রবিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০০৭

৭৫


এটা আমার ৭৫ তম ব্লগ! (যখন ইয়াহু ৩৬০ সরগরম ছিলো, তখনকার ঘটনা)

কখনই ভাবিনি এতগুলো লেখা আমাকে দিয়ে সম্ভব! লেখালেখি করার শখ ছিলো। কিন্তু কাগজ কলমে কখনই তা হয়ে উঠেনি। আর সবার মত আমিও অল্পবয়সে অমর কবিতা-গল্প লেখার ট্রাই করেছি। কিন্তু কাগজের সংগে আমার হাতে থাকা কলমের তেমন সখ্যতা হয়নি কখনই! যেমন, পরীক্ষার হলে... ৩ ঘন্টা কষ্ট করে খাতায় কলম পেষা একটা পেইন। তবুও কলম চালাতে হয়েছে। কিন্তু অভ্র আসার পর থেকে এ হাত দিয়ে কিছু বেরিয়েছে (লক্ষণীয়, হাত দিয়ে...মাথা দিয়ে নয়!) থ্যাঙ্কস অভ্র!

যখন ছাত্র ছিলাম তখন মনে হত, ডেইলি একটা করে ব্লগ দেই। আর এখন চোখের সামনে কত না আকর্ষণীয় টপিকস ঘুরে বেড়ায়, কিন্তু সময় করে লিখতে পারিনা! সময়টা বড় অদ্ভুত!

সবসময়ই চেষ্টা করেছি মৌলিক ব্লগ দেবার। কিন্তু আজ আর দেবোনা। আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর থেকেই চুরি করলাম। আমার দূর্ভাগ্য ... আমার জন্মের আগে থেকেই তিনি পরলোকে পায়চারী শুরু করেছেন। তার সেন্স অব হিউমার আমাকে প্রতি মুহুর্তে মোহিত করে। চেষ্টা করি, তার সব লেখা বুঝতে...কিন্তু আমার জ্ঞান সীমিত! তবুও চেষ্টা করি...তার কথা মতই...

যদ্যপি মোর গুরু শুঁড়ি বাড়ি যায়

তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়

***

তারপর চোখ বন্ধ করে বললেন...

চীনা-গুণী আচার্য সু তাঁর প্রামাণিক শাস্ত্রগ্রন্থে লিখেছেন, একদা চীন দেশের পেপিং শহরে অত্যাচার জর্জরিত স্বামীরা এক মহতী সভার আহবান করেন। সভার উদ্দেশ্য, কি প্রকারে নিপীড়িত স্বামী-কুলকে তাদের খান্ডার গৃহিণীদের হাত থেকে উদ্ধার করা যায়?

সভাপতির সম্মানিত আসনে বসানো হলো সবচেয়ে জাঁদরেল দাড়িওয়ালা অধ্যাপক মাওলীকে। ঝাড়া ষাটটি বছর তিনি তার দজ্জাল গিন্নীর হাতে অশেষ অত্যাচারে ভুঞ্জেছেন সে কথা সবারই জানা ছিলো।

ওজস্বিনী ভাষায় গম্ভীর কন্ঠে বজ্রনির্ঘোষে বক্তার পর বক্তা ঘন্টার পর ঘন্টা আপন আপন অভিজ্ঞতা বলে যেতে লাগলেন। স্ত্রীলোকের অত্যাচারে দেশ গেল, ঐতিহ্য গেল, ধর্ম গেল, সব গেল। চীন দেশ হটেনটটের মুল্লুকে পরিণত হতে চলল, এর একটা প্রতিকার করতেই হবে। ধন-প্রাণ, সর্বস্ব দিয়ে এ অত্যাচার ঠেকাতে হবে। এস ভাই, এক জোট হয়ে---

এমন সময় বাড়ির দারোয়ান হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে বলল, হুজুররা এবার আসুন। আপনাদের গিন্নীরা কি করে এ সভার খবর পেয়ে ঝাঁটা, ছেড়া জুতো, ভাঙ্গা ছাতা ইত্যাদি যাবতীয় মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এদিকে ধাওয়া করে আসছেন।

যেই না শোনা, আর যাবে কোথায়? জানলা দিয়ে, পেছনের দরজা দিয়ে, এমনকি ছাত ফুটো করে, দেয়াল কানা করে দে ছুট! দে ছুট! তিন সেকেন্ডে মিটিং বিলকুল সাফ--বিলকুল ঠান্ডা!

কেবলমাত্র সভাপতি বসে আসেন সে শান্ত গম্ভীর মুখ নিয়ে-- তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত হন নি। দারোয়ান তাঁর কাছে ছুটে গিয়ে বারবার প্রণাম করে বলল, হুজুর যে সাহস দেখাচ্ছেন তাঁর সামনে চেঙ্গিস খানও তসলীম ঠুকতেন, কিন্তু এ তো সাহস নয়, এ হচ্ছে আত্মহত্যার শামিল। গৃহিণীদের প্রসেশনের সক্কলের পয়লা রয়েছেন আপনারই স্ত্রী। এখনো সময় আছে। আমি আপনাকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি।ভাপতি তবু চুপ। তখন দারোয়ান তাঁকে তুলে ধরতে গিয়ে দেখে তাঁর সর্বাঙ্গ ঠান্ডা। হার্টফেল করে মারা গিয়েছেন।

(পঞ্চতন্ত্র থেকে)

***

This is just a joke.

Take care, all!

***

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন