শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০০৭

ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিক্রিয়া! (বুয়েটস্য স্মৃতি-গদ্য)

(সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ বুয়েট বিষয়ক ব্লগগুলো মূলত আমার নিজের জন্যই লেখা। অনেক দিন পর নিজেই যখন নিজের ব্লগ প্ড়বো, তখন খুব ভালো লাগবে! মনে পড়ে যাবে সবকিছু। তবুও কেউ যদি নিজ-উদ্যোগে এই নিরস ব্লগগুলো পড়ে থাকো , সেটা আমার জন্য বোনাস! )

লেভেল ২ টার্ম ২ তে নতুন যে ক্লাসরুমটা পেলাম সেটা একদম সিঁড়ির কাছে। স্যার একটু ঘুরলেই পিছনের দরজা দিয়ে বের হওয়া যায় খুব সহজেই। আর পিছনের দরজা খোলা থাকলে তো কথাই নেই। কত হুর-পরী সেই দরজার সামনে দিয়ে চলে যায়, সেসব হিসাব ও রাখতে হয়! অবশ্য আগেই বলে নিই, এই কথাটা আমার না! হুর-পরী সামলাবার যোগ্যতা আমার কোনোকালেই ছিলনা। বয়স নেই আর, তাই ভবিষ্যতেও হবার চান্স নাই আর!

এই টার্মে নতুন উদ্ভাবণ, কাগজ-নির্মিত-ক্ষেপনাস্ত্র, যেগুলো সোজা পিছন থেকে ফার্স্ট বেঞ্চে মেয়েদের দিকে ধাবিত হয়! প্রায় অব্যর্থ মিসাইল। ওইসময় ভারত আর পাকিস্তান মিসাইল নিয়ে খুব বেশী গবেষণা করছিল বলেই কিনা এই মিসাইল এর উদ্ভাবণ আমাদের ক্লাসেও! আস্তে আস্তে মিসাইল মারা ক্লাসের মহোৎসবে পরিনত হল। এবার টার্গেট শুধু মেয়েরা না, ফার্স্ট বেঞ্চের ভালো (!) ছেলেগুলোও! এমনকি নিজেদের ভিতরও পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে মারা হত মিসাইল! এমন অবস্থা হলো, দুয়েকটা মিসাইল মিস-গাইডেড হয়ে স্যারের পায়ের কাছে পড়লেও মিসাইলম্যানরা থোড়াই কেয়ার করতো! অস্বীকার করা অন্যায়, আমার মত আপাদমস্তক ভালো(!) ছেলেও দু’য়েকবার ট্রাই করে দেখেছে! আমার এইম ভালোনা, তাই এই মহৎ উদ্যোগ থেকে ইস্তফা দিলাম প্রাথমিক পর্যায়েই! কিন্তু এই সুক্ষ ‘আর্ট’ চলতে লাগলো মিসাইল-শিল্পীদের হাত ধরে! ‘আর্ট’ ই বলতে হবে! কারণ ‘আর্ট’ এর দোহাই দিলে যেকোন বিষয়-ই ‘জায়েজ’ হয়ে যায়! সেদিনও পত্রিকায় দেখলাম, কোন এক ফটোগ্রাফার এগারোহাজার ‘দিগম্বর’ জোগাড় করেছেন ‘শৈল্পিক’ ফটো তুলবেন বলে! পত্রিকাওয়ালারা ফটোগ্রাফারের ভুয়সী প্রসংসা করেছেন, চমৎকার এক ‘আর্ট’ উপহার দেয়ার জন্য!

যাই হোক, একদিন পলিন, যে ‘মিসাইল-প্রক্ষেপণে’ ওয়ার্ল্ড ফাইনালিস্ট, একবার মিসাইল মেরে বসলো শিখার গায়ে! যে যতই মিসাইল মারুক না কেন, শিখাকে আভোইড করা ছিলো প্রাইমারি রুল! কিন্তু কোন সাহসে শিখাকেই টার্গেট করলো ও!? এরপর? শিখা পিছন দিকে একটু ঘোরা মাত্রই পিছনের দরজা দিয়ে পলিনের তৎক্ষনাৎ পলায়ন! সেদিন আর ক্লাসে আসেনি পলিন!

পরে জিজ্ঞেস করলাম, “পলিন, কি ব্যাপার? পালালে কেন? ছেলে হয়ে একটা অবলা নারীর ভয়ে পালালে!!” পলিনের সদুত্তর, “ঘাড়ে আমার মাথা একটা-ই!” বললাম, “তাহলে মারতে গেলে কেন?” ও করুণ মুখে বললো, “আমি তো মেয়েদের গায়ে মারতে চেয়েছিলাম, শিখাকে না!”

এখনও বুঝিনা, ক্লাসের ছেলেরা শিখাকে কেন এত ভয় পেতো? ও তো বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ! অনেক ব্যাপারে ওর কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছি আমি।

1 টি মন্তব্য:

  1. * ZONOiKO
    * Offline

    এ ঘটনা নিয়ে পরে আর কিছু হয়নি। আর শিখার বিয়ে হয়েছে ৭ম সেমিস্টারে, মেকানিকাল এর এক ছেলের সংগে! ও স্কলারশীপ নিয়ে কানাডা যাচ্ছে! আহা, বেচারা রাসেল! নিজের নামের চেয়ে ‘শিখার হাজবেন্ড’, এই পরিচয়েই ক্যাম্পাসে বেশি পরিচিত ছিলো!

    Friday July 13, 2007 - 06:36pm (BDT) Remove Comment

    * ÌñNöÇ…
    * Offline

    voy paoar nischoi kono karon cholo jeta tumi bujhte paroni^_^

    Friday July 13, 2007 - 07:14pm (BDT) Remove Comment

    * PSP
    * Offline

    আগুনের শিখাকে সবাই ভয় পায়, সেও হয়ত সেরকমই কোনও শিখা!

    Friday July 13, 2007 - 07:00pm (IST) Remove Comment

    * 3m0n
    * Offline IM

    Shikha nishchoy kono politician er meye.
    or someone form her relations work in police department.

    Friday July 13, 2007 - 06:57am (PDT) Remove Comment

    * জেরীন…
    * Offline

    হুর-পরী সামলাবার যোগ্যতা আমার কোনোকালেই ছিলনা। বয়স নেই আর, তাই ভবিষ্যতেও হবার চান্স নাই আর! - আরে এত্ত তাড়াতাড়ি হিম্মত হারাইলে হয়??? লাগে রাহো জনৈক ভাই!!!

    আর শিখা বলে কথা ;)

    Friday July 13, 2007 - 08:19pm (BDT) Remove Comment

    * ZONOiKO
    * Offline

    hoor-pori amake diye hobena! (proved)!

    Saturday July 14, 2007 - 11:16am (BDT) Remove Comment

    * ÌñNöÇ…
    * Offline

    hobe hobe...lage raho arafal bhai!

    Saturday July 14, 2007 - 12:21pm (BDT) Remove Comment

    * Aditi
    * Offline

    hmmm firefox diei porlam :)

    Saturday July 14, 2007 - 06:04pm (BDT) Remove Comment

    * sefat
    * Offline

    :)

    Sunday July 15, 2007 - 07:05pm (BDT) Remove Comment

    উত্তরমুছুন