সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০০৯

পাখির আত্মহত্যা





"Suicide is man's way of telling God, "You can't fire me - I quit."

বিল মাহেরের এই মন্তব্যটি শুনতে যতই রোমাঞ্চকর মনে হোক না কেন, আদতে তা নয়! যে বস্তু আমাদের হাতে সৃষ্টি হয়নি, তা বিনাশ ঘটানোর অধিকারও নেই আমাদের! সুস্থ্য স্বাভাবিক জীবনবোধ কখনই সেটির অনুমোদন করেনা। প্রচলিত ধর্মসমূহও করেনা।

২.


কী কারণে আত্মহত্যা করে মানুষ? মোটাদাগে আমার ধারণা, কারও মানসিক ‘যুক্তিবোধ’ অন্য কোন আচমকা অনুভূতি যেমন ক্রোধ, লজ্জা, বিষণ্নতা, প্রতিশোধপরায়নতা, অপ্রাপ্তি, বিপদে সম্মান-রক্ষা ইত্যাদির কাছে পরাজিত হলেই মানুষ আত্মহত্যা করে – এককথায় মানসিক ভারসাম্যহীনতায় পৌঁছালে!

তবে পাখিরা কেন আত্মহত্যা করবে? ওদেরও কী সমাজ আছে সেভাবে? সেখানেও কী অনুভূতির সংঘাত ঘটে?

৩.

“As fog comes on a moonless night......
When the wind blows in direction right....

Jatinga turns into an island of search light,
& birds appear like ghosts from nowhere.”


বাংলাদেশ বেতারে সকালের একটা অনুষ্ঠান হতো, সম্ভবত নামটা ছিলো
‘গল্প হলেও সত্যি’। ছোটবেলায় সেখানে অনেক রকম ‘আজগুবী’ খবর শুনতাম। শিহরণ জাগানো ভালো লাগা ছিলো। আমি আর আম্মু সেগুলো শুনতাম আর নিজেদের ভিতরে আলোচনা করতাম এই বিশ্ব-সভ্যতার অদ্ভুত সব বিষয় নিয়ে। অনেক দিন পর কাল আবার কথাপ্রসঙ্গে চলে এলো সেসব। তাই, নেটে সার্চ দিয়ে পেলাম অনেক কিছু। ইশ! তখন যদি নেট থাকতো!

ভারতের আসাম রাজ্যের গৌহাটি থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দূরে উত্তর কাছাড় জেলার জাটিংগা গ্রামে পাখিরা আত্মহত্যা করে! মৌসুমী মাসগুলোর শেষে এই ঘটনা ঘটতে থাকে।
চন্দ্রবিহীন কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে, ৭ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত, আগে থেকে কোন রকম সতর্কতা না জানিয়েই পাখিরা আছড়ে পড়ে মাটিতে। আঘাত পেয়ে ওগুলো মারা যায়। স্থানীয় ‘জাইনতিয়া’ জনগোষ্ঠীর ধারণা, অশুভ আত্মারা ভর করে তখন এলাকার আকাশে বাতাসে।

৪.

অনেকের ধারণা, মৌসুম শেষে কুয়াশার কারণে পাখিরা দিগভ্রান্ত হয়ে পড়ে। আর, এই সময় গ্রামবাসীরা আলোর ফাঁদ সৃষ্টি করে পাখিদের আকৃষ্ট করে। এতে সহজেই যেন তাদের কে ধরে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা যায়। তবে কেন শুধু নির্দিষ্ট ১.৫ কিলো x ২০০ মিটার স্ট্রিপেই প্রায় ৪৪ প্রজাতির পাখি নিজেদের জীবনের শেষ ডেকে আনে? আসলেই কোন রহস্য নেই?

বিখ্যাত পাখি বিশারদ ডঃ সালিম আলি, ডঃ সেনগুপ্তা এ ব্যাপারে অনেক গবেষণা করেছেন। কিন্তু কোন পৃথক গবেষণার ফলাফলই পুরো ব্যাপারটিকে এখনও ব্যখ্যা ক
রতে পারেনি। মূলত বৈরী আবহাওয়ায় গভীর কুয়াশাতে পাখিরা উড়ে যাবার সময় গ্রামবাসীদের আলোর ফাঁদে আকৃষ্ট হয়ে এ কাণ্ড ঘটায়, এটিই সব গবেষণার উপসংহার। এছাড়া ঐ এলাকায় পাখির ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি। এ জন্য সংখ্যাগত সাম্যাবস্থা বজায় রাখতে এটি হয়তো প্রকৃতিরই কোন না জানা খেলা!

৫. ট্রিভিয়া-

ক. জাটিংগা-তে শুধুমাত্র স্থানীয় পাখিরাই আত্মহত্যা করে। অতিথী পাখিরা করেনা। আর পাখিরা সবসময়ই উত্তর থেকে উড়ে এসে দক্ষিণের ঢালে আছড়ে পড়ে। এ পাখিদের সামনে তখন কোন খাবার ধরলেও তারা খায়না।

খ. পাখিদের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে বিশ্বখ্যাত চিত্রপরিচালক আলফ্রেড হিচককের একটি চমৎকার একটি চলচ্চিত্রের নাম দি বার্ডস

গ. আমার মত অনেকের প্রিয় লেখক, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে মাথা উড়িয়ে দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।

ঘ. আত্মহত্যা করার পরিবেশবাদী পদ্ধতি














ঙ। আত্মহত্যা
ঠেকাতে প্রযুক্তির ব্যবহার


তথ্যসুত্রঃ মূলত উইকিপিডিয়া, উত্তর কাছাড় জেলার ওয়েবসাইট। সাম্প্রতিক একটি খবর বলছে, এটি প্রকৃতির কোন খেলা না, বরং এটি স্থানীয় একটি খেলারই নৃশংস ফলাফল!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন