শনিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৭

গোছগাছ!



পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে! তালে তালে মেয়েরাও এগিয়ে যাচ্ছে। বাঙ্গালী ছেলেরাও এগিয়ে যাচ্ছে। তবে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার অস্থির গতি দেখে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসে আছে! বিহবলতা কাটলেই আবার দৌড়ে ফিরে আসবে! ছেলেদের একান্ত জগতটা ক্রমশ হাতছাড়া! সবকিছুর স্বাদই মেয়েরা নিয়ে নিচ্ছে। বিজ্ঞাপণেও তাই মিনমিনে পুরুষকন্ঠের পাশে জোর মহিলা কন্ঠ হাঁক দিয়ে ওঠে, স্ট্যান্ডার্ড লুঙ্গি, আসল লুঙ্গি! কিন্তু অপরপক্ষে? না থাক...আমার বাক স্বাধীনতা মুখ থুবড়ে পড়ুক এইবার!

তবে ভাবতে ভালো লাগে... মেয়েরা এখনও তাদের সবটুকু সহজাত বৈশিষ্ট্য ছেড়ে জাতে ওঠেনি! একালেও ঘর গোছানোর দ্বায়িত্বটা মা-বোনের উপরই ছেড়ে দিই। জানি, আমার কর্মদক্ষতার অসীম প্রয়োগেও...তাদের মত চমতকার ভাবে কখনই সাজাতে-গোছাতে পারবোনা! সব মেয়েই কিভাবে যেন এটা আয়ত্ত করে ফেলে! আমার বোনের পরিপাটি গোছানো ঘরটা দেখলে খুবই সাবধানে নড়াচড়া করতে ইচ্ছা হয়...মনে হয় আমার মুহুর্তের অসাবধান অসতর্কতায় সাজানো বাগানটা নিমেষেই ধসে পড়তে পারে!

তাই অগোছালো রুমই আমার জন্য ভালো। বাসায় থাকলে... মা যখন আমার এলোমেলো খাতাপত্র দেখতেন, তখন আর স্থির থাকতে পারতেন না! নিমেষেই সাজিয়ে সেটাকে ফুলের বাগান বানিয়ে ফেলতেন! কিন্তু অর্বাচীন আমি গোছানো খাতাবইয়ের মাঝে কখনই প্রয়োজনীয় নোটটা সময়মত খুঁজে পেতামনা! তাই মাকে ডেকে হয়তো ফিজিক্স নোটটা খুঁজে পেতে হত!

হলে এসে অবাধ স্বাধীনতা! খাটের নিচে চার বছরের জঞ্জাল একবারে বিদায় হয় যখন পুরনো কেউ চলে গিয়ে নতুন কেউ আসে। আবার সে চলে গেলে আবার নতুন কেউ এলে! ডাল-চচ্চরির মত বই-খাতা এলোমেলো পড়ে থাকে। তার মাঝেই সঠিক সময়ে সঠিক জিনিষটা খুজে পেয়েছি! বিছানায় শুয়ে থাকলে মাকড়সার জাল চোখে পড়ে! কত সুন্দর মাকড়সা! আসলে সৌন্দর্য্য-পিয়াস এর বালাই টালাই নেই। আলস্যে ওগুলো পরিষ্কার করতে ইচ্ছে হয়না, তাই! ঘরদোর ঝাড়ু দেবার জন্য মোখলেস ভাই প্রতিদিন সকালে আসেন। ঘুমিয়ে থাকতাম! দুই-এক ঘা ঝাঁটার বাড়ি দিয়ে তার কাজ খালাস! কিছুই মনে করিনি!

আবার, শ্বাসের সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছি দলবেঁধে! ডাক্তার রুম পরিষ্কার করার পরিষ্কার উপদেশ দিতেন! বুয়েট পাশ করা ডাক্তার বলে হেসেই উড়িয়ে দিয়েছি!

একবার তাই উপদেশ মত ইশতিয়াক তার রুম পরিষ্কার করলো, ঘন্টাখানেক মূল্যবান সময় নষ্ট করে! সব শেষ করে হাতমুখ ধুয়ে রুমের সামনে দাঁড়িয়ে বারান্দায় হাত মুছছিলো সে...তখন দেখে... বুয়েটের একজন ডাক্তার তার পাশের রুম থেকে বের হচ্ছেন! কৌতুহলী ডাক্তার ওর রুমে ঢুকেই ছিটকে বের হয়ে আসলেন

এমন অপরিষ্কার রুমে মানুষ থাকলে, সে তো দুইদিনেই অসুস্থ্য হয়ে পড়বে!

আক্কেলগুড়ুম ফেল অন ইশতিয়াক!

তবুও তখন আমরা বলতাম, এই বেশ ভালো আছি!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন