অসাধারণ একটা সত্ত্বা।

প্রশ্ন জাগতেই পারে, আজাইরা চিন্তা কইরা মাথা নষ্ট হইয়া লাভ কি?

প্রতিটা মুহূর্তেই একজন মানুষের উচিত নিজেকেই মূল্যবোধের কষ্টিতে যাচাই করে নেয়া। না হলে তার আত্মিক অবনতি ঘটে। এর জন্য অসীম চিন্তাশক্তির প্রয়োজন। শুধুমাত্র গৎবাধা শাস্ত্রজ্ঞানের ব্যবহারিক ও আনুষ্ঠানিক আচরণবিধি-ই ধর্ম নয়! হয়তো জ্ঞানীরা সেটা জানেন। আমরা জানিনা। আমরা বারেবারে ভুল করি।

একজন মানুষের আচরণের বহিপ্রকাশই তার ধর্ম!

ভুলে গেছি।



অফিসটা দূরে হওয়ায় দুজন বন্ধু তাদের অফিসের কাছাকাছি জায়গাতে বাসা নেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিলো। তারা দুজন থাকতো দুই প্রান্ত এলাকাতে। তাই তারা ছুটির দিনে আলাদাভাবে এসে অফিসের সামনে মিলিত হয়ে একসাথেই বাসা খুঁজতে যাবে বলেই ঠিক করলো। প্রস্তাবটা ভালো।

কথায় বলে, টাকা থাকলে নাকি ঢাকাতে বাঘের দুধও হরদম মেলে। কিন্তু ব্যাচেলরদের জন্য বাসা পাওয়াটা শুধুমাত্র টাকার উপর নির্ভর করেনা। সংগে থাকতে হয় ভাগ্য আর আপ্রাণ প্রচেষ্টা। মুরুব্বীদের দোয়া ও বোধহয় লাগে!

ছুটির দিন যথাসময়ে সাতসকালে একজন এসে হাজির।

আরেকজন লাপাত্তা।

সকাল আটটায় আসার কথা। উপস্থিত বন্ধু এসে অপরজনকে ফোন করে। রিং হয়, কেউ ধরেনা। হয়তো ধারে কাছেই আছে অপরজন। এক্ষুনি চলে আসবে। তাই হয়তো ফোন রিসিভ করছেনা। ভাবে প্রথম বন্ধু।

সময় যায়। নটা বাজে। কোন চিহ্ন নেই অপরজনের। নেই এধরণের কোন ফোনকল, দোস্ত, একটু দাঁড়া। আসছি

দশটাও বাজে। রোদ চড়া হতেই রাগের ব্যারোমিটারও বাড়তে থাকে। এই ফাঁকে নাস্তাটা সেরে ফেলা যাক।

বেলা এগারোটা। আর কাহাতক দেরী সহ্য করা যায়? ফিরেই গেলো সে। অপরজন সারাবেলাই অনুপস্থিত।

পরের দিন অফিসে এসেই, তুই কাল আসলিনা কেন?

ওহ! শি----, দোস্ত! একদম ভুলে গেছি, ডিফল্টারের প্রতিউত্তর।

অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। অভিমান ঝরে পড়ে কন্ঠে।

আর বলিসনা, সারারাত মুভি দেখলাম। সকালে যা জোস একটা ঘুম দিয়েছি! পাল্টাপাল্টি আত্মতৃপ্তি ও ঝরে পড়ে কন্ঠে।

শালা, তোর জন্য এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। এখন ব্যাটা মুভি দেখার গল্প করছিস? তোর কমন সেন্স বলে কিছুই নাই। রেসপনসিবিলিটি বলে কিছুই নাই

তুই আমার সাথে এরকম আচরণ করছিস কেন? আমি তো বলেছিই, আমি ভুলে গেছি। টেক ইট ইজি, ম্যান।

করবোনা কেন? তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। ফোনের পর ফোন দিলাম। কোন রেসপন্স নাই। তার পরও তোর কোন ভাবান্তর নাই

তোর মত ফালতু লোক আর আমি দেখিনি। আমি তো বলছিই, ভুলে গেছি। ...তারপরও...এইরকম বাজে ব্যবহার করছিস?

একবারও সরি বলেছিস?...

আমি পাশে দাঁড়িয়েই পুরোটা দেখলাম, শুনলাম। যদিও পরের কথোপকথনগুলো আর বলতে ইচ্ছে করছেনা। সেগুলো শ্রুতিমধুর নয় মোটেই

পুরনো কথাটা মনে পড়লো, দ্বায়িত্বজ্ঞানহীনতার সবচেয়ে বড় অজুহাত হলো ভুলে গেছি!

আমার নিজের ক্ষেত্রেও এ ধরণের তিক্ত অভিজ্ঞতা ঘটেছে বেশ কবার।

খুব ভালো লাগতো, যদি বলতে পারতাম, এই বিচ্ছিরি ঘটনাগুলো আমি ভুলে গেছি

***

ওহ! এটাও বলতে বলতে ভুলে গেছি, এইটা আমার শততম ব্লগ!

***

শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

কথোপকথন


... ক্রিং ক্রিং ক্রিং ...

“হ্যালো, ‘অমুক’ বলছেন?” ফোনে আকস্মিক কোমল তরুনীকন্ঠ!
“জী, বলছি।” অপ্রস্তুত পুরুষকন্ঠের জবাব!

“কেমন আছেন?”
“ভালো। আপনি?”
“ভালো। আচ্ছা, আপনার পুরো নাম তো ‘অমুক’ হাসান, তাই না?”
“জী।”
“ভালো, তো আপনি তো বুয়েট থেকে পাশ করেছেন? ”
“জী, ঠিক। গত বছর।”
“দেশের বাড়ি কোথায়? ”
“ঝিনাইদহ।”
“আপনারা ভাই-বোন ক’জন? ”
“তিন ভাই, তিন বোন।”
“আপনি সবার ছোট? ”
“হ্যাঁ, কেন বলুন তো? ”
“আচ্ছা, ঢাকায় কোথায় থাকেন?”
“মহাখালীতে বড়ভাইয়ের সংগে।”
“আপনার হাইট কত? ”
“ছয় ফিট দুই ইঞ্চি। আপনি কে বলছেন? আপনি কি XYZ কোম্পানী থেকে বলছেন, যেখানে আমি গত সপ্তাহে চাকরীর ইন্টারভিউ দিয়েছি? ”
“নাহ…! ”
“আপনাকে তাহলে এত কথা কেন বলছি? কে আপনি?? আমি তো ভেবেছি.....”
“আচ্ছা রাখি, পরে কথা হবে! ”

...খট...


“হায় হায় আমার ‘সর্বস্ব’ নিয়ে গেলো!”
অচেনা রমনীর সংগে আলাপচারিতা শেষে বন্ধুবরের প্রাথমিক অভিব্যক্তিটা এরকমই ছিলো!

সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

স্বাবলম্বী



অনলাইনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জুনিয়রের সঙ্গে কথা হচ্ছিলো। একটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে একটু জড়িত ছিলাম। এখন পড়াশুনার পাট চুকেছে। তাই সেই দ্বায়িত্ব পড়েছে ওদের উপর। ওরা আমাদের চেয়েও অনেক অনেক ভালো কাজ করে। কাজের অনেক কথা শেষে যখন সে বিদায় নিতে চাইলো, হালকা চালেই তাকে বললাম, বাই, টেক কেয়ার। দোয়া করি যেন একশ বছর বাঁচো!

বিদায়টা স্বাভাবিক ভাবেই হতে পারতো।

এত বছর বাঁচতে চাইনা, ফোঁস করে উঠলো সে, সে শব্দ শুনতে না পারলেও তার চেহারা আন্দাজ করতে একটুও কষ্ট হলোনা। জানতাম, সে একটু আবেগী, পরনির্ভরশীল হয়ে মরতে চাইনা

পরনির্ভরশীল হয়ে মরতে চাওনা?

না!

তাহলে নিশ্চয় স্বাবলম্বী হয়ে মরতে চাও?

স্বাবলম্বী হয়ে মরা মানে কী?

সেটা তো জানিনা। কেউ যখন সত্যি কথা বলতে চায়না, তখন সে মিথ্যা কথা বলে। সেভাবেই, কেউ পরনির্ভরশীল না হতে চাইলে, তাকে তো স্বাবলম্বী হতেই হবে।

তাই বলে স্বাবলম্বী হয়ে মরা? সেটা কিভাবে সম্ভব?

আমি জানিনা। তুমি যেভাবে বললে, আমি সেভাবেই বললাম।

তার ব্যস্ততা ছিলো। কথা আর এগুলোনা তাই।

কিন্তু কেউ পরনির্ভরশীল হয়ে মরতে না চাইলে, সে কিভাবে মরতে চায়?

হঠাৎ মুখ ফসকে বলে ফেলেছি বটে... কিন্তু নিজেই বুঝিনি কথার তাৎপর্য ... বেশ ভেবেছি... কিন্তু সফল হইনি।


স্বাবলম্বী হয়ে মরা মানে কি? শুধুমাত্র অল্পবয়সে মরা?

সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০০৮

Menu!


ওহ! আজ দুপুরে যা খেলাম! অতুলনীয়!

মেনুটা শুনবেন?

পটলের রোস্ট!

মিষ্টিকুমড়া ভুনা উইথ বরবটি বেকড্‌ ইন এক্সট্রা সল্ট!

ডালের ফ্রাইড অনিয়ন মিক্সড স্যুপ।

এন্ড সিউর্‌লি মিনারেল ট্যাপ ওয়াটার, বয়েল্‌ড!

একেবারে সেইরকম ভোজ!

অফিসে সপ্তাহে একদিন ‘ভেজিটেবল-ডে’ থাকে যে!

মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০০৮

সাম্প্রতিক ব্যক্তিগত কড়চা




বয়স হয়েছে। রাখঢাক করে না বললে, বিয়ের বয়স হয়েছে। অন্তত পাড়াপ্রতিবেশি- আত্মীয় স্বজনের এই পোক্ত ধারণা। কারও বাড়ি বেড়াতে গেলে খালা-নানীস্থানীয় মাতৃকুলের টিকা টিপ্পনীতে অস্থির হয়ে যাই। কবে বিয়ে করবি রে বাপ?। ইঞ্জিনিয়ারদের বেশি দিন এতিম থাকাটা ভালো দেখায়না!

তবে নিজের ধারণাটা অন্য, এই তো সেদিন ফিডার ছাড়লাম। মায়ের কোল থেকে নেমে মাত্রই হাঁটা শিখেছি।

নজরুল সঙ্গীতের প্রতি আমার অপরিসীম আগ্রহ-অনুরাগ। নিজে গাইতে পারিনা। তাই একটু ভালো গলায় কেউ গাইলে, সেটা শুনে সমগ্ররজনী বিনিদ্র কাটিয়ে দিতে পারি। এরই মাঝে অনলাইনে এক আপুর সংগে পরিচয় হলো। একথা সেকথা শেষে তার অযাচিত কৌতুহল পূরণে উগড়ে দিলাম, আমার ফিল-ইন-দ্য-ব্লাংক পোস্টে যিনি আসবেন তাকে নজরুলের গান জানতেই হবে! তিনি সবই গাইতে পারেন এফ.এম রেডিও এর মত। অল ডে, অল হিটস। কিন্তু নজরুলের গান গাওয়ার অনুরোধে তিনি আমার কাছে সসম্মানে মাফ চেয়ে নেন। গলার তারটা নাকি ছিঁড়ে যায় এতে! আমিও তাই বারেবারে তাকে নজরুল সঙ্গীত-ই গাইতে বলি। আর কাচুমাচু গলায় ক্ষমাপ্রার্থনা শুনতে কার না ভালো লাগে!

যাইহোক, বিয়ের চাপাচাপিতে একটা পছন্দ দিতেই হলো। সোনার বরণ কন্যা তোমার, দীঘল কালো চুল... এই ধরণের কিছু না। শরীরের সব অঙগ-প্রত্যঙগ জায়গা মত থাকলেই চলবে। ফুটনোট দিলাম, ডাক্তার হলে মন্দ হয়না। যাক, তাদের কিছুদিন খোঁজাখুঁজির নিমিত্তে দিনকয়েক আরামে কাটিয়ে দিতে পারবো। রাস্তাঘাটে হরহামেশা ডানাকাটা পরী দেখা গেলেও, বিয়ের সময় যে গলাকাটা ও পাওয়া যায়না, সেটা মামার বিয়ে দিতে গিয়েই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। কিন্তু পেয়ারা-দোস্ত সিফ বললো, হায়, হায় করছো কী? ডাক্তার তো কমন স্পেসিমেন! খুব সহজেই খুঁজে পাবে তোমার গলায় ফাঁস দেবার জন্য। ফাঁপড়ে পড়ি। ঘটনা সত্য, আসামী নির্দোষ। কিন্তু কথায় আছে না? বিপদেই প্রকৃত বন্ধুর পরিচয়। ও-ই আবার সাহায্যের হাত বাড়ায়, পছন্দটা মডিফাই করে ফেলো। সবাইকে বলো, ডাক্তার দিয়ে এখন আর হবেনা। এখন হাইটেক যুগ। বিয়ে করলে Astronaut ই সই। এবং অবশ্যই বাঙালী! আমার অন্ধকারের ভিতর হঠাত করে ফ্লাডলাইট এসে পড়ে! এমন পাত্রী আর ইহজগতে খুঁজে পাবেনা কেউ! আমি ও সিকিউরড্‌! সিফাতকে ফাইভ স্টার হোটেলে খাওয়াতে ইচ্ছা করে। কিন্তু মানিব্যাগটা নিক্তিতে ওজন করে ব্যাপারটা স্থগিত রাখা হলো Astronaut পাত্রী না পাওয়া পর্যন্ত!

ভালোই ছিলাম। কিন্তু দিনের ঠান্ডাজ্বরে নিজের পর্যন্ত মতিভ্রম হলো। কিছুতেই সম্মন্ধীয় জ্বর ছাড়েনা। আবার ডাক্তার থিওরীতেই ব্যাক করার বাস্তবসম্মত চিন্তাভাবনা। আগে জীবন, পরে মহাকাশ ভ্রমন! স্বভাবশিল্পী আপুকে সব কিছুই খুলে বললাম আবার, দেখি কোন সদুপদেশ জোটে কিনা!

সব শুনে তিনি আওড়ালেন, ভাই, তুমি একটা জোস কাজ করতে পারো, একটা Actress বিবাহ করো। তার মধ্যেই সব পাবে! একই অংগে বধুরূপে বহুরুপ!

প্রত্যেক মানুষই চমতকার চিন্তা করতে পারে।

আইডিয়াটা মন্দ নয়!

মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০০৮

দিকান্তরে ও আরেকটি প্রলাপ!




বাংলায় দশ দিক।

উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম-ঈশান-নৈঋত-অগ্নি-বায়ু!

আর ঊর্ধ্ব-অধঃ!

ইংরেজীতেও কমবেশি তাই।

আচ্ছা, কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে না? যারা এইসব দিক এর তকমা লাগিয়ে দিগ্বিজয় করছে?

নর্থসাউথ কিংবা ইস্টওয়েস্ট!

কিংবা কেউ কেউ একাই একদিকের মালিক।

নর্দার্ন!

কিংবা কিছু ব্যাংক আছে, যেগুলোর নাম আড়াআড়িভাবে দিকদর্শন ফলো করে!

সাউথইস্ট!

তাই আর দেরি কেন? অন্য দিকগুলো ফুরিয়ে যাবার আগেই সংগ্রহ করি। আছেন কোন ভাই? দিলদরিয়া কোন বোন? খুলে ফেলি একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি।

আপ-ডাউন ইউনিভার্সিটি

কিংবা ঝকমারী কোন ব্যাংক!

অধঃপতিত ব্যাংক লিমিটেড!

***

পত্রিকা খুললেই বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানীর চটকদার সব বিজ্ঞাপনের জমিদারীএটা করলে এটা লাভএই অফার লুফে নিন এখনিনাহলে পস্তাবেনআরো কত কী! সবচেয়ে বিরক্ত লাগে ওয়েলকাম টিউনের বিজ্ঞাপনযে আপনাকে ফোন করবে সে শুনবে গান! অপ্রয়োজনীয় প্রয়োজনের চূড়ান্ত হাতছানিকালে কালে আর কত কী হবে? কিন্তু দুঃখের কথা এই যে, আমি নিজেও ক’দিন সেটার গ্রাহক বনেছিলামসবকিছুই একটু চেখে দেখতে ইচ্ছে করে যে! কিন্তু বিরক্ত ধরে গেল অচিরেইতাই সসম্মানে বিদায় করে দিয়েছি শিল্পীকেআহা! আমাকে কেউ ফোন করলেই বেচারাকে বেলা-অবেলায় গলা সাধতে হতোবিশ্রাম পেয়ে খুশি হয়েছে বোধহয় খুব

কিন্তু আবার ওয়েলকাম টিউন সেট করার শখ জেগেছে মনে!

টিউন কি দেবো সেটাও ঠিক করে ফেলেছি এখন প্রোভাইডারেরা সাপোর্ট দিলেই হয় আর কি!

নাম না জানা সেই আপার গলায় একটা কথা বেশ ভালো লাগে, “দুঃখিতএই মুহুর্তে মোবাইল সংযোগ দেয়া সম্ভব নয়অনুগ্রহ করে একটু পর আবার চেষ্টা করুনধন্যবাদ

কেমন হয় বলুন তো?

***

সোমবার, ২১ জুলাই, ২০০৮

সম্পূর্ণ পারসোনাল ব্লগ


সামনে পৌরসভা নির্বাচন। যোগ্য-অযোগ্য প্রার্থীরা নিজেদের ঢাক-ঢোল নিজেরাই পেটাচ্ছেন। নিজের কাজ নাকি নিজেকেই করতে হয়, অন্যের উপর ভরসা করতে নেই! আরেকটা Social Friendship site থেকে বিদায় নিতে ইচ্ছে করছে... ভাবছি, খুব শীঘ্রই ওই প্রোফাইলটা ডিলিট করে দেবো। অথচ ওখানে পাওয়া টেস্টিমোনিয়াল গুলোকে রাখতে ইচ্ছা করছে খুব! তাই এখানে কপি পেস্ট করে দিলাম। যেন কালে গর্ভে হারিয়ে না যায় এগুলো। এটাকেও বোধহয় বলে, নিজের ঢাক নিজেই পেটানো।

এই ব্লগটা তাই খুব বেশি পার্সোনাল।

***

Person A

“Duniyar shukh mone hoi inar hat e”

Person B (1)

“he is so much innocent.......cute.......adorable.......caring........etc ....etc....likhte gele ses hobe na ...............always be with me my dear bro..... ............tui ato valo keno re bhaia????”

Person B (2)

“se amar boro bhaia............. ...ai prethibir sobtheke lokkhi bhaia....”

Person C

“arafat khub e ekta valo sele. oi din take ami ghum theke tule ash pash theke pola pan deke ene onek jhamela kore auto cad theke print korailam...se kissu mone kore nai ! tahole dekhen se kotto valo...”

Person D

“soft heart is his soft corner......”

Person E

“I have actually learnt geography from him. He has a pack of qualities but no intention to be in the lime light, a very rare virtue for all time.He is a man of strong principle & astonisingly capable of being happy with small things of everyday life.”

Person G

“ARAFAT....hmmmm..........let me think.......

he has fascinated me at first meeting.......and still fascinating me.................

only one thing i can tell abt ARAFAT is that the space given here isn't enough to describe him.......”

Person H

“my all time sessional group mate :)...a kind hearted person having awesome humor!-A free happy soul indeed!wishing ur best-keep smiling :)”

Person F

“Kind-Hearted and Hospitable, Cheerful and Well liked; moreover, Sleepy Environmental Engineer, who's proud to be called as mirror cracking material! [beauty is in the eye of beholder!!!;)], but at the same time waiting for an invisible angel as a gf!!!!! Sure, the angel will be visible in the near future, provided the testimonial is accepted, ha ha ha;)!!!”

***

* Pre-defined অনেক টেস্টিমোনিয়াল ও পাওয়া যায় সেখানে। সেগুলো সযত্নে বাদ দিলাম।

* হয়ত কোন একদিন এখানকার প্রোফাইলটাও মুছে দিতে হবে। তখন কি হবে?

* পৌরসভা নির্বাচনে নামার কোন ইচ্ছাই নেই আমার!

* ধন্যবাদ।

শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০০৮

চিঠি!



মৌ,

আমি তোমার ব্যাপারে অনেক শুনেছি। আমি জানি তুমি অনেক ভালো মেয়ে। আমি তোমার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনে আগ্রহী। তোমাকে খুজতে এসে না পেয়ে চলে গেলাম। তবে আমি আশাবাদী তুমি আমার সাথে যোগাযোগ করবে। কথা দিচ্ছি আমি তোমাকে বন্ধুত্বের নতুন এক জগত দেখাবো। তুমি তোমার নম্বর হতে আমার মোবাইলে একটা কল করো অথবা এস,এম,এস (sms) পাঠিও।

বাকি সব আমি দেখবো।

তোমার সুস্বাস্থ্য এবং সুন্দর ভবিষ্যত কামনা করি।

FM-98.06

Q.M.

T & D.

D.C.

Phone: 01717-???290

* ভয় পাবার কিছু নেই। আমি তোমার কোন ক্ষতি করবোনা। বরং উপরে উঠার সিড়ি দেখিয়ে দেব। (কথা দিলাম)

****

আহারে! এরকম একটা চিঠি পেলে অনেক মেয়েরই হৃদয়টা দুলে ওঠার কথা...

কিংবা ...

রাগে-ঘৃণায় শরীরটা রি-রি করে ওঠতেও পারে অন্য মেয়েদের!

কিন্তু ব্যাপারটা সেটা নয়!

চিঠিটা এসেছে আমার দরজার নিচে...বিনাখামে!

অফিস শেষে বাসায় ফিরে হালকা নাস্তা সেরে মাত্র দিনের কাগজটা হাতে নিয়েছি! এমন সময় মামী চিঠিটা এগিয়ে দিয়ে বললেন, চিঠিটা পেয়েছি দরজার নিচে। দেখতো কি?

আর চিঠি খুলেই যা পেলাম সেটাই প্রথমে ছাপিয়ে দিলাম!

চিঠিটা পাঠোদ্ধারের চেষ্টা করছি। মনোযোগের ব্যাঘাত মামীই ঘটালেন। হাতের লেখাটা তোমার সংগে মিল আছে!... স্বরটা নামিয়ে মামী বললেন...!

কিন্তু সেই নিচুগলার ভিতরও অন্যরকম সন্দেহের গন্ধ পেলাম, মানে?

না মানে, ইয়ে... তোমার ব্যাগ থেকে অসাবধানে পড়ে গেছে ভেবে চিঠিটা যত্ন করে তুলে রেখেছি! তোমার কাজের জিনিষ! মামী জানে আমার এক স্বল্পপরিচিতার নাম মৌ। সেখান থেকেই তিনি অনেক কিছু ভেবে নিয়েছেন! কিন্তু এখানে যে, আমি একজন নিখাদ দর্শকমাত্র, এটা বোঝাতে সেই সন্ধ্যায় আমাকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে!

কিন্তু সেটা অন্য কাহিনী।

*** মেয়েটার নাম আসলে মৌ নয়, অন্য আরেকটি নাম! আমাদের ৩৬০ এর একজনের নামের সংগে একদম মিলে যায়, সেজন্যই নামটা পালটে দিলাম! ইচ্ছে করেই!

*** চিঠিটা সম্ভবত পাশের ফ্লাট এর মেয়েটার। মামীর কাছেই শোনা, তার অধিকারে নাকি অনেকগুলো নাম... অনেকগুলো পাসপোর্ট কাছে থাকার মত!

বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০০৮

Entry for June 12, 2008

গতকাল সন্ধ্যার মরা আলোয়,

শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোর সামনে দিয়ে

হেঁটে আসার সময়,

সুবাসে মাতোয়ারা ব্যক্তিটি আমিই ছিলাম, এরকম নিরস মানুষও

অজানা গন্তব্যের আশায় কিংবা আশঙ্কায়

নেচে উঠে। আত্মার আত্মীয়া খোঁজে, মনে মনে!

কিন্তু দুকদম বাড়তি এগিয়েই

আবার...

অফিস শেষে ঘরে ফেরা অসহ্য গরমে অতীষ্ট-বিরক্ত,

ঘর্মাক্ত শরীরে-পোষাকে

সেই ছা-পোষা নিপাট ভদ্রলোক!

সেটাও আমি।

যার চিন্তাগুলো আবার আবর্তন করে বৈষয়িক ভাবনায়!

-----------------------------------------------------------------------------

গতকাল শাহবাগ পুষ্পবিপণীর সামনে দিয়ে টিএসসি যাবার পথে, হঠাত করেই অনুভুতিটা হারিয়ে গিয়েছিলো। মনের গহীনে ভেসে ওঠা দুটি সরল বাক্যকে অবিন্যস্ত ভাবে ভেঙ্গেই লিখে ফেললাম! ভঙ্গুর এই শব্দসমষ্টিকেই অনেকেই নাকি গদ্যকবিতা বলেন। তবে এটি কবিতা নয়, প্রলাপ মাত্র! অনেক দিন কিছু লেখা হয়নাতো!

কিন্তু লেখাটা কী অদ্ভুত রকম বিচ্ছিরি হয়ে গেলো!

নেগেটিভ!



সকালে উঠেই মেজাজটা খিঁচড়ে গেলো!

যাবেই বা না কেন? সকাল সকাল অফিস যাবো বলে এলার্ম দিয়েছিলাম সকাল সাতটা পাঁচ এ! কিন্তু যন্ত্রধ্বণি বাজার পর বিছানায় এপাশ ওপাশ করে গড়িমসি করতে গিয়ে ১০ মিনিট লেট! আর সকালের ১০ মিনিট লেট মানে রাস্তায় আরো দুজায়গায় বাড়তি জ্যামে আটকে পড়া! অফিসে দস্তুরমত ৩০ মিনিট লেটফলশ্রুতিতে মাসিক মাইনেতে নেগেটিভ!

দিনটাই খারাপঅফিসে গিয়েই বসের ঝাড়ি ! কার মুখ দেখে যে উঠেছিলাম আজ? ও! মনে পড়েছে, হতভাগাটা আমিই ... আধবোঁজা চোখে রাজ্যের আলিস্যি নিয়ে বাথরুমের আয়নায় নিজেকেই দেখেছিলাম প্রথম! অকারণ ঝাড়ি খেলে মেজাজের পঞ্চমী আরো উপরে ওঠে! আর তাতেই ইন্সট্যান্ট ডাইরেক্ট একশন! মাথা ব্যাথা! কাজে অসংগতিআবার ঝাড়িআবার মাথাব্যাথার উচ্চাংগের আরোহন! অচ্ছেদ্য দূষ্টচক্র! ফলাফল আরো নেগেটিভ!

অনিবার্য কারণে অফিসে যাই ছেঁড়া স্যান্ডেল পরে আর বাজারে পায়চারী করি ব্রান্ড-শু পরে! ছেঁড়া স্যান্ডেলে পৈত্রিক প্রাণটা বেঘোরে নেগেটিভ হতে পারে, এই ভেবে একখানা নতুন চপ্পল কেনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি কদিন ধরেই! সন্ধ্যার সময় রামপুরা বাজারে নেমে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে পাশের দোকানে গিয়ে নিজেকেই জুতোবো... সেই নিষ্পাপ ইচ্ছেটাও পুরণ হয়নাপ্রচন্ড গরমে এটিএম-বুথটারও ডি-হাইড্রেশন ঘটে! প্রতিদিন বিকালে হাসফাস করে জ্ঞান হারায় ওটা! আর আমি আসি সন্ধ্যায়! টাকা তোলাও হয়না আর চপল-পায়ে-চাপা হয়না! বাসায় গেলেও ইলেক্টিসিটি নেইদিনটাই নেগেটিভ!

ভগ্নহৃদয়ে রাস্তার ওপার থেকে এপার আসার সময় দানবীয় ট্রাকটাকে জ্যমিতিক এঙ্গেলে সাইড দিতে যাচ্ছি ... এমন সময়... সুললিত কন্ঠের এসএমএস ধ্বণি! ফ্রি এসএমএস এর ফ্রি শুভাকাংখা... শুভ সন্ধ্যা! বিশেষায়িত এমন একটা দিনের শেষে এসএমএসটা বিদ্রুপাত্মক হিসাবেই ধরা দিলো! হয়তো প্রেরকের ইচ্ছাটা ছিলো পজিটিভ! কিন্তু হাইপারটেনশনে নিজেকে আর সামলানো দূষ্কর হলো! কল-ব্যাক করলামফলাফল ততক্ষণাত... ব্যালান্স নেগেটিভ!

ও! একটা কথা বলা হয়নিআগের দিন কোয়ান্টামে স্বেচ্ছায় ব্লাড ডোনেট করে এসেছিলামএ নিয়ে হলো মাত্র আটবার! কাজটা একদম নিঃস্বার্থ ভাবেই করিএমনকি কাকে দিচ্ছি সেটাও জানতে ইচ্ছে করেনাকোয়ান্টামে ব্লাড দেবার একটা মস্ত সুবিধা আছে! ওরা দুয়েকদিনের মধ্যেই ব্লাড এর পাঁচটা গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয়! আজ দুপুরে ই-মেইলের মাধ্যমে আসা ব্লাড রিপোর্টেও নেগেটিভ!

এইচ-আই-ভি নেগেটিভ!

*** এটা কয়েকদিন আগের পূর্ণদিনের স্বল্পদৈর্ঘ চিত্র মাত্র! ব্যস্ততা আর লোডশেডিং ... উভয়ই আমার উপর প্রভাব বিস্তার করায় একটু দেরী হলো!

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০০৮

বৈ-সা-বি ও অন্যান্য



বাংলা নববর্ষের সঙ্গে সঙ্গেই পার্বত্য অঞ্চলে শুরু হয়বৈ-সা-বিউতসব। ত্রিপুরাদেরবৈসুক’, মারমাদেরসাংগ্রাইআর চাকমাদেরবিঝু’ ... এই ত্রয়ের আদ্যাক্ষর মিলনেইবৈ-সা-বি

বুয়েট-জীবনের ক্লাসমেট আর বর্তমানের কলিগবাফরুমারমা সম্প্রদায়ের লোক। আমাদের অফিসে ছুটিছাঁটা নেহাত কম, তাই ও ছুটি জমিয়ে রেখেছিলো ... এ সময় টানা অনেক দিনের ছুটি নেবে বলে। কদিন ধরেই তার উতফুল্লভাবের সীমানা আকাশছোঁয়া ... কথায় কথায়, “ইয়ো ম্যান” !

সাংগ্রাইএর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলোপানি খেলাঅর্থাৎ জলের মধ্যে না নেমেই জলকেলী! প্রায় প্রতিটি তরুণ মারমা হৃদয়ই উথাল-পাথাল করে এই সময়টুকু জন্য! তরুণ-তরুণীরা সোল্লাসে পরস্পরের দিকে পানি ছুঁড়েদিশাহারাহয়!অনেক কিছুরইসূচনা হয় এই অনুষ্ঠান থেকে!

কিন্তু আমাদের বাফরু একটা পাড় হতভাগা! বেচারা চোখে দেখে একটু কম!

তাই প্রতিবারই কোনসুন্দরীযে ওর গায়ে পানি মেরে পার পেয়ে যায়, ও বুঝতেই পারেনা! আবার চশমা পরলেও আরেক সমস্যা, লেন্সের উপরে পানি পড়ে সেটাও ঝাপসা হয়ে যায়! ফলাফল একই ... বিফল!

তাই গত কয়েকদিন ধরেই ইন্টারনেটেল্যাসিক-চিকিৎসানিয়ে পড়াশুনা করলো সে। এইবার না হোক, অদূর ভবিষ্যতে পানি নিক্ষেপকারিণীকে হাতেনাতে পাকড়েপাণিপ্রার্থনা করতে পারবে সে!

***

লোকাল বাসের বদলে কাউন্টার সার্ভিস বাসগুলো এসেছে অল্প কদিন হলো... টিকিট কিনে লাইনে দাঁড়িয়ে আমরা বাসে উঠি। ব্যপারটা রেশনিং লাইনের মতই পুরনো।

কিন্তু ব্যস্ত পৃথিবীর অন্য জগতে ঘটনা একটু অন্যরকম। বাসের গেটেকার্ড-রিডারমেশিনের নির্ধারিত স্লটে পাঞ্চ কার্ড ঢুকালেই টাকা অটোমেটিকনাইহয়ে যায়! তবুও কাজটা নাকি ইফিসিয়েন্ট হয়না। পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করতে হয়... সেখান থেকে পাঞ্চ কার্ড... কার্ডটা আবার যন্ত্রের পাকস্থলিতে পুরতে হয়...বদহজমশেষে কার্ডটা বের হয়ে আসলে আবার রিভার্স প্রোসেস! যে সময় প্রতি মিনিটে অর্থ প্রসব করে, সেই মূল্যবান সময়ের বাড়তি অপচয়!

চাই আরো আধুনিক ব্যবস্থা!

সেজন্যসময়ের-সঞ্চয়প্রচেষ্টায় এমন এক যন্ত্রের অবতরণ ঘটলো, যেটার সেন্সরের সামনেকার্ড-হজম্‌ডমানিব্যাগটা ধরলেই চলে। ব্যালান্স অটো রিডিউসড!

কিন্তু আমজনতা যুগের চেয়েও আধুনিক।

তারা মানিব্যাগ এগিয়ে দেয় ঠিকই... তবে প্যান্টের পকেট থেকে সেটা বের না করেই!

***

আমরা তো দুই ধরণের মুরগী খাই। কারো পছন্দহাড়-কটকটেদেশী মুরগী আবার কারো বাক্ষীণজন্মা ফার্মের মুরগি। বাজারে ফার্মের মুরগী যেমন সুপ্রাপ্য, তেমন দেশি মুরগীও।

আচ্ছা, দেশি মুরগী কি ফার্মে হয়না? নাহলে এত বেশি সরবরাহ হয় কিভাবে?http://us.i1.yimg.com/us.yimg.com/i/mesg/emoticons7/7.gif

***

১। উপজাতি/আদিবাসী শন্দ দুইটার ব্যাপারে আমার প্রায়োগিক আপত্তি আছে! তাই যথাযোগ্য শব্দ হিসাবেসম্প্রদায়ব্যবহার করলাম!

২. ক্ষীণজীবী বললাম, শোনা যায়... পরিবহনকালে অনাকাংখিত ভাবে বাসের টায়ার ফাটলেই গোটাকয়েক ফার্মের মুরগীর নাকি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে অকাল প্রয়ান ঘটে!

Top of Form

Bottom of Form

Tuesday April 15, 2008 - 10:23am (BDT)