বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০০৮

ভালো রকম বাসার ব্লগ!



বাসা ভালো? হমম! বড়মামা বিয়ে করবে বলে বড়বাসায় উঠবে। সেজন্য বাসা খুঁজতে গিয়ে নানারকম অভিজ্ঞতা হয়ে গেলো। ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া শক্ত! কিন্তু এই ভালো-বাসা নাকি সেই ভালোবাসা না! সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মানুষ, ভালোবাসা-খারাপবাসার সম্পর্কে কিছু জ্ঞান রাখি! কিন্তু শুধু ভালোবাসা...? ব্যাপারটা বরাই আমার কাছে অবোধগম্য! কিন্তু আহা, অমোঘ চিত্তচাঞ্চল্যে ভার্সিটি এলাকাটা তো ভাসাভাসি-বাসাবাসির ন্যাশনাল হেরিটেজ-অভয়াশ্রম হয়ে গেলো! সন্ধ্যার পর ওই এলাকা দিয়ে আসতে হলে রিক্সাওয়ালার প্যাডেল এর সৌন্দর্য অবলোকন করে ঈমান-আকিদা ঠিক রাখতে হয়!

যাইহোক, গায়ক নচিকেতা বলেছে,

ভালোবাসা হলো পিটুইটারির খেলা,

আমরা বোকারা বলি প্রেম!

সাধু সাধু! বিজ্ঞানের ছাত্র হিসাবে ব্যাখ্যাটা পুরোটাই গ্রহনযোগ্য! মস্তিষ্কের ভিতর বহুবিধ গ্রন্থির অযাচিত ক্ষরণেই এই প্রেমরোগের জীবাণু মনে বাসা বাধে! ব্যাপার না! জীবানুর ভ্যাক্সিনেশন করা আছে আমার! কিন্তু আবার, রাস্তাঘাটে কেউ একটু নমনীয় হাসি দিলেই মনে হয়, অর্ধেক ভালোবাসা হয়ে গেছে! কিন্তু বাকি অর্ধেকের জন্য যে একটু মেহনত করতে হয়, সেটা আর ইচ্ছা করেনা! বুয়েটে পড়ে আলসের শিরোমনি হয়ে গেছি! সকালে উঠলে নাস্তা করতে দোতলা থেকে নিচে নামতে হবে বলে, জোর করে চোখ বন্ধ করে আবার ঘুমিয়েছি! গন্তব্যঃ একবারে দুপুরের ডাইনিং!

কিন্তু এদিকে আবার, পোলাপান তো স্কুলেই ভালোবাসার প্রথম পাঠ নিয়ে ফেলে। হাইস্কুলে উঠার পর দেখলাম, বন্ধুরা আশেপাশে মিসকল দেয়! কিন্তু নিজের আর প্রেমপত্র লেখার সাহসে কুলোয় না! সুযোগ এলো অচিরেই ... এক পাড়াতো বড়ভাই বললো, তার জন্য একটা প্রেমপত্র লিখে দিতে! বেচারা এক মেয়ের প্রেমে বুঁদ! আর আমি তখন ইঞ্জিনিয়ার হবার বাসনা নিয়ে অংকে টেনেটুনে পাশ করে বাংলায় ছক্কা হাকাই! দুধের সাধ ঘোলে মেটানোর বাসনায় সানন্দে রাজী হলাম! নিজের হাতেই ইনিয়ে বিনিয়ে নানা-প্যাচাল পাড়ার পর ভুল করে নিজের পরিচয় দিতে যাচ্ছিলাম ... ইতি বাপের একমাত্র ছেলে আরাফাত! কিন্তু আচমকা খেয়ালে সামলে নিলাম সবকিছু, পত্রখানি আমার না! বড়ভাইয়ের! তাই লিখলাম, ইতি বাপের একমাত্র বড়ছেলে রুশো! আহা! নব্য প্রেমিকের এহেন উপস্থাপনশৈলীর নমুনা পেয়ে বালিকা স্বাভাবিক আবহাওয়াতেই গলে গেলো। আর আমি পারিশ্রমিক হিসাবে কিঞ্চিত আপ্যায়িত হলাম! সুবহানাল্লাহ!

আহা! আমাদের বায়েজিদ! বেচারা যে মেয়ের দিকেই ভালোবাসার চাতক চক্ষু দিয়ে চায়, তার ভাগ্য খুলে যায়! কিছুদিনের মধ্যেই সে সুপাত্রে গমন করে! বেচারা একটা বিজনেস এজেন্সী খুললে কণ্যাদায়গ্রস্থ মেয়ের বাবাদের কাছ থেকে টু-পাইস কামাতে পারতো! বাবা! আমার মেয়েটার দিকে একটু নেকনজর ফেলো তো, মেয়েটার একটু গতি হোক!

মনন বেচারা ফোনে ফাইট দিতো এক অল্পবয়সী সুহাসিনী এর সংগে! মেয়েটা গানে মিনিপ্যাক রুনা লায়লা! একবার যদি ‘Play’ করতে বললে ‘Pause’ বাটন প্রেস করেও থামানো দূষ্কর। রাত বারোটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত ফোন ফাইট! তারপর দেখা করতে যাওয়া! গভীররাতে পড়াশুনার ফাে টায়ার্ড হয়ে গেলে, আমি আর সিফাত যেতাম ওর রুমে! বেচারা মনন আর্জি জানাতো, উফফ! গান শুনতে শুনতে কান গরম হয়ে গেলো, এখন তোমরা একটু শোন তো! তখন তো আর FM রেডিও চ্যানেলের এত চল ছিলোনা। মেয়েটাই ছিলো আমাদের লেট-নাইট FM সুরলহরী!

প্রেমের ব্যাপারটা অনেকটা অর্থনীতির মত! ধণী আর গরীবের বিস্তর ব্যবধান! ধনীরা শুধু কামিয়েই যাচ্ছে আর গরীবরা প্রকারান্তরে আরো গরীব! গ্রামাঞ্চলে গরীবদের জন্য VGF কার্ডের ব্যবস্থা আছে! আমাদের মত যাদের কোন গতি নেই , তাদেরও VGF কার্ড দেয়া উচিত! VGF মানে হলো Vulnerable Group Feeding!

সবশেষে, সফল ভালোবাসার পরিণতি কি?

ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিয়ুন...

বিবাহের পূর্বে তাহাদের বয়স হইয়াছিলো...!

যাইহোক, বেকন বলেছেন, একই সঙ্গে প্রেমিক আর জ্ঞানী হওয়া সম্ভব নয়!

নো ডাউট... আমি বরাবরই একজন যথার্থ জ্ঞানী ব্যক্তি!

(image courtesy: http://femiadi.files.wordpress.com/2006/11/p1080802.JPG)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন